বাসস
  ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ২০:০৪
আপডেট  : ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ২১:৪০

বেঞ্চ পাচ্ছেনা না হাইকোর্টের ১২ বিচারপতি : কার্যতালিকায় ষোড়শ সংশোধনী রিভিউ শুনানি


ঢাকা, ১৬ অক্টোবর ২০২৪ (বাসস): হাইকোর্টের ১২ বিচারপতিকে প্রাথমিকভাবে কোনো বেঞ্চ দেয়া হচ্ছে না। সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী রিভিউ শুনানি হবে আগামী ২০ অক্টোবর।

সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা এ কথা জানিয়েছেন। 

শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে আলোচনা শেষে আজ বিকেল চারটার দিকে হাইকোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে বিক্ষোভস্থলে এসে এ ঘোষণা দেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল। তার এ ঘোষণার পর আন্দোলনকারীরা হাইকোর্ট এলাকা ত্যাগ করেন।

সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা বলেন, ‘আপনাদের যে দাবি, আপনাদের যে লিডার, তারা আমার চেম্বারে বসেছিলেন। আমরা দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেছি। পরবর্তী পর্যায়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কথা বলেছি। সঙ্গে দুজন সহকর্মী ছিলেন। আপনারা জানেন, বিচারপতির পদত্যাগ বা অপসারণ এটার একটা প্রক্রিয়া আছে। বর্তমানে দেশে এ সংক্রান্ত কোনো আইন বিদ্যমান নেই।’

তিনি বলে, ‘বিগত সরকার সংসদের মাধ্যমে বিচারপতিদের অপসারণের উদ্যোগ নিয়েছিল। একটা সংশোধনী হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট সেটা বাতিল করে দিয়েছেন। সেটা আবার সরকার রিভিউ আকারে পেশ করেছে। আগামী রোববার ২০ অক্টোবর সেটি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত আপিল বিভাগে শুনানি হবে। ১ নম্বর আইটেম রাখা হয়েছে সেটি।’

আজিজ আহমদ ভূঞা আরও বলেন, ‘অন্যদিকে বিচারপতিদের পদত্যাগের আপনাদের যে দাবি, তার নিয়োগকর্তা হচ্ছেন রাষ্ট্রপতি। পদত্যাগ বা অপসারণের সেই উদ্যোগও রাষ্ট্রপতির দপ্তর থেকে হয়ে থাকে। এখানে সুপ্রিম কোর্টের, প্রধান বিচারপতির যেটা করণীয়, উনি সেটা করেছেন। আপনাদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি, আপাতত ১২ জন বিচারপতিকে প্রাথমিকভাবে কোনো বেঞ্চ দেয়া হচ্ছে না। বেঞ্চ না দেয়ার অর্থই হলো, তারা আর বিচারকাজে অংশ নিতে পারবেন না।

তিনি বলেন, ‘ওই মামলাটির (ষোড়শ সংশোধনী রিভিউ) শুনানি আছে আগামী ২০ অক্টোবর। অ্যাটর্নি জেনারেল সেটি প্লেস করবেন। আশা করছি, এর মাধ্যমে পরবর্তী প্রক্রিয়াগুলো শুরু হবে। আর বিচারপতি অপসারণের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট এককভাবে জড়িত নন। রাষ্ট্রপতি, এটর্নি জেনারেল কার্যালয় ও আইন উপদেষ্টা জড়িত আছে। আপাতত ১২ জনকে বেঞ্চ দেয়া হচ্ছে না। পর্যায়ক্রমে শুনানির মাধ্যমে বাকিগুলো আপনাদের সামনে আসবে।’

আওয়ামী লীগ আমলে নিয়োগ পাওয়া ‘ফ্যাসিস্ট’ বিচারপতিদের অপসারণের দাবিতে আজ হাইকোর্ট ঘেরাও এবং বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

অন্যদিকে হাইকোর্ট বিভাগের ‘দলবাজ ও দুর্নীতিবাজ’ বিচারপতিদের পদত্যাগ ও অপসারণ  দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করে বৈষম্যবিরোধী আইনজীবী সমাজ। আর ফ্যাসিবাদের দোসর বিচারপতিদের অনতিবিলম্বে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি-লিগ্যাল উইং।

হাইকোর্টের অ্যানেক্স ভবনের সামনে পৃথকভাবে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়।

পূর্বঘোষিত হাইকোর্ট ঘেরাও কর্মসূচি পালনে দুপুরে এখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে হাজারো শিক্ষার্থীর মিছিল আসেন। তারা অ্যানেক্স ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ ও সমাবেশ  করেছেন।

শিক্ষার্থীরা মিছিল স্লোগানে প্রকম্পিত করে রাখে সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণ। 

এ সনয় শিক্ষার্থীরা ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই,’ ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ,’ ‘স্বৈরাচারের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান,’ ‘ঘেরাও ঘেরাও ঘেরাও হবে, হাইকোর্ট ঘেরাও হবে,’ ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ,’ ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা,’ ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম,’ ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।