বাসস
  ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:১০

বন্যায় ফেনীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্ষতি ৩৮ কোটি ৭২ লাখ টাকা

ফেনী, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : ভয়াবহ বন্যায় জেলায় ৮৮৬ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা দপ্তরের ক্ষয়ক্ষতি ৩৮ কোটি ৭২ হাজার ৫০০ টাকা। জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি প্রবেশ করে নষ্ট হয়েছে বই ও আসবাবপত্র । ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মোটর পাম্প, কম্পিউটার ও প্রিন্টারসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সামগ্রী। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানে ১০-১২দিন পর্যন্ত পানিবন্দি থাকায় মেঝে এবং বারান্দায় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আবার কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের দেয়ালে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য, বন্যা পরিস্থিতিতে গত ২০ আগস্ট থেকে পাঠদান বন্ধ হয়ে যায় জেলার প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের ৯২০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। তন্মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫৫৯টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৯৩টি, মাদ্রাসা ১২৮টি, কলেজ ৩০টি, কারিগরি, ডিপ্লোমা ও প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট ১০টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের দেওয়া তথ্যমতে, বন্যায় জেলার ছয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিস ও আওতাধীন প্রায় সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানিতে তলিয়ে গিয়ে আনুমানিক ৮ কোটি ৭১ লাখ ৫০০ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে ছাগলনাইয়ায় আনুমানিক ১ কোটি ১১ লাখ ৯০ হাজার টাকা, ফেনী সদর উপজেলায় ১ কোটি ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা, দাগনভূঞা উপজেলায় ১ কোটি ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা, ফুলগাজী উপজেলায় ১ কোটি ৮১ লাখ ৫০০ টাকা, পরশুরামে ২৭ লাখ টাকা এবং সোনাগাজী উপজেলায় ৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাছির উদ্দিন জানান, বন্যায় উপজেলার সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। দপ্তরের বিভিন্ন সরঞ্জাম পানিতে ডুবে আনুমানিক ১২ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সবমিলিয়ে বন্যায় জেলার প্রাথমিক শিক্ষা খাতে ৮ কোটি ৮৩ লাখ ৫০০ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, বন্যায় জেলার ৩৫৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসাও কলেজ পানিতে তলিয়ে যায়। এতে বই, আসবাবপত্র, অবকাঠামোসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সামগ্রী নষ্ট হয়ে গেছে। সবমিলিয়ে আনুমানিক ২৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ফেনী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) দোলন কৃষ্ণ সাহা বলেন, বন্যায় কলেজের বিভিন্ন আসবাবপত্র ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ ৪৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এখন সবকিছু পরিষ্কার করে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফীউল্লাহ বলেন, বন্যায় জেলার ৩৫৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসাও কলেজ প্লাবিত হয়। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানে ইতোমধ্যে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বাকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও দ্রুত পরিচ্ছন্নতা শেষে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।  
জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ইসরাত নুসরাত সিদ্দিকা বলেন, ৩৫৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩০৬টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর আসবাবপত্র, ভবন, সীমানা প্রাচীর ও মাঠসহ ২৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।