বাসস
  ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২২:৪২
আপডেট  : ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২২:৪৪

জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িত পলাতকদের ফিরিয়ে আনা হবে : এটর্নি জেনারেল

ফাইল ছবি

ঢাকা, ১২ অক্টোবর ২০২৪ (বাসস): এটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার জুলাই মাসে টানা ৩৬ দিনের আন্দোলন নির্মূল করতে বিগত সরকার ও তাদের দোসরদের  পরিচালিত হত্যা গনহত্যায় জড়িত পলাতকদের ফিরিয়ে আনা হবে।
রাজধানীর এফডিসিতে 'জুলাই হত্যাকান্ডের দায়' নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এটর্নি জেনারেল আজ এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
এটর্নি জেনারেল বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পদত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এত মিথ্যা বলেছেন, এমনভাবে বলেছেন, এমন কৌশল করে বলেছেন, তিনি নিজেই বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলেন যে, তিনি যা বলেন সেটাই সত্য, সেটাই বেদবাক্য।
এটর্নি জেনারেল বলেন, শেখ হাসিনা মিথ্যা বলতে বলতে মিথ্যাকে সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছে। তার মিথ্যাচার গোয়েবলসকেও হার মানিয়েছে। গোয়েবলস বেঁচে থাকলে তিনি হয়তো শেখ হাসিনার ছাত্র হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করতেন। গত ১৫ বছরে দেশে কার্যত এক ব্যক্তির শাসন কায়েম হয়েছিল। জাতীয় সংসদেও একক কর্তৃত্ববাদে পরিচালিত হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান সংক্রান্ত রায় পরিবর্তনের মাধ্যমে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক অপরাধ করেছে। যে অপরাধের সুবিধা নিয়েছে আওয়ামী লীগ। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, যা নিয়ে তদন্ত চলছে।
এটর্নি জেনারেল বলেন, জুলাই হত্যাকান্ডে জড়িত যারা পালিয়ে গেছে তাদের ফিরিয়ে আনতে আদালতের মাধ্যমে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে। তারা ফিরে এসে বিচারের মুখোমুখি না হলে নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। জুলাই হত্যাকান্ডের মাধ্যমে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার লক্ষ্যে একটি নির্দিষ্ট সিভিলিয়ান গোষ্ঠির মাধ্যমে  আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে যে হত্যা ঘটানো হয়েছে তা মানবতা বিরোধী অপরাধ আইন ১৯৭৩ এর মাধ্যমে বিচার করা হবে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ট্রাইবুনাল পুনগর্ঠন করা হবে এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিতে বিচার প্রক্রিয়ার ট্রায়াল টেলিভিশনে দেখানোর ব্যাপারে আইনগত দিক পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
খুব শিগগিরই জুলাই হত্যাকান্ডের সাথে সম্পৃক্তদের মানবতা বিরোধী অপরাধে বিচার শুরু হবে। যারা বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করেছিল তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। 
সভাপতির বক্তৃতায় হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, জুলাই-আগস্টের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নিরস্ত্র ছাত্র জনতার উপর গুলি চালিয়ে নজিরবিহীন হত্যাকান্ড বাংলাদেশে ইতিহাসে বড় কালো দাগ হয়ে থাকবে। পাঠ্যপুস্তকে রচিত হবে জুলাই বিপ্লবের এসব শহিদদের শোক গাঁথা। রক্ত পিপাসু জুলুমবাজ সরকারের অন্যায় অত্যাচারের নির্মম চিত্র। তারা চেয়েছিল রক্তের উপর দাঁড়িয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে। কিন্তু মৃত্যুকে ভয় না পাওয়া ছাত্র জনতা যখন রাজধানী ঘিরে ফেললো এক কাপড়ে পালিয়ে গেল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে ‘জুলাই হত্যাকান্ডে দলীয় স্বৈরতন্ত্র অপেক্ষা প্রশাসনিক স্বৈরতন্ত্রই বেশি দায়ী’ শীর্ষক ছায়া সংসদে ঢাকা কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে ইষ্টার্ন ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন ড. এস এম মোর্শেদ, ড. এ কে এম মাজহারুল ইসলাম, সাংবাদিক মনিরুজ্জামান মিশন, সাংবাদিক মো. সাইদুল ইসলাম ও কবি জাহানারা পারভিন। প্রতিযোগিতা শেষে চ্যাম্পিয়ন দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।