বাসস
  ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৪:০৩

লক্ষীপুরের রহমতখালী খালের ব্রীজ ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

লক্ষ্মীপুর. ১৪ নভেম্বর. ২০২৪ (বাসস) : জেলার চন্দ্রগঞ্জ-শেখপুর সড়কের রহমতখালী খালের ওপর নির্মিত ব্রীজ ভেঙ্গে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

বন্ধ রয়েছে কফিল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থীদের পাঠদান। একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম এ ব্রীজটি ভেঙ্গে যাওয়ায় কলেজ,মাদ্রাসা, প্রাথমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকসহ ৬টি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থীসহ দুর্ভোগে কয়েকটি এলাকার দুই লাখের বেশি মানুষ। ফলে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা ও ব্যবসা-বাণিজ্য।

এদিকে স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইমরামুল হক বলছেন, ব্রীজ নির্মাণ করতে সময় লাগলেও সাময়িকভাবে চলাচলের জন্য বিকল্প ও বেইলী ব্রীজের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

এলজিআরডি ও এলাকাবাসী জানায়: প্রায় ৪০ বছর আগে রহমতখালী খালের ওপর ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদপ্তর থেকে ব্রীজটি নির্মাণ করা হয়। ১৯ মিটার দৈঘ্যে ব্রীজটি অনেকটাই নড়বড়ে ছিল। বর্ষার শুরু থেকেই রহমতখালী খালে তীব্র  স্রোত বয়ে চলে। সাম্প্রতিক বন্যায় স্রোতের গতি আরও বেড়ে যায়।

স্রোতের তোড়ে ব্রীজটির ভীত দুর্বল হয়ে পড়ে। এছাড়া ব্রীজের দক্ষিণ অংশের মাটি সরে যায়। গত রোববার (১০ নভেম্বর) বিকেলে হঠাৎ দক্ষিণাংশ সড়কসহ ব্রীজের মাঝামাঝি পর্যন্ত ধসে পড়ে। এতে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এ ব্রীজ দিয়ে লক্ষ্মীপুর সদর,চন্দ্রগঞ্জ, শেখপুর, রাজাপুর, রামকৃষ্ণপুর, চরশাহী,বসুরহাট ও পাশর্^বর্তী জেলা নোয়াখালীর কিছু এলাকার প্রায় দুই লাখের বেশি মানুষ যাতায়ত করে এ ব্রীজের উপর দিয়ে। এছাড়া কফিল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ ও প্রতাবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়সহ ৬টি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থীও যাতায়তের একমাত্র পথ এটি। ব্রীজ ভেঙে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন বাসিন্দারা। আশপাশের নারী-শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ এবং শিক্ষার্থীরা এখন ঝুঁকি নিয়ে গাছের গুঁড়ি ফেলে খাল পার হচ্ছেন। এতে করে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকাও করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।

ডিগ্রির দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হুমায়রা বেগম ও  দ্বাদশ দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হাসান বলেন, ব্রীজের উত্তর পাশে ঢাকা-লক্ষ্মীপুর মহাসড়ক, দক্ষিণ পাশে কফিল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ। শুধুমাত্র কফিল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫ হাজার। এছাড়া আরো অন্য ৫টি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী রয়েছে।

ব্রীজটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর কলেজের প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষা স্থগিত করার পর এখন পাঠদানও বন্ধ রয়েছে। কবে নাগাদ ব্রীজ নির্মাণ বা বিকল্প পথের ব্যবস্থা হবে,তাও নিশ্চিত নয়। ফলে পড়ালেখা নিয়ে দু”চিন্তায় পড়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। দ্রুত বিকল্প বেইলী ব্রীজের ব্যবস্থা করে পড়ালেখা স্বাভাবিক করার দাবি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।

কফিল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ(ভারপ্রাপ্ত) প্রিয়ব্রত চৌধুরী বলেন,  কলেজে ৫ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত রয়েছে। রহমতখালী খালের পানির তীব্র স্রোতে ব্রীজটি ভেঙ্গে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা আসতে পারছেনা। এতে করে প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষা স্থগিত করার পর এখন কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে পড়ালেখা মারাত্বকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এ বিষয়ে গভিনিং বডির সভাপতি ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। দ্রুত বিকল্প পথের ব্যবস্থা করে পড়ালেখার পরিবেশ তৈরি করার দাবি জানান তিনি।

এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইকরামুল হক বলেন, রহমতখালী খালে তীব্র স্রোতে ব্রীজটি ধসে পড়েছে। জনগুরুত্ব বিবেচনায় এখানে ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি নতুন ব্রীজ নির্মাণ ও সাময়িক চলাচলের বিকল্প ব্যবস্থা করতে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কলেজের গভেনিং বডির সভাপতি লক্ষ্মীপুর-৩ সদর আসনের সাবেক এমপি শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, ব্রীজটি নির্মাণ করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।  এখন যাতায়তের জন্য বিকল্প হিসেবে বেইলী ব্রীজের ব্যবস্থা করার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের সঙ্গেযোগাযোগ হয়েছে। অচিরে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন তিনি।