বাসস
  ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৯:৫২

২০৪০ সালের মধ্যে সীসামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কাজ করছে সরকার : পরিবেশ উপদেষ্টা

ঢাকা, ৫ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ২০২৪ সালের মধ্যে সীসামুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে সরকার কাজ করছে।

তিনি আজ রাজধানীর বিআইসিসিতে আয়োজিত ‘সীসামুক্ত বাংলাদেশ : আমরা কীভাবে পৌঁছাব’ শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। 

মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স, ইউএসএআইডির মিশন পরিচালক রিড আইশ্লিম্যান, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. ফাহমিদা খানম।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সীসা এবং ভারী ধাতু দূষণকে ‘নীরব সংকট’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, সরকার সকল অংশীজনের সহযোগিতায় ২০৪০ সালের মধ্যে সীসামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করেছে। 

সীসা দূষণের উৎস সনাক্ত ও নিয়ন্ত্রণে একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

পরিসংখ্যানের গুরুত্ব উল্লেখ করে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সীসা দূষণের জাতীয় পর্যায়ের তথ্যসমূহ কার্যকর নীতিমালা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ। 

তিনি ইউনিসেফ এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সহযোগিতার প্রশংসা করেন এবং দূষণ প্রতিরোধে সমন্বিত ও তথ্যভিত্তিক উদ্যোগের আহ্বান জানান।

আন্তর্জাতিক সীসা দূষণ প্রতিরোধ সপ্তাহ উপলক্ষ্যে মন্ত্রণালয় এবং ইউনিসেফের উদ্যোগে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এ কর্মশালার উদ্দেশ্য ছিল ভারী ধাতু দূষণের স্বাস্থ্যগত প্রভাব, বিশেষ করে শিশুদের ওপর এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং এই সংকট মোকাবেলায় সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারদের একত্রিত করা।

কর্মশালায় উপস্থাপিত বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশের শিশুদের রক্তে উদ্বেগজনক মাত্রায় সীসা রয়েছে এবং এর ঝুঁকি বায়ু, পানি, মাটি, খাদ্য এবং রং ও রান্নার পাত্রের মতো ভোক্তা সামগ্রী থেকে হতে পারে। দ্রুত নগরায়ন ও শিল্পায়নের ফলে ভারী ধাতুর দূষণ বেড়েছে, যা শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।

সম্প্রতি ইউনিসেফের সহযোগিতায় আইইডিসিআর ও আইসিডিডিআরবি পরিচালিত এক গবেষণায় ঢাকা, খুলনা ও সিলেটসহ বিভিন্ন জেলায় শিশুদের রক্তে সীসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এই সংকটকে সামনে রেখে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, ইউনিসেফ ও ইউএসএআইডির সহযোগিতায় আসন্ন এমআইসিএস ২০২৪-২০২৫ জরিপে রক্তের সীসার মাত্রা অন্তর্ভুক্ত করেছে যা নীতি প্রণয়নে সহায়ক তথ্য প্রদান করবে।

ইউনিসেফ একটি শক্তিশালী বহু-খাতভিত্তিক কর্মপরিকল্পনার আহ্বান জানিয়ে গবেষণাগারে ভারী ধাতুর পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা বৃদ্ধির কথা বলেছে। ইউনিসেফসহ বিভিন্ন অংশীদারদের সহায়তায় ‘সীসামুক্ত ভবিষ্যৎ’ উদ্যোগের মাধ্যমে ২০৪০ সালের মধ্যে শিশুদের সীসা দূষণমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

অপরদিকে, নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন বিক্রয় করার দায়ে পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক সমগ্র দেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন উৎপাদন, বিক্রয়, সরবরাহ ও বাজারজাত করার দায়ে ১৫ টি মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযানে ৪৭ টি প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ ৭৯ হাজার ৯শ’ টাকা জরিমানা ধার্য করে আদায় করা হয় এবং আনুমানিক চার হাজার ৪৪ কেজি পলিথিন জব্দ করা হয়। পরিবেশ অধিদপ্তরের দূষণ বিরোধী এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।