শিরোনাম
ঢাকা, ১৭ অক্টোবর, ২০২৪ (বাসস): বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, শহিদদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই দেশে আওয়ামী স্বৈরাচারের দোসররা এখনো ঘাপটি মেরে বসে আছে। তাদের দোসরদের বিচার এ দেশের মাটিতেই হবে।
তিনি আজ বৃহস্পতিবার নরসিংদীর রায়পুরায় মরজাল বাসস্ট্যান্ডে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে স্থানীয় সমন্বয়ক মরজাল ইউনিয়ন ছাত্রদলের কর্মী জুনায়েদ আল হাবিবকে হত্যার প্রতিবাদে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ আয়োজিত এক পথসভায় প্রদান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
স্বৈরাচারের দোসর-প্রেতাত্মারা এই সমাজ ও রাষ্ট্রের গভীরে এখনও অবস্থান করছে উল্লেখ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, স্বৈারাচারের এই দোসরদের কারণেই জুনায়েদকে মরতে হয়েছে। তারাই তাকে এই দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিয়েছে। একইভাবে গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের দিদারকে তারা দিনে-দুপুরে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার এসব শহিদের রক্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, হত্যাকরীদের বিচার না করলে এ সরকার শহিদদের সাথে বেঈমানী করবে।
রুহুল কবির রিজভী পথসভার আগে ও পরে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে নিহতদের (শহিদ) বাড়িতে গিয়ে পরিবারের খোঁজখবর নেন ও তাদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আরও বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট শাসন আমলে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার-হাজার মামলা হয়েছে, তাদের ওপর হামলা হয়েছে। ভবিষ্যতে তাদের যথার্থ মূল্যায়ন করা হবে। তিনি আওয়ামী সিন্ডিকেট ভেঙে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার তাদের ওপর অর্পিত গুরু দায়িত্ব পালনে কোনো ধীর গতি ও ঢিলেঢালা ভাব দেখালে তা হবে দৃষ্টিকটু। তা হলে আমরা যে দ্বিতীয় স্বাধীনতার কথা বলছি, আমরা যে পৃথিবী কাঁপানো একটি বিপ্লবের কথা বলছি এবং ৫ আগস্ট’র যে অন্তর্নিহীত চেতনা ও মূলমন্ত্র সেটি ব্যাহত হবে। শুধু তাই নয়, এই চেতনাকে করা হবে অবমূল্যায়ন।’
এ সময় শহিদ জুনায়েদের বাবা জসিম উদ্দিনের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে তিনি জানান, ‘বিএনপি তাদের পরিবারের পাশে থাকবে এবং জুনায়েদের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিতে কাজ করবে।’
পরে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে ‘আমরা বিএনপি পরিবারের’ উদ্যোগে শহিদ জুনায়েদের বাবাকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
নির্বাচনের নামে জটিলতা তৈরি মানেই স্বাধীনতা বিরোধীদের মদদ দেয়া:
পথ সভায় বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আনুপাতিক হারে নির্বাচনের নামে জটিলতা তৈরি মানে, স্বাধীনতা বিরোধীদের মদদ দেয়া। আপনারা সুপরিকল্পিতভাবে কোন জটিলতা তৈরি করবেন না।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আপনারা যে আনুপাতিক হারে নির্বাচনের কথা বলছেন, এটার জন্য আমাদের সমাজ এখন প্রস্তুত নয়। এ পদ্ধতি জটিলতা বাড়াবে। আপনারা এমন কোনো প্রস্তাব নিয়ে আসবেন না, যা জটিলতা বাড়াবে। উদাহরণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, নেপালে এটা চালু করেছিল, কিন্তু এলোমেলো হয়ে গেছে। কারণ, নতুন একটা পদ্ধতি তৈরি করতে হলে সমাজ এবং জনগণের আকাঙ্খার মিল থাকতে হবে।’
বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন,‘দেশের সুশীল সমাজ আনুপাতিক হারে নির্বাচনের ওপর বক্তব্য রাখছেন, আর এটার ওপর ভিত্তি করে আপনারা যদি মনে করেন- এটা সঠিক, তাহলে নির্বাচন ব্যবস্থা আরও ভেঙে যাবে। এই আনুপাতিক হার বুঝতেই চলে যাবে ৫/১০ বছর।