বাসস
  ২২ অক্টোবর ২০২৪, ১০:১৬

নড়াইলে বিলুপ্তির পথে বিল-খালের শামুক

নড়াইল, ২২ অক্টোবর, ২০২৪ (বাসস): জেলায় বিলুপ্তির পথে বিল-খালের পানিতে থাকা শামুক। প্রতিনিয়ত নির্বিচারে শামুক নিধনের ফলে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী শামুকের বংশ বিস্তার হুমকির সম্মূখীন হয়ে পড়েছে।

কোন প্রকার পরিচর্যা ছাড়াই শামুক পানিতে বংশ বিস্তার করে এবং তা অল্প কিছুদিনের মধ্যে বড় আকারে পরিণত হয়।এক সময় বিল-খাল ও জলাশয়ের পানিতে শামুক চোখে পড়লেও এখন তেমন একটা চোখে পড়েনা।ফসলী জমির উর্ব্বরতা বৃদ্ধিসহ জীব বৈচিত্র রক্ষায় শামুকের ভূমিকা অপরিসীম  বলে জানান মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা।

শামুক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।জেলার বিভিন্ন মাছের ঘের মালিক ও মৎস্য চাষী মাছের খাবার হিসেবে শামুক ব্যবহার করায় প্রায় বিলুপ্তির পথে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অতি গুরুত্বপূর্ণ এ প্রাণিটি। গ্রামের একশ্রেণীর লোক শামুক বিক্রি করে লাভের আশায় বিল থেকে অবাধে শামুক সংগ্রহ করে তা মৎস্য ঘের মালিক ও মৎস্য চাষীদের কাছে বিক্রি করে থাকে।সদর উপজেলার বিছালী ইউনিয়নের আড়পাড়া গ্রামের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী জ্যোতি বিশ্বাস  জানায়, পড়ালেখার পাশাপাশি সে বর্ষার মৌসুমে প্রতিদিন  স্থানীয় বিল থেকে শামুক সংগ্রহ করে ২শত থেকে ৩শত টাকা বিক্রি করে থাকে।কালিয়া উপজেলার আমবাড়িয়া গ্রামের দিনমজুর কালু মিয়া শেখ (৪০) জানান, সংসার চালানোর জন্য তিনি স্থানীয় বিভিন্ন বিল-খাল থেকে শামুক সংগ্রহ করে ঘের মালিক ও মৎস্য চাষীদের কাছে বিক্রি করে থাকেন।এতে তাঁর প্রতিদিন প্রায় পাঁচশত টাকা আয় হয়ে থাকে।যা দিয়ে তিনি সংসারের ব্যয় নির্বাহ করে থাকেন।
 
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এইচ.এম বদরুজ্জামান জানান, মাছের খাদ্য হিসেবে শামুকের ব্যবহারকে আমরা নিরুৎসাহিত করে থাকি মৎস্যচাষীদের।কারণ কাঁচা শামুক খাওয়ানোর ফলে মাছের শরীরে রোগ জীবানুর এবং গ্যাসের সৃষ্টি করে।পরবর্তীতে ওই মাছ খেলে মানুষের শরীরেও নানা রোগজীবানু ছড়ায়।শামুক মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে।বিলে বেশি পরিমাণ শামুকের বিচরণ থাকার কারণে পানি ও মাটির উর্ব্বরতা বাড়ে এবং ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।

মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে শামুক রক্ষায় নানামূখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।শামুক মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার না করার জন্য ঘের মালিকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। পাশাপাশি শামুকের চাষ বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।ফলে নড়াইল সদর উপজেলার বিল চাঁচুড়ি, সীতারামপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় মৎস্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে শামুকের বংশ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।