বাসস
  ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১৮:০০
আপডেট  : ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১৯:০২

টেলিকম শিল্পের পুনর্গঠনে নিয়ন্ত্রক সংস্থার সংস্কারের পরামর্শ

ঢাকা, ১৯ অক্টোবর, ২০২৪ (বাসস) : টেলিকম ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বর্তমান পরিবর্তিত বাংলাদেশে অর্থপূর্ণ অগ্রগতি অর্জনের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার সংস্কার আনার মাধ্যমে দেশের টেলিযোগাযোগ শিল্পকে পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।

আজ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘বাংলাদেশ মোবাইল ফোন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন (বিএমপিসিএ)’ আয়োজিত ‘বিটিআরসির ক্ষমতায়ন, টেলিযোগাযোগ আইনের সংশোধন ও বর্তমান পরিস্থিতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। 

নিয়ন্ত্রক সংস্থার সংস্কারের পাশাপাশি ইন্টারনেট এবং অন্যান্য টেলিযোগাযোগ-ভিত্তিক পরিষেবাসমূহের সুবিধাগুলো জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য একটি জনসমর্থিত নিয়ন্ত্রক আবহের পরামর্শ দিয়েছেন আলোচনায় বক্তারা।   

বিল্ডকন কনসালটেন্সিস এর প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহতাব উদ্দিন আহমেদ আলোচনা সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন। 

এ সময় তিনি বলেন, ‘টেলিকম মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) এবং টেলিকমিউনিকেশন বিভাগের (ডিওটি) মধ্যে দায়িত্বের অধিক্রমনের কারণে বাংলাদেশের টেলিকম রেগুলেশন ব্যাহত হচ্ছে। যা অদক্ষতার জন্ম দিচ্ছে এবং কাজের অগ্রগতি ব্যাহত করছে।’ 

বিটিআরসি’র সাথে ডিওটিকে একীভূত করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘বিটিআরসিকে নীতি নিয়ন্ত্রণ ও প্রণয়ন উভয় ক্ষেত্রেই ক্ষমতা প্রদান করতে হবে। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয় বিটিআরসিকে সার্বিক দিকনির্দেশনা প্রদান করতে পারে।’

মোবাইল ফোন অপারেটর রবির সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সংস্কার ছাড়া টেলিকম সেক্টরে অর্থপূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ অগ্রগতি অধরা থেকে যাবে।’  

একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ, পুরানো নীতি এবং নিয়ন্ত্রক অদক্ষতার কারণে বাংলাদেশের টেলিকম খাত পিছিয়ে রয়েছে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, ‘বাস্তবিক অর্থে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ অর্জন করতে চাইলে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া এবং রাজনৈতিক দলীয়করণ বা স্বজনপ্রীতি দূর করে প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি করা আবশ্যক। যে পরিবেশ হবে উদ্ভাবনমূলক, অগ্রগতি ও বিকাশের পক্ষে সহায়ক এবং যা সকলের স্বার্থ সংরক্ষণকে উৎসাহিত করবে।’         

টেলিকম শিল্পের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের জন্য তিনি একটি নতুন ত্রি-স্তরীয় লাইসেন্সিং মডেল স্থাপন করার পরামর্শ দেন, যা ডিজিটাল পরিষেবাগুলোকে চলমান রাখতে, গুণগতভাবে উন্নীত করতে এবং বাংলাদেশকে সর্বোত্তম আঞ্চলিক অনুশীলনের সাথে এক কাতারে অবস্থান করতে সাহায্য করবে।    

টেলিকম নীতি বিশ্লেষক মুস্তাফা মাহমুদ হুসেন সভায় তাঁর বক্তব্যে কার্যকর টেলিকম রেগুলেশনের পাশাপাশি কন্টেন্ট নির্মাতাদের শিক্ষামূলক বিষয় তুলে ধরতে পরামর্শ দিয়েছেন। 
আইএসপিএবি সভাপতি এমদাদুল হক বিটিআরসির পূর্ণ স্বাধীনতার ওপর জোর দিয়ে বলেন, ‘বিটিআরসি এর কাজের ক্ষেত্রে স্বাধীন হলে বিগত সময় রাজনৈতিক বিবেচনায় একটি লাইসেন্সও দেওয়া হতো না। বিটিআরসি লাইসেন্স ইস্যু এবং প্রত্যাহার করার পাশাপাশি সম্পূর্ণ পর্যবেক্ষণের ক্ষমতা না পাওয়া পর্যন্ত আমরা কোনো উপযুক্ত নীতি পাব না। তাই টেলিযোগাযোগ ও প্রযুক্তি খাতের সার্বিক উন্নয়নের জন্য বিটিআরসিকে একটি স্বাধীন কমিশন হিসাবে কাজ করার অধিকার দিতে হবে।’ 

লাইসেন্সের বিভিন্ন স্তরের পুনঃমূল্যায়ন সম্পর্কে, আইএসপিএবি সভাপতি যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনার জন্য সুপারিশ করেন। 
বিএমপিসিএ সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ সরকারের কাছে বিভিন্ন অপারেটরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন,তাদের মধ্যে অনেকেই নেটওয়ার্কিংয়ের কোয়ালিটি অব সার্ভিস (কিউওএস) মেনে চলছেন না।