বাসস
  ১১ অক্টোবর ২০২৪, ১৮:৪৮

চট্টগ্রামে পূজামণ্ডপে ‘ইসলামি সংগীত’: ষড়যন্ত্র ও রাজনীতি-সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখছে পুলিশ

চট্টগ্রাম, ১১ অক্টোবর, ২০২৪ (বাসস): বন্দর নগরীর জেএমসেন হলে দুর্গাপূজা মণ্ডপে ইসলামি সংগীত পরিবেশনের ঘটনায় আটক দুইজনই মাদ্রাসা শিক্ষক। তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক কোনো সংশ্লিষ্টতা এবং সৃষ্ট পরিস্থিতিকে ঘিরে কোনও ষড়যন্ত্র আছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাদের নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তবে তারা পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম-সম্পাদক সজল দত্তের আমন্ত্রণে সেখানে গিয়েছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ(সিএমপি) কমিশনার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান-উপ-কমিশনার (অপরাধ) রইছ উদ্দিন।
সিএমপির উপ-কমিশনার সাংবাদিকদের বলেন, মহানগরের কোতোয়ালী থানাধীন আন্দরকিল্লায় পূজা উদযাপন পরিষদ জেএম সেন হল প্রাঙ্গণে প্রতিবছরের মতো পূজামণ্ডপ স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে শিল্পীদের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বী লোকজন পূজাম-পে আসেন এবং অনুষ্ঠান উপভোগ করতে থাকেন। এর মধ্যে পূজা আয়োজন কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সজল দত্ত চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির একদল শিল্পীকে অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করার জন্য অনুরোধ করেন।
তিনি বলেন, তার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ওই শিল্পী গোষ্ঠীর ছয় সদস্য শহীদুল করিম (৪২), নুরুল ইসলাম (৩৪), আব্দুল্লাহ ইকবাল (৩০), রনি (২৮), গোলাম মোস্তফা (৩৬) ও মো. মামুন (২৭) পূজার অনুষ্ঠানে একটি গজল ও একটি বাউল গান পরিবেশ করেন। ‘আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম’ এবং ‘শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম, বিশ্ব মানুষের কল্যাণে স্রষ্টার এই বিধান’ শীর্ষক গান দু’টি পরিবেশন করেন তারা। এর মধ্যে দ্বিতীয় গানটির শেষের অংশ ভিডিও আকারে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেশজুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। গানের ভাষায় শব্দ চয়ন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বলে অভিযোগ উঠে। অনুষ্ঠানে পরিবেশন করা গান দু’টি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
উপ-কমিশনার বলেন, অভিযুক্ত দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তারা হলেন- গান পরিবেশনকারী শহীদুল করিম (৪২) ও নুরুল ইসলাম (৩৪)। শহীদুল করিম নগরের তানজিমুল উম্মাহ মাদ্রাসার শিক্ষক এবং নুরুল ইসলাম দারুল ইরফান একাডেমির শিক্ষক। জড়িত বাকিদের আটকে অভিযান অব্যাহত আছে। আটক ব্যক্তিদের সঙ্গে রাজনৈতিক কোনো সংশ্লিষ্টতা ও ষড়যন্ত্র আছে কি-না তা খোঁজা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখনো পর্যন্ত এ ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়নি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মো. রইছ উদ্দিন বলেন, যারা তাদের এ অনুষ্ঠানে ইনভাইট (আমন্ত্রণ) করেছিল, তাদের সঙ্গেও আমরা কথা বলার চেষ্টা করেছি। বিশেষ করে সজল দত্ত, যার নাম উঠে এসেছে, তাকেও জিজ্ঞাসাবাদের চেষ্টা চলছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাকে আমরা পাইনি। চেষ্টা চালাচ্ছি।