বাসস
  ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩৭

জয়পুরহাটে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরীর কারিগররা

জয়পুরহাট, ৫ অক্টোবর, ২০২৪ (বাসস): সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব। এ নিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে এখন চলছে সাজ সাজ রব। এ উৎসবকে ঘিরে জয়পুরহাটের বিভিন্ন পূজা মন্ডপে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরির কারিগররা।
 জেলার পূজা ম-প গুলোতে চলছে শেষ মুহূর্তের তুলির আঁচড় । সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শারদীয় উৎসব উদযাপনের জন্য সরকারি ভাবে প্রতিটি পূজা মন্ডপের জন্য ইতোমধ্যে ৫শ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবছরের মতো এবারও শারদীয় উৎসবকে ঘিরে ঢাকের তালে পুরো দেশে দুর্গাপূজার হাওয়া বইতে করেছে । শিল্পীর কল্পনায় দেবী দুর্গার অনিন্দ্য সুন্দর রূপ দিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জয়পুর হাটে এসেছেন দেবী তৈরীর কারিগরেরা। তারা দিন রাত ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরীতে।
জেলার বিভিন্ন ম-প ঘুরে প্রতিমা তৈরির কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় , খড়, কাঠ, সুতা আর মাটি দিয়ে নিপুণ হাতে কারিগররা তৈরী করছেন প্রতিমা। পূজার দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে, শিল্পীদের ব্যস্ততা ততটাই বাড়ছে। কারিগররা ফুটিয়ে তুলছেন দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ-কার্তিক ও অসুরের প্রতিমা। কিছু কিছু ম-পে প্রতিমা তৈরীর  কাজ শেষে চলছে রঙের কাজ। দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলা থেকে আসা প্রতিমা তৈরীর প্রধান কারিগর স্বপনীল ও সহকারী হিমেলের সঙ্গে কথা হয় জেলা শহরের ঐতিহ্যবাহী শিবমন্দির চত্বরে। তারা জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও জেলায় পাঁচটি মন্ডপে প্রতিমা তৈরীর কাজ হাতে নিয়েছেন । শেষ পর্যায়ে এখন রঙের কাজ করছেন বলে জানান তারা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার ২শ ৯০টি মন্ডপে দূর্গাপূজার আয়োজন চলছে । এর মধ্যে রয়েছে জয়পুরহাট সদরে ১১৩ টি, কালাই উপজেলায় ২৩ টি, ক্ষেতলাল উপজেলায় ৪০ টি , আক্কেলপুর উপজেলায় ৩৮ টি ও পাঁচবিবি উপজেলায় ৭৬ টি।
জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব এ্যাড: স্বপন তালুকদার বলেন, প্রত্যেক ম-পে আমাদের নিজস্ব সেচ্ছা সেবক দল কাজ করছে । প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এ ছাড়াও বিএনপি, জামায়াতসহ অন্যান্য দলগুলোও যোগাযোগ রাখছে বলেও জানান, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি এ্যাডঃ হৃষিকেশ সরকার।
জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আবদুল ওয়াহাব বলেন, প্রতিটি পুজা মন্ডপে ৫ স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হবে । সাধারণ পুলিশসহ সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশের পাশাপাশি আনসার ও ভিডিপি সদস্যরাও নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন। মাঠে সেনাবাহিনীর মোবাইল টিম কাজ করবে বলেও জানান তিনি। পুজার সার্বিক নিরাপত্তা ও মনিটরিং জোরদার করার লক্ষ্যে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আবদুল ওয়াহাব।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবদুল করিম জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা যাতে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পূজা উদ্যাপন করতে পারেন সেজন্য সরকারি ভাবে প্রতিটি মন্ডপের জন্য ইতোমধ্যে ৫০০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২ অক্টোবর মহালয়ার মধ্যে দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে জেলার সবখানে। এ ছাড়া ৯ অক্টোবর ষষ্ঠী পুজার মধ্য দিয়ে দুূর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে, ১০ অক্টোবর সপ্তমী, ১১ অক্টোবর অষ্টমী, ১২ অক্টোবর নবমী এবং ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমী ও ওই দিন প্রতিমা বিসর্জ্জনের মধ্যে দিয়ে ৫ দিনব্যাপী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গপূজার পরিসমাপ্তি ঘটবে বলে জানান, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি এ্যাডঃ হৃষিকেশ সরকার।