বাসস
  ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯:৩৯
আপডেট  : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯:৪৪

কক্সবাজার পর্যটন নগরী দর্শনার্থীদের পদচারণায় ফের স্বরূপে সরগরম

কক্সবাজার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ (বাসস): স্থবিরতা কাটিয়ে স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে কক্সবাজারের পর্যটন। দর্শনার্থীদের পদচারণায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে পর্যটন নগরী। দীর্ঘ একমাস পর হাসি ফুটেছে হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীদের মুখে। খুলেছে দোকানপাট, গতি পেয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্যে।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের আগে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গোলাগুলি, টিয়ারশেলের গন্ধে বেশ কিছুদিন পর্যটক না থাকায় পর্যটন ব্যবসা অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বর্তমানে দর্শনার্থীর সেই খরা কেটে গেছে।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে সমুদ্র সৈকতের কলাতলী, সুগন্ধা ও লাবণি পয়েন্টে পর্যটক নামতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে-সঙ্গে ভিড় বাড়তে থাকে। সকাল থেকে কলাতলী থেকে লাবনী পয়েন্ট পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকতে অন্তত ২০ হাজার দর্শনার্থী নেমেছেন বলে জানিয়েছেন সৈকতে দায়িত্বরত জেলা প্রশাসনের কর্মীরা।
বিকেলে সৈকত ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন বয়সের মানুষ সাগরের নোনাজলে গোসলে নেমেছেন। কেউ সৈকতে ঘোড়ায় চড়ে সমুদ্র দর্শন করছেন, কেউ আবার ওয়াটার বাইক ও বিচ বাইকে সৈকত দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। আবার কেউ কিটকটে (চেয়ার-ছাতা) গা এলিয়ে দিগন্ত ছোঁয়া নীলজলরাশিতে মজে আছেন। কেউ-কেউ বালুচরে দাঁড়িয়ে প্রিয়জনদের এসব আনন্দঘন মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দী করে রাখছেন।
ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে আসা ব্যবসায়ী ফজলে ওমর সাগরে নেমেছেন স্ত্রী ও স্কুলপড়ুয়া দুই সন্তানকে নিয়ে। কোমর সমান পানিতে ভাসছেন টিউবে। আধা ঘণ্টা পর বালুচরে উঠে বসেন চেয়ার-ছাতা কিটকটে। মোহাম্মদ আরিফ নামের আরেক পর্যটক বলেন, নোনাজলে শরীর ভেজাতে স্বপরিবারে কক্সবাজারে ছুটে আসা।
সৈকতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্বায়িত্বরত বিচকর্মীদের সুপারভাইজার বেলাল উদ্দিন ও মাহবুবুর রহমান বলেন, সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় স্থানীয়দের পাশাপাশি শুক্রবার সকাল থেকে পর্যটকরা কক্সবাজারমুখী হয়েছেন এবং শনিবার একদিনেই অন্তত ২০ হাজার পর্যটক সৈকতে নেমেছেন। 
এদিকে সাপ্তাহিক ছুটিকে কেন্দ্র করে শুক্রবার ও শনিবার কক্সবাজারের প্রায় পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউসের প্রায় অর্ধেক রুম বুকিং হয়েছে। পর্যটকদের আনন্দে যেন ভাটা না পড়ে তার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম শিকদার বলেন, শুক্রবার ও শনিবার কক্সবাজারে প্রায় ৫০ শতাংশ রুম ইতিমধ্যেই বুকিং হয়ে গেছে। আমরা আশা করছি, আগামীতে কক্সবাজারে পর্যটকের সংখ্যা আরো বাড়বে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিএম) আতাউল গনি ওসমানী বলেন, একমাস পর ইদানিং পর্যটক আসতে শুরু করেছে কক্সবাজারে। বিশেষ করে সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় শুক্রবার ও শনিবার প্রচুর পর্যটক কক্সবাজারে এসেছেন। পর্যটকদের যাতে কোন ধরনের নিরাপত্তার ঘাটতি না থাকে এবং অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে না হয় সে জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে বেশ কয়েকটা টিম কাজ করছে।