বাসস
  ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৪০

শেরপুরে মোড়ে মোড়ে জমে উঠেছে পিঠার দোকান

শেরপুর, ২৭ অক্টোবর, ২০২৪ (বাসস) : আর কদিন পরই শীতকাল। এদিকে শীতের আগেই শেরপুরে বিক্রি হচ্ছে নানা রকম পিঠা পুলি। বিকেল থেকে জেলা শহরের মোড়ে মোড়ে জমতে শুরু করে পিঠার দােকান। যেখানে প্রতিদিন সন্ধা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত এসব দোকানে পিঠা খেতে ভিড় করে নানা বয়সী মানুষ।

এদিকে প্রতিদিন ভালো পিঠা বিক্রি হওয়ায়  মৌসুমী এ ব্যবসায় কর্মসংস্থান হয়েছে অনেকের।

সরজমিনে দেখা গেছে, শেরপুর জেলা শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড, কলেজ মোড়, খরমপুর মোড়, তেরাবাজার মোড়, শহীদ বুলবুল সড়ক , নিউমার্কেট মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হচ্ছে পিঠা। কেউ মাটির চুলায় লাকড়ি ব্যবহার করে পিঠা তৈরি করছেন। কেউবা আবার এক চাকার বিশেষ বাহন ঠেলাগাড়ীতে করে পিঠা বিক্রি করছেন। যেখানে ভাঁপা পিঠা, পুলি পিঠা, মোটা পিঠা, চিতই পিঠা, ডিম পিঠাসহ বিভিন্ন সুস্বাদু ও ঝাল পিঠা বিক্রি হচ্ছে। ভাঁপা পিঠা ও পুলি পিঠাতে গুড় নারিকেলের ব্যবহার থাকলেও মোটা পিঠা ও চিতই পিঠাতে ক্রেতাদের জন্য রাখা থাকে সরিষা ভর্তা, শুটকি ভর্তা, ধনেপাতা ভর্তাসহ নানা  রকম মুখরোচক ভর্তা।

এসব পিঠার দাম ৫ টাকা থেকে শুরু করে ২০ টাকার মধ্যে।

নতুন বাসটার্মিনাল এলাকায় পিঠা খেতে আসা চাকুরিজীবী নজরুল ইসলাম বলেন, এ দেশের মানুষ নানা আধুনিকতায় ইতিহাস ও সংস্কৃতি ভুলতে বসেছে। বাংলাদেশ পিঠা পুলির দেশ হলেও বর্তমানে বাসা বাড়িতে ও গ্রাম গঞ্জে পিঠা তৈরির উৎসব হয় না।  তাই শহরের এসব পিঠার দোকান থেকেই পিঠা কিনে খাই।

তেরাবাজার মোড়ে পিঠা খেতে আসা কলেজ ছাত্র রুমান শেখ জানান, সন্ধায় কোচিং শেষ করে বন্ধুরা মিলে পিঠা খেতে আসি। পিঠা খাওয়ার পাশাপাশি আমাদের আড্ডা দেওয়াটাও জমে উঠে। শহরের মোড়ের এসব দোকানে পিঠা খেতে এসে অনেক সময় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। আবার ফেরার পথে পিঠা কিনে মা-বাবা, ভাই-বোনদের জন্যও নিয়ে যাই।

পিঠা বিক্রেতা জলিল বলেন, এক সময় শীতে প্রতিটি বাড়িতে পিঠা তৈরি হতো। গ্রামের বাড়ি গুলোতে থাকতো ঢেঁকি। যেটা দিয়ে পিঠার জন্য চাল গুড়ো করা হতো। কিন্তু আধুনিকতা আমাদের কাছ থেক সব কেড়ে নিয়েছে। এখন শহরের বিভিন্ন মোড়ের পিঠার দোকানগুলো পিঠা প্রেমী মানুষদের একমাত্র ভরসা। আমি প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ কেজি চাল গুড়ো করে ৮শ থেকে ১ হাজার টাকার মত পিঠা বিক্রি করি। চাল, গুড়, লাকড়িসহ অন্যানো খরচ বাদ দিয়ে ভালই লাভ থাকে।

পিঠা বিক্রেতা হাশেম মিয়া জানান, তিনি দিনে শ্রমিকের কাজ করেন এবং রাতে ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে করে পিঠা বিক্রি করেন। প্রতিদিন যা আয় হয় সেখান থেকে খরচ বাদ দিয়ে বাড়তি আয়ের টাকা দিয়ে সংসারের অন্যানো খরচ মেটান। তিনি আরোও বলেন, বর্তমান সময়ে বাসা বাড়িতে পিঠা তৈরি হয়না বলে আমাদের দোকান গুলোতে প্রচুর ভিড় থাকে। প্রতিদিন ভালো বেঁচা বিক্রিও হয়। সন্ধা থেকে মধ্যে রাত পর্যন্ত পিঠা বিক্রি চলে।