বাসস
  ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২০:১৮

আন্তর্জাতিক অফশোর টেন্ডার দাখিলের সময়সীমা বাড়ালো পেট্রোবাংলা

ঢাকা, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : পেট্রোবাংলা আন্তর্জাতিক তেল-গ্যাস কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে কাক্সিক্ষত সাড়া পেতে বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক অফশোর টেন্ডার দাখিলের সময়সীমা ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ থেকে বাড়িয়ে ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ করেছে। 
বাংলাদেশ অয়েল, গ্যাস অ্যান্ড মিনারেল কর্পোরেশন (পেট্রোবাংলা) সম্প্রতি বাংলাদেশ অফশোর বিডিং রাউন্ড ২০২৪ এর অধীনে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য সময় বাড়ানোর একটি বিজ্ঞপ্তি ‘নোটিস ইনভাইটিং বিডস’ জারি করে। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, আগ্রহী বহুজাতিক তেল ও গ্যাস কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশ সময় ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১টার মধ্যে দরপত্র জমা দিতে হবে। 
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, পেট্রোবাংলা এর আগে বাংলাদেশ অফশোর বিডিং রাউন্ড ২০২৪-এর অধীনে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য দরপত্রের আমন্ত্রণ জানিয়ে একটি নোটিশ জারি করেছিল এবং দরপত্র নথি জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১টা (বাংলাদেশ সময়)। 
সময় বাড়ানোর বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আগে জারি করা দরপত্রের নোটিশের অন্যান্য সমস্ত শর্তাবলী অপরিবর্তিত থাকবে। বিডিং রাউন্ডে মোট ২৪টি অফশোর ব্লকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য দরপত্র দাখিল করতে বলা হয়েছে। ব্লকগুলোর ১৫টি গভীর ও ৯টি অগভীর সমুদ্রে। 
বাসসের সঙ্গে আলাপকালে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার আশা প্রকাশ করে বলেন, দরপত্র দাখিলের সময় বাড়ানোর পর বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে আরো বহুজাতিক কোম্পানি দরপত্রে যোগ দিতে পারবে। তিনি বলেন, ‘যেহেতু বেশ কিছু কোম্পানি যৌথ উদ্যোগে যেতে আগ্রহী।  আমরা তাদের অনুরোধ বিবেচনা করে দরপত্র দাখিলের সময় বাড়িয়েছি।’ 
আন্তর্জাতিক তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান কোম্পানিগুলোকে যৌথ উদ্যোগের বিডিংয়ের জন্য তাদের নিজ দেশে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। এর আগে, ৮ মে একটি প্রচারমূলক সেমিনারে পেট্রোবাংলা জানিয়েছিল, সাতটি আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানি (আইওসি) বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে বিনিয়োগ করতে তাদের আগ্রহ দেখিয়ে দরপত্র কিনেছে। এতে বলা হয়েছে, প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘বাংলাদেশ অফশোর বিডিং রাউন্ড ২০২৪’ এর প্রচারমূলক সেমিনারে প্রায় ১৫টি আইওসি অংশ নিয়েছে। দুটি দেশ- মিয়ানমার ও ভারত ইতোমধ্যে বঙ্গোপসাগরে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন জোরদার করেছে। এছাড়া বাংলাদেশের ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের আগে বঙ্গোপসাগরে একটি ব্লক ইজারা নেওয়ার জন্য দরপত্র দাখিল করেছে মার্কিন কোম্পানি এক্সনমোবিল। কিন্তু ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় আওয়ামী লীগ সরকার ব্লকটি ইজারা দেয়নি।
তথাপি এক্সনমোবিল ব্লকটি লিজ নিতে আগ্রহী। এক্সনমোবিল ছাড়াও আমেরিকার আরেকটি কোম্পানি শেভরন বঙ্গোপসাগরে কাজ করতে আগ্রহী ছিল। শেভরন বাংলাদেশে বৃহত্তম অনশোর গ্যাস উত্তোলন কোম্পানি। বিগত সরকার সিলেটে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য শেভরনকে নতুন এলাকা বরাদ্দ দিয়েছিল। 
সম্প্রতি চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি সিনুক বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে বিশেষ আগ্রহ দেখিয়েছে। এছাড়া মালয়েশিয়া, জাপান, নরওয়ে ও ইতালির কোম্পানিগুলোও বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে আগ্রহী।
২০১২ সালে ভারতের সঙ্গে এবং ২০১৪ সালে মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি হয়। সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে এরপর ২০১৯ সালে নতুন উৎপাদন অংশীদারি চুক্তি (পিএসসি) করা হলেও দরপত্র ডাকা হয়নি। এরপর তিন বছর সময় নিয়ে নতুন পিএসসি–২০২৩ চূড়ান্ত করা হয়। গত ১০ মার্চ আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা)। এর আগে সবশেষ দরপত্র ডাকা হয়েছিল ২০১৬ সালে।