বাসস
  ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:০৮
আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:১১

তামাক ব্যবহারে দেশে ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে

ঢাকা, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪(বাসস): দেশে তামাক ব্যবহারের কারণে বছরে এক লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ অকালে প্রাণ হারাচ্ছে। এমন বাস্তবতাকে এড়িয়ে তামাক কোম্পানি গুলো শুধু মুনাফা অর্জনের জন্য আইন সংশোধনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন ও তামাক কর বৃদ্ধি: গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়। 

বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বীর সঞ্চালনায় সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভী।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী।

তিনি বলেন, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। কিন্তু তামাক কোম্পানি এবং তাদের পরিচালিত বিভিন্ন সংগঠন আইন সংশোধনের বিরোধিতা করছে। তাদের দাবি, আইন সংশোধন হলে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাবে। 

একটি গবেষণার বরাত দিয়ে সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, তারা রাজস্ব হারানোর কথা বললেও তামাক কোম্পানি বছরে যে পরিমাণ রাজস্ব প্রদান করে তার থেকে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা বেশি ব্যয় হয় তামাক জনিত বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায়। তাই দেশের মানুষের সুরক্ষা এবং অর্থনৈতিক ক্ষতি এড়াতে বিদ্যমান ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ (সংশোধিত ২০১৩) এখনই ডব্লিউএইচও ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ট্যোবাকো কন্ট্রোল এফসিটিসি’র আলোকে সংশোধন করা প্রয়োজন।   

ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস্’র (সিটিএফকে) লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় বর্তমান অন্তর্র্বর্তী সরকার বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে তামাক কোম্পানি গুলো বিভিন্ন অপতথ্য ছড়িয়ে আইন সংশোধনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। অধূমপায়ীদের সুরক্ষায় প্রদান এবং নতুন প্রজন্মকে তামাকের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচাতে প্রস্তাবিত আইন দ্রুত পাস করতে হবে।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন,স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনৈতিক সর্বক্ষেত্রেই তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব লক্ষণীয়। তারপরও দেশে তামাক কোম্পানির ব্যবসা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর অন্যতম কারণ দুর্বল আইন। তাই বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাস করে অধ্যাদেশ আকারে জারি করতে হবে। 

সভাপতির বক্তব্যে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভী বলেন, তামাক কোম্পানির লক্ষ্য শুধু মুনাফা অর্জন। জনস্বাস্থ্য নিয়ে তাদের কোনো ভাবনা নেই। একই সাথে তারা ব্যবসা বৃদ্ধির জন্য নানা কূটকৌশলে কিশোর ও তরুণদের সিগারেট সেবনে উৎসাহী করছে। তাই তাদের কূটকৌশল বন্ধে এবং কিশোর ও তরুণদের সুরক্ষায় বিদ্যমান তামাক আইন সংশোধন করতে হবে।