বাসস
  ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৩:১৬
আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০০:৫৯

কারাগারে থেকে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান যারা

ঢাকা, ১১ অক্টোবর, ২০২৪ (বাসস) : গেলো বছর ২০২৩ সালে শান্তিতে নোবেল পান ইরানের নার্গিস মোহাম্মদী। তিনি নারী অধিকার ও মুক্তির জন্য লড়াইয়ের স্বীকৃতিস্বরুপ নোবেল জিতেছেন। তিনি দেশটির এভিন কারাগারে বন্দী রয়েছেন।

নার্গিস ছাড়াও আরও ৪ ব্যক্তি জেলে থাকা অবস্থায় শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন।

১. ১৯৩৫: কার্ল ফন ওসিৎস্কি, জার্মানি

সাংবাদিক ও শান্তিবাদী কার্ল ফন ওসিৎস্কি ১৯৩৫ সালের একটি নাৎসি কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে বন্দী অবস্থায় নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতেন। পুরস্কার নিতেও আসতে পারেননি তিনি। কারণ তার অসলো ভ্রমণ ছিল নিষিদ্ধ।

পুরস্কার জেতার তিন বছর আগে তাকে অ্যাডলফ হিটলার বিরোধীদের বিরুদ্ধে অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীকালে ১৯৩৮ সালে বন্দী অবস্থাতেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

২. ১৯৯১: অং সান সু চি, মিয়ানমার

মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেতা অং সান সু চি ১৯৯১ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতেন। তখন তিনি গণতন্ত্রপন্থী বিরোধীদের বিরুদ্ধে দেশটির সামরিক নেতৃত্বের ক্র্যাকডাউনের অংশ হিসেবে গৃহবন্দী।

বন্দী থাকায় ১৯৯১ সালের পুরস্কার অনুষ্ঠানে তার দুই ছেলে এবং স্বামী তার প্রতিনিধি হিসেবে তার পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন। তার অনুপস্থিতির স্মরণে মঞ্চে একটি চেয়ার খালি রাখা হয়েছিল।

৩. ২০১০: লিউ জিয়াওবো, চীন

চীনা ভিন্নমতাবলম্বী লিউ জেলে থাকা অবস্থায় ২০১০ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতেন। বিদ্রোহের দায়ে ১১ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছিলেন তিনি। পুরস্কার ঘোষণার পর তার স্ত্রী লিউ জিয়াকে গৃহবন্দী করা হয় এবং তার তিন ভাইকে চীন ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

২০১৭ সালের জুলাই মাসে ৬১বছর বয়সে একটি চীনা হাসপাতালে লিভার ক্যান্সারে মারা যান লিউ। বন্দী অবস্থায় মারা যাওয়া দ্বিতীয় নোবেল বিজয়ী ছিলেন তিনি।

৪. ২০২২: আলেস বিয়ালিয়াৎস্কি, বেলারুশ

বেলারুশের মানবাধিকার কর্মী আলেস বিয়ালিয়াৎস্কিকে ২০২১ সালের জুলাই মাসে কারাবন্দী করা হয়। তিনি ২০২২ সালে রাশিয়ার মেমোরিয়াল গ্রুপ এবং ইউক্রেনের সেন্টার ফর সিভিল লিবার্টিজের সঙ্গে যৌথভাবে যুদ্ধাপরাধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘন নথিভুক্ত করার স্বীকৃতিস্বরুপ নোবেল শান্তি পুরস্কার পান।

তার স্ত্রী নাটালিয়া পিনচুক তার প্রতিনিধিত্ব করেন । 

৫. ২০২৩ : নার্গিস মোহাম্মদী, ইরান

গত বছর শান্তিতে নোবেল জয়ী নার্গিস মোহাম্মদী একজন ইরানি নারী অধিকার আইনজীবী। নার্গিস নারী অধিকার ও মৃত্যুদণ্ড বাতিলের জন্য প্রচারণা চালিয়েছেন।

নার্গিসকে একজন ‘মুক্তির যোদ্ধা’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির প্রধান বেরিট রেইস-অ্যান্ডারসেন তার বক্তৃতায় বলেন,  ‘নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি ইরানে নারীদের নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার এবং সবার জন্য মানবাধিকার ও স্বাধীনতার প্রচারের জন্য লড়াইয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ নার্গিস মোহাম্মদীকে ২০২৩ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

নার্গিস বর্তমানেও তেহরানের এভিন কারাগারে বন্দী রয়েছেন।