শিরোনাম
কুমিল্লা (দক্ষিণ), ১৬ অক্টোবর, ২০২৪ (বাসস) : জেলার বুড়িচং উপজেলার সৈয়দপুর এলাকার কৃষক মনির হোসেন, রহমত আলী, মজিদ মিয়ার মত অনেক কৃষক ও বেপারী আজ সকালে নিমসার বাজারে ধনিয়াপাতা বিক্রি করে গেছেন ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে, কাচাঁমরিচ বিক্রি করেছেন ১৫০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে। নিমসার বাজারের আড়তদার মো. নজরুল মিয়া, ইকরাম মুন্সী, শামীম মিয়া, মোহাম্মদ আলীসহ অনেককে ধনেপাতা ও কাঁচামরিচ পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দেন ধনিয়াপাতা ১০০টাকা ও কাঁচা মরিচ ২০০ থেকে ২৩০ টাকা দরে।
নিমসার বাজার থেকে ১০ কিলোমিটার দুরে কুমিল্লা নগরীর ঝাউতলা এলাকায় আজ বুধবার দুপুরে খুচরা সবজি বিক্রেতা নূর হোসেন ১০০ টাকা কেজির ধনেপাতা বিক্রি করছেন ৩০০ কেজি দরে। কাঁচা মরিচ বিক্রি করছেন ৪০০ টাকা কেজি দরে। এমন বাজার দর নগরীর সব সবজিবাজারে।
ঢাকা-চট্রগ্রামের মাঝামাঝি জেলা কুমিল্লার নিমসার কাঁচা বাজার দেশের অন্যতম বৃহৎ কাঁচা সবজি বাজার। ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এ বাজারে সবজি কেনা বেচা হয়। রাত থেকে ভোর পর্যন্ত চলে এ বাজারের কেনা বেচা।
আজ সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এ বাজারের আকার ভেদে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে, করল্লা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কাঁচাকলা হালি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ফুলকপি ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি, কচুরমুখি ৪০ টাকা, পটল ৪৫ টাকা, টমেটো ১৩০ টাকা কেজি, পেঁপে ২৫ টাকা, লাউ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কইডা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, লতি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, সিম ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কেজি, , লাউ শাক আটি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, লালশাক ২০ টাকা আটি, পুঁই শাক ৩৫টাকা, গাজর ১৪০ টাকা। এসব সবজিগুলো পাল্লা,সহ বিভিন্ন মাপে বিক্রি হয়।
এ বাজার থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন বাজারে ধনিয়াপাতা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০০ টাকায়, পেপে ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৮০ টাকা কেজি, কইডা ৮০ টাকা কেজি, লাউ ১০০ থেকে ১২০টাকা, ফুলকপি ১৮০ টাকা কেজি, কাঁচাকলা হালি ৬০ টাকা, বেগুন ১২০ টাকা, সিম ২৬০ টাকা, করল্লা ১০০ টাকা, লাউ শাক আটি ৬০ টাকা, কচুরমুখি ৮০ টাকা, লতি ১০০ টাকা, পুঁই শাক ৬০টাকা, লালশাক আটি ৫০ টাকা, গাজর ২০০ টাকা কেজি এভাবে প্রতিটি সবজির দাম রাখা হচ্ছে কয়েকগুন বেশি।
নগরীর নিউমার্কেটের সবজি বিক্রেতা মোঃ এনাম বলেন, আমরা যখন যে দামে কিনে আনি তার সাথে আমাদের পরিবহনসহ অন্যান্য খরচ বাদ দিয়ে সামন্য লাভে বিক্রি করি। সব ক্রেতা আমাদের পরিচিত জানা শুনা অধিক মুনাফার চিন্তা করতে পারিনা।
কথা হয় নিমসার বাজারের জাবালে নূর বানিজ্যালয়ে আসা ব্যাপারী মো. আবুল হাসেম মিয়ার সাথে। তিনি এ বাজারে মিষ্টি কুমড়া নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন প্রথমে মিষ্টি কুমড়ার জমির বিঘা প্রতি ৪০ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছেন। প্রথমে কিছুটা লস হলেও এখন অনেক লাভের মুখ দেখেছি। বাজারের চাহিদার উপর আমাদেরও লাভ-লোকসান হয়।
এ বিষয়ে কথা হয় নিমসার বাজারের জাবালে নূর বানিজ্যালয়ের মো. সুমন মিয়া, নোয়াখালি মাইজদী বানিজ্যালয়ের আব্দুর রহমান, লিটন বানিজ্যালয়ের মো. শাহালম মিয়া, আনন্দ বানিজ্যালয়ের নজরুল ইসলামসহ অনেকের সাথে। তারা জানান, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা আড়ত এ সবজি নিয়ে আসে। বাজারে যখন যে দাম থাকে আমরা সে দামে বিক্রি করে দেই। আমরা শুধু নিদিষ্ট একটা লাভ রাখি।
ইসলামিয়া বানিজ্যলয়ের মহাজন নজরুল ইসলাম জানান, মালের যোগান বেশি আসলে দাম কমে যায়। রাতে এক দর আবার সকালে মাল বেশি আসলে দাম কমে যায়। বন্যা পূজাসহ বিভিন্ন কারনে যোগানের চেয়ে চাহিদা বেশি ছিলো তাই দাম বেড়েছে। এখন অনেকটা কমতে শুরু করেছে।
ঢাকা বানিজ্যালয়ের ইকরাম মুন্সী জানান, গেল সপ্তাহে দাম অনেকটা বেশি ছিলো। এখন দাম কমতে শুরু করেছে।কাঁচা মরিচ ৩০০ থেকে ২০০ টাকায় নেমে এসেছে। এভাবে সব কিছুরই দাম কমতে শুরু করবে।
নগরীর রাজগঞ্জ চকবাজার, রানীর বাজারসহ কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথে আলাপকালে জানা যায়, প্রতিটি বাজারে সিন্ডিকেট রয়েছে। এসব সবজি বাজারে আসার আগে সিন্ডিকেট তার দাম নির্ধারন করে দেয়। কেউ নির্ধারিত দামের চেয়ে কমে বিক্রি করতে পারবেনা। খুচরা বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের তারা নিয়ন্ত্রণ করে।
ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর কুমিল্লার সহকারী পরিচালক আসাদুল ইসলাম বলেন, জেলার ১৭টি উপজেলায় আমি একজন মাত্র কর্মকর্তা বাজার তদারকি করছি। আমাদের লোকবলের সংকট রয়েছে। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় নিমসার কাঁচাবাজারসহ নগরীর বিভিন্ন কাঁচাবাজারে তদারকি অভিযান পরিচালনা করেছি। এসময় ব্যবসায়ীদের ক্রয় ভাউচার যাচাই বাচাই করে অযাচিত ও অতিরিক্ত দাম রাখার দায়ে জরিমানাসহ সর্তক করেছি। এ বিষয়ে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।