শিরোনাম
বগুড়া, ২১ অক্টোবর, ২০২৪ (বাসস) : জেলায় শীতের আগমনী বার্তা বইছে । এরমধ্যেই ঘরে ঘরে আগাম
কুমড়োর বড়ি তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছে গৃহ বধূরা।
এমনি দৃশ্য দেখা মিললো বগুড়া শহরের সারিয়াকান্দি ও দুপচাঁচিয়া উপজেলা গুলোতে। শীতে কুমড়োর বড়ি স্বাদ অতুলনীয়। গ্রামের উঠানে ভোর বেলাতে মহিলারা বসে যায় চাল কুমড়ো ও মাষকলাই এর মিশ্রন ঘটিয়ে মন্ড তৈরী করতে। এরপর বাঁশের কাঠির তৈরী নেটের উপর পাতলা কাপড় দিয়ে হাতের মধ্যে বিশেষ কায়দায় বড়ি দেয়ার প্রতিযোগিতা।শুরু হয় গৃহবধূদের মধ্যে।যান্ত্রিকযুগে কুমড়ো বড়ি উপকরণ বানানো পদ্ধতি বদলে গেছে। আগে ডাল ও চাল কুমড়ো তৈরী করা হতো ঢেঁকিতে। এখন বড়ির মন্ড তৈরী হয় যান্ত্রিক মেশিনে। এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে ক্ষুদ্র ঋণ হতায়তা প্রয়োজন বলে জানান বড়ি প্রস্তুত কারিরা।
মৌসুমী এ ব্যবসা চলে শীত পর্যন্ত। স্বল্প সময়ের এ ব্যবসার লভ্যাংশ দিয়ে যে লাভ হয়ে তা দিয়ে বছরটা চলে ।
এ বছর সাধারণ মানের কুমড়ো ছাড়া বড়ি প্রতি কেজি ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা এবং ভালো মানের কুমড়োর তৈরী দিয়ে বড়ি ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত মৌসুমে শুধু সারিয়াকান্দিতে প্রায় ১২ থেকে ১৪ লাখ টাকার কুমড়ো বড়ি বেচা-কেনা হয়েছে এমনটি জনালেন এলাকার কুমড়োর বড়ি তৈরীর ও বাজার জাতরণ ব্যবসায়ী। অনেকেই দেশ-বিদেশে স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে থাকেন কুমোড়র বড়ি।
সাধারণত নারীরা এ কাজ করে থাকেন। সারিয়াকান্দির গ্রামের বনিতা সাহা, সাথি সাহা, শ্যামলি দেবনাথ, ডলি সাহা, অর্না সাহা, সাধনা সূত্রধর, রেবা সাহা, শংকরি রানী, মুনজুরী , গীতা রানী ও নিহার রানীসহ প্রায় শতাধিক নারী এ কাজে প্রতিদিন ব্যস্ত সময় পার করছেন। সাধারণত বাংলা সনের কার্তিক মাস থেকে ফাগুন মাস পর্যন্ত এ কুমড়ো বড়ির চাহিদা বেশি থাকে। তাই এ বছরও অক্টোবর মাস থেকে বড়ি তৈরী করা শুরু হয়েছে। যা চলবে আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত।গত বছর মাষকালাই ডাল প্রতি কেজি ১৩০ টাকা তে বিক্রি হয়েছে। তবে এ বছর এ ডাল ১৪০ টাকা থেকে ১৪৫ টাকা কেজি কিনতে হচ্ছে। দামে কিছুআসে যায় না। বড়ির স্বাদ নেয়াটা আলাদা ব্যাপার।
এ বছরের বড়ি বেচা-কেনা গত বছরের চেয়ে বহুগুণ বেশি হবে বলে আশা করছেন কারিগররা। সাধারণত বংশ পরম্পরায় বছরের পর বছর ধরে এ কাজ করছে বড়ি প্রস্তত কারিরা। প্রতিদিন এক জন নারী গড়ে ৫ থেকে ১০ কেজি পর্যন্ত কুমড়ো বড়ি তৈরী করতে পারেন।
গীতা রাণি বলেন, আমাদের সাহাপাড়া গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় অধিকাংশ মানুষেরই ফসলি জমি-জমা নেই। তাই শীতের এ মৌসুমে ধারাবাহিকভাবে আমি ও আমার পরিবারের লোকজন সংসারের অন্য কাজের পাশাপাশি এ কুমড়ো বড়ি তৈরী করছি এবং লাভবান হচ্ছি। সরকারি ক্ষুদ্র ঋণ সহযোগিতা পেলে আমাদের জন্য এ পেশাটি টিকিয়ে রাখা সহজ হতো।