বাসস
  ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:২৩

শিক্ষার্থীদের ‘এপোস্টিল’ পদ্ধতিতে অনলাইনে সার্টিফিকেট সত্যায়নের আহ্বান ইউজিসি’র

ঢাকা, ৬ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ ও চাকরি প্রত্যাশী শিক্ষার্থীদের ‘এপোস্টিল’ পদ্ধতিতে অনলাইনে সনদ সত্যায়নের আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস. এম. এ. ফায়েজ।

আজ ইউজিসি অডিটোরিয়ামে ‘এপোস্টিল’ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে উচ্চশিক্ষার্থে বিদেশে যেতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের সনদ অনলাইনে সত্যায়ন’ শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ আহবান জানান। 

ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘এপোস্টিল’ পদ্ধতিতে সার্টিফিকেট সত্যায়ন করা হলে শিক্ষার্থীদের সময়, শ্রম ও অর্থ সাশ্রয় হবে এবং তাদের ভোগান্তি কমবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে প্রতিমাসে দুই লক্ষ সার্টিফিকেট সত্যায়ন করতে হয়। এপোস্টিল পদ্ধতিতে সার্টিফিকেট সত্যায়ন নিশ্চিত করা গেলে তাদের কর্মঘণ্টা সাশ্রয় হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহিদের প্রত্যাশা পূরণ ও দেশ সুন্দরভাবে গড়তে ইউজিসি, বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঐক্যবদ্ধভাবে হয়ে কাজ করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সভায় উল্লেখ করা হয়, বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট সত্যায়নে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে ‘এপোস্টিলমাইগভ’ (Apostill myGov) প্ল্যাটফর্মে যুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এপোস্টিল কনভেনশনের আওতায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, আইসিটি মন্ত্রণালয়ের এটুআই এবং ইউজিসি দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নেওয়া বিদেশ গমনেচ্ছুক শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট এপোস্টিলমাইগভ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সত্যায়ন সম্পন্ন করবে। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে এই প্ল্যাটফর্ম তৈরির কাজ চূড়ান্ত করা হবে। 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউজিসি’র সদস্য প্রফেসর ড.মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, প্রফেসর ড.মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দ মাসুদ মাহমুদ খন্দকার ও ইউজিসি সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম। 

ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট, কমিউনিকেশন এবং ট্রেনিং বিভাগের পরিচালক মো.ওমর ফারুখের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (কনস্যুলার ও কল্যাণ) ড. শাহ্ মোহাম্মদ তানভির মনসুর। 

প্রফেসর তানজীমউদ্দিন খান বলেন, উচ্চশিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের অনেক তথ্য সত্যায়ন ও যাচাইয়ের প্রয়োজনে বিভিন্ন দপ্তরে যেতে হয়। এপোস্টিল পদ্ধতিতে সনদ সত্যায়ন করা হলে শিক্ষার্থীদের এসব ভোগান্তি থেকে রক্ষা করা যাবে। 

প্রফেসর আনোয়ার হোসেন বলেন, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহিদদের চেতনা হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। ফ্যাসিবাদী শক্তি ও তাদের দোসরদের আইনের আওতায় আনতে হবে। দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ইউজিসিকে ঢেলে সাজানো না হলে এসব প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কাজ ঝুঁকির মুখে পড়বে বলে তিনি আশংকা করেন। এই প্রশাসনিক সংস্কারের উপর নির্ভর করছে আমরা কতটা গতিশীলভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আমাদের কার্যক্রম দ্বারা সহায়তা করতে পারছি এবং আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে পারব। 

তিনি সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা বাস্তবায়ন এবং ইউজিসি’র প্রতি জাতির প্রত্যাশা পূরণে সংশ্লিষ্টদের এপোস্টিল পদ্ধতিতে সনদ সত্যায়ন যথাযথভাবে সম্পাদনের আহ্বান জানান। 

উল্লেখ্য, এই প্ল্যাটফর্মে শিক্ষার্থীরা আবেদন ফি জমা দিয়ে সহজে সার্টিফিকেট ও ট্রান্সক্রিপ্টের জন্য আবেদন করতে পারবে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর সনদের তথ্য যাচাই বাছাই করে ইউজিসি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সত্যায়নের জন্য প্রেরণ করবে। সার্টিফিকেট ডিজিটাল সত্যায়নে কিউআর কোড যুক্ত থাকবে। সার্টিফিকেট সত্যায়নে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমে আসবে, ব্যয় সাশ্রয়ী হবে এবং বিদেশের দূতাবাসসহ নানা দপ্তরে সত্যায়নের প্রয়োজন হবে না।

অনুষ্ঠানে কমিশনের গবেষণা সহায়তা ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক ড. ফেরদৌস জামান, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক ড. সুলতান মাহমুদ ভূইয়া, জনসংযোগ ও তথ্য অধিকার বিভাগের পরিচালক ড. শামসুল আরেফিন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমান, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ মাকছুদুর রহমান ভূঁইয়া, জেনারেল সার্ভিসেস, এস্টেট এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পরিচালক জাফর আহম্মদ জাহাঙ্গীর, স্ট্র্যাটেজিক প্ল্রানিং, কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স বিভাগের পরিচালক ড. দূর্গা রানী সরকার, অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক মোঃ রেজাউল করিম হাওলাদারসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, এটুআই, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও আইটি কর্মকর্তা এবং ইউজিসি’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন।