শিরোনাম
ঢাকা, ২ নভেম্বর ২০২৪ (বাসস) : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন নির্মূলে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবনের সংস্কার কাজ এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে।
সংস্কার কাজ শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবন যে নান্দনিক রূপে দেখা যাবে তার ছবি প্রকাশ করে ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন ট্র্যাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
আজ সরেজমিন দেখা যায়, ট্রাইব্যুনালের ঐতিহাসিক সাদা ভবনটির (পুরাতন হাইকোর্ট ভবন) নানামুখী সংস্কার কাজে ব্যস্ত রয়েছেন বিভিন্ন মিস্ত্রি ও তাদের কর্মীরা।
এছাড়া ট্র্যাইব্যুনাল সংলগ্ন বাগান নতুন ভাবে সাজানো হচ্ছে। গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে এই সংস্কার কাজের সার্বিক তদারকি করা হচ্ছে। যেখানে কয়েকশ’ কর্মী এখন নিয়মিত কাজ করছেন।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বাসসকে বলেন, আন্তর্জাতিক মানের বিচার কার্যক্রম চলবে এমন ট্রাইব্যুনাল ভবনকে উপযোগী করে প্রস্তুত করা হচ্ছে। ভবনটি সংস্কারের পূর্বে অনেকটাই জরাজীর্ণ ছিল।
এরই মধ্যে দুইবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংস্কার কাজ পরিদর্শন করেছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
ট্র্যাইব্যুনালের (পুরাতন) মূল ভবনের সংষ্কার কাজ চলমান থাকায় আপাতত ভবন সংলগ্ন (অস্থায়ী) ট্রাইব্যুনালে শুরু হয়েছে বিচারিক কার্যক্রম।
গত ১৪ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান হাইকোর্টের বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার। আর ট্রাইব্যুনালের সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান হাইকোর্টের বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মহিতুল হক এনাম চৌধুরী। এরআগে চিফ প্রসিকিউটরসহ প্রসিকিউশন, তদন্ত সংস্থা নিয়োগ দেয়া হয়।
গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে ৫ আগস্ট দেশ থেকে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে টানা প্রায় ১৬ বছরের শাসনের পতন হয়।
গত জুলাই-আগস্টে গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার ও তার অনুগত প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত করে। জাজ্জল্যমান এ অপরাধের বিচার অনুষ্ঠিত হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে।
আওয়ালীগ সরকারের সাবেক ১০ মন্ত্রী, দুই উপদেষ্টা, অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি ও সাবেক এক সচিবসহ মোট ১৪ জনকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আগামী ১৮ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৭ অক্টোবর এ আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।
এছাড়াও ১৭ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। ২০ নভেম্বর তাদেরকে ট্রাইব্যুনালে হাজিদের দিন ধার্য রয়েছে। এ মামলায় ইতোমধ্যে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়।