বাসস
  ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:৩৪

ডেঙ্গু প্রতিরোধে আলেম ওলামাদের সহযোগিতা চাইলেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত


চট্টগ্রাম, ১৩ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা বাড়াতে আলেম ওলামাদের ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। মসজিদের খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিনগণ জুমার খুতবায় ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্পর্কে মুসল্লিদের সচেতন করলে তা  ভাল ফল বয়ে আনবে বলে মনে করেন মেয়র। 

আজ বুধবার  চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পাবলিক লাইব্রেরি সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধে আলেম ওলামাদের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এসব কথা বলেন। 

ডা. শাহাদাত বলেন, ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধে মূল অস্ত্র হলো সচেতনতা। আলেম সমাজের সদস্যরা মসজিদে এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক বার্তা প্রচার করলে সাধারণ জনগণ তা গুরুত্বের সাথে নেবে। বিশেষ করে প্রতি জুমা’র খুতবায় খতিব সাহেবরা যদি ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক বক্তব্য রাখেন তা জনগণ অনুসরণ করবে। মাদরাসা শিক্ষকরা যদি শ্রেনীকক্ষে  ছাত্রদের ডেঙ্গু বিষয়ে বলেন তাহলে ছাত্ররা সচেতন হবে। সমাজের কল্যাণে ইমাম, মুয়াজ্জিন, আলেম সমাজকেই নেতৃত্ব দিতে হবে।

ডেঙ্গু ছাড়ও  এইচপিভি টিকার বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে আলেমদের সহায়তা চেয়ে মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন থেকে বিনামূল্যে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে নারী শিশুদের জন্য এইচপিভি ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। বাহিরে থেকে এ টিকা নিতে ৩ হাজার টাকা লাগে, অথচ আমরা বিনামূল্যে দিচ্ছি। কুকুরের কামড়ে আক্রান্তদেরও ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে। মেমন হাসপাতালে বিনামূল্যে এনএসওয়ান ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হচ্ছে। এছাড়া, প্রতিটি ওয়ার্ডে আমাদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নামমাত্র মূল্যে চিকিৎসকরা রোগী দেখছেন। এসব বিষয়ে আপনারা মানুষকে সচেতন করলে চট্টগ্রামকে হেলদি সিটি করতে পারব আমরা। 

ডেঙ্গুর কারণে সাধারণ মানুষ ভুগছে, এবং এই রোগ থেকে রক্ষা পেতে আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত বাড়ির আঙিনা, ফুলের টব, বালতি, টায়ার এবং এসি’র পানির ট্রেতে পানি জমতে না দেওয়া। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং সচেতনতা ছাড়া ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্ভব নয় বলেও উল্লেখ করেন  মেয়র ডা. শাহাদাত। 

বাংলাদেশীদের ধর্মভীরু উল্লেখ করে মেয়র ডা. শাহাদাত আলেম সমাজের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা ধর্মভীরু জাতি। আমরা আলেম-ওলামাদের অনেক সম্মান করি। আলেম-ওলামারা কোন কথা বললে তা মানুষ অনেক মনোযোগ ও গুরুত্বের সাথে শুনে। আপনারা যদি পরিচ্ছন্নতার বিষয়গুলোর সাথে ইসলামের সম্পর্কের দিকটি মুসল্লিদের ব্যাখ্যা করে বলেন, তা মুসল্লিদের মনে স্থান করে নিবে। আপনারা মসজিদে মুসল্লিদের কাছে এই বার্তাগুলো পৌঁছে দেবেন এবং ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করবেন। আপনারা এই বিষয়ে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারেন, কারণ সাধারণ জনগণ আপনাদের কথা গুরুত্বের সাথে নেয় এবং অনুসরণ করে। আমরা সবার সহযোগিতায় একটি ডেঙ্গু মুক্ত চট্টগ্রাম গড়ে তুলতে চাই।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চসিক  সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমি, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহিসহ  চট্টগ্রামের আলেম ওলামাবৃন্দ। 

চসিকের মাদ্রাসা পরিদর্শক মাওলানা হারুনুর রশিদের সঞ্চালনায় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাওলানা আমানুল্লাহ।