বাসস
  ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৮:৫৮

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শহিদ শাহজাহানকে স্থানীয় আওয়ামী লীগের বাঁধায় জানাজা ছাড়াই দাফন হয়

ঢাকা, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ (বাসস): বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহিদ হওয়া  শাহজাহান নামে এক ব্যক্তিকে  ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া স্থানীয় আওয়ামী লীগের বাঁধায় জানাজা ছাড়াই দাফন করতে হয়েছে। 
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন বরাবরে আনা এক অভিযোগে এই তথ্য উঠে এসেছে। এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে শেখ হাসিনাসহ ৩৯ জনের নামোল্লেখ করে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর এম এইচ তামিম এ কথা জানন। 
অভিযোগে বলা হয়, গত ১৯ জুলাই রাজধানীর মহাখালী ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে মোহাম্মদ শাজাহান পুলিশের গুলিতে মারাত্মক আহত হন। ভিকটিম ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া থানার বাসিন্দা। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৪ জুলাই হাসপাতালে তার মৃত্য হয়। ২৬ জুলাই শাহজাহানের পরিবার ঢাকা মেডিকেলের মর্গে তার লাশ খুঁজে পান। পরে স্বজনরা তার লাশ দাফনে ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়ায় নিজ বাড়ীতে নিয়ে যান। সেখানে স্থানীয় আওয়ামী লীগের বাঁধায় জানাজা ছাড়াই শাহজাহানের মরদেহ দাফন করতে হয়েছে। 
শেখ হাসিনাসহ ৩৯ জনকে আসামি করে ভিকটিমের খালা মাজেদা খাতুন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন বরাবর অভিযোগটি দাখিল করেন।
ঘটনার বিবরণে বলা হয়-পুলিশের গুলিতে মারাত্মক জখম হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা শাহজাহানের লাশ দাফন করার সময় ধোবাউড়ার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ জানাজা করতে বাঁধা দেয়। নিহতের স্বজন ও অসহায় পরিবার অমানবিক ও নিষ্ঠুর পরিস্থিতিতে জানাজা ছাড়াই শাজাহানের লাশ দাফন করতে বাধ্য হয়। পরবর্তীতে শাহজাহানের মৃত্যুর ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে গত ২৭ জুলাই রাজধানীর বনানী থানায একটি মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলায় বিএনপি এবং জামায়াতসহ আন্দোলনকারী ৫ হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে দমন ও নির্মূল করতে গিয়ে তৎকালীন আওয়ামী সমর্থিত ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে সহস্রাধিক মানুষ নির্মমভাবে গুলিতে নিহত হন। 
এ আন্দোলনে কয়েক হাজার মানুষ গুলিতে মারাত্মক আহত হয। এখনো দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন আহতদের অনেকে। 
ইতোমধ্যে গুলিতে আহত অনেককে পঙ্গুত্ববরণহ দৃষ্টিশক্তি হারাতে হয়েছে। 
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, গণতন্ত্রকামী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ ও সাধারণ মানুষের লাল বিপ্লবে বাংলা বসন্তের ফলে গণঅভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। এরপর বিগত সংসদ ভেঙে দেয়া হয়। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ  ইউনূসের নেতৃত্বে শপথ নেয় নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। 
আন্দোলনে বিগত সরকারের নির্দেশে পরিচালিত হত্যা গণহত্যা ও মারাত্মকভাবে জখমের শিকার ঘটনার বিচারের দাবীতে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এনে দেশের বিভিন্ন থানায় মামলা দায়ের হচ্ছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও ভিকটিমদের পক্ষে অভিযোগ আনা হচ্ছে।