শিরোনাম
ঢাকা, ২ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : ঢাকায় শুক্রবার সন্ধ্যায় আলজেরিয়ান দূতাবাস ‘আলজেরিয়ার জাতীয় মুক্তির গৌরবময় বিপ্লবের সূচনার’ ৭০তম বার্ষিকী উদযাপন করেছে।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ঐতিহাসিক ১ নভেম্বর, ১৯৫৪ এর স্মৃতিচারণ করা হয়। ওই দিন বিপ্লবের সূচনা হয়েছিল, যা সাত বছরের সংগ্রামকে প্রজ্বলিত করেছিল এবং শেষ পর্যন্ত ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসন থেকে আলজেরিয়াকে স্বাধীনতার দিকে পরিচালিত করেছিল।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বাংলাদেশ ও আলজেরিয়ার মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী বন্ধনের কথা তুলে ধরেন।
তিনি প্রথম আরব দেশ হিসেবে আলজেরিয়ার ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেওয়ার কথাও উল্লেখ করেন। সহযোগিতার জন্য নতুন সুযোগ অন্বেষণ করতে উভয় দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শারমীন বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আলজেরিয়ার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার হচ্ছে। দুই দেশের মধ্যে সকল মুলতুবি চুক্তিকে এগিয়ে নেওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরে শারমীন মূল খাতে সহযোগিতা অধিকতর সম্প্রসারণ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশে আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত ড. আবদেলোহাব সাইদানি তার ভাষণে আলজেরিয়ার বিপ্লবের তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, ঐতিহাসিক তারিখটি শুধু আলজেরিয়ার মুক্তিই নয়, অধিকন্তু আত্মনিয়ন্ত্রণ ও স্বাধীনতার জন্য বিশ্বব্যাপী সকল আন্দোলনকে অনুপ্রাণিত করে। তিনি বিশ্বব্যাপী উপনিবেশকরণের বিরুদ্ধে আলজেরিয়ান বিপ্লবের প্রশংসা করে এ বিপ্লবের স্থায়ী প্রভাবের উপর জোর দেন।
এ সময় রাষ্ট্রদূত সাইদানি আলজিয়ার্সে ১৯৭৩ সালের জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ এবং ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ ও অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনে বাংলাদেশের সদস্যপদে আলজেরিয়ার সহায়ক সমর্থনের কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন খাতে আলোচনা ও আদান-প্রদান বাড়ানোর জন্য দুই দেশের নেতাদের প্রতিশ্রুতির জন্য ধন্যবাদ। আলজেরিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন ও বিকাশ অব্যাহত রয়েছে।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, একটি সুষ্ঠু বৈশ্বিক ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ ও আলজেরিয়ার অভিন্ন অঙ্গীকার রয়েছে। দুই দেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করতে একসঙ্গে কাজ করছে। সম্প্রতি আলজেরিয়ার অনুমোদনের মাধ্যমে কৃষি ও পানিসম্পদ বিষয়ে চারটি মূল খসড়া চুক্তির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যা ২০টি সম্ভাব্য চুক্তির একটি বিস্তৃত সেটের অংশ। রাষ্ট্রদূত সাইদানি শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশের প্রতি আলজেরিয়ার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন, বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ব্রি. জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আক্তারও উপস্থিত ছিলেন ।
এছাড়া ঢাকায় অবস্থানরত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক ও কূটনীতিকরাও উপস্থিত ছিলেন। তারা আন্তর্জাতিক সংহতি ও সহযোগিতার উত্তরাধিকার গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আলজেরিয়ান বিপ্লবের তাৎপর্য তুলে ধরেন।