শিরোনাম
চট্টগ্রাম, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ এবং সড়ক পরিবহন, সেতু এবং রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার কোনো ক্ষমতা গ্রহণ করেনি। আমরা একটা দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। আমরা এই দায়িত্ব গ্রহণ করেছি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে।’
তিনি বলেন, দায়িত্ব ও ক্ষমতার মধ্যে একটা মৌলিক পার্থক্য আছে। ক্ষমতা হলে গায়ে একটু গরম, গরম লাগে। নিজেকে খুব বড় মনে হয়। অন্যদিকে আপনি যখন দায়িত্ব গ্রহণ করবেন, নিজেকে খুব খাটো মনে হয়। সবসময় মনে হয়, আমি আমার কাজটি করতে পারছি কিনা।’
ফাওজুল কবির আজ বিকেলে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
আরও একটি রিফাইনারি নিমার্ণের উদ্যোগের কথা জানিয়ে ফাওজুল কবির বলেন, ‘আমাদের একটা রিফাইনারি আছে, অনেক পুরানো। যেকোনো মুহুর্ত ভেঙে পড়তে পারে। আমরা আরেকটি রিফাইনারির উদ্যোগ নিয়েছি। আপনারা জানেন যে, দুর্বৃত্তায়নের কারণে আরেকটি রিফাইনারি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি। এটা একদম দখল করে নিয়েছে। এই যে দখলের মানসিকতায় জমি, বিভিন্ন ব্যাংক, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল, আমরা সেটির অবসান ঘটিয়েছি। ইস্টার্ন রিফাইনারির কাজটা আমরা সহসা হাতে নেবো।’
বিদ্যুৎ খাতের সুখবর জানিয়ে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতে কিছু সুখবর আছে। একটা সুখবর হচ্ছে- সরকার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছিল আইনের মাধ্যমে। ২০১০ সালে এই আইন করা হয়েছিল। এটি হলো দ্রুত লেনদেনের আইন। এটা হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ হয়েছিল। শাহদীন মালিক এটাকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। হাইকোর্ট এই আইনটিকে সংবিধান বিরোধী বলেছেন। আপনারা জানেন আমাদের চুক্তিগুলো আন্তর্জাতিক চুক্তি। চাইলেই বা সহজেই বের হওয়া যায় না। এজন্য আমরা ধীরস্থির ভাবে এগুচ্ছি।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগের জন্য আমরা একটা জাতীয় কমিটি করেছি। জাস্টিস মইনুল ইসলামকে সভাপতি করে এ কমিটি করা হয়েছে। তারা অনিয়মগুলো খতিয়ে দেখবে। অনিয়মগুলো যদি না জানেন, আবেগ বা রাগের বশীভূত হয়ে যদি লাইন কেটে দিই, তাহলে মামলায় জড়াতে হবে। এসব মামলায় বাংলাদেশের কখনো ভালো করে নাই। সবসময় ক্ষতিপূরণ দিয়ে আসতে হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, গ্যাসের সংকটের কারণে প্রতিবছর ৬ হাজার কোটি টাকার গ্যাস আমদানি করি। এ বছরই আমরা ৫০টি কূপ খনন করবো। আগামী দুই বছরে আরও একশ’টি কূপ খনন করবো। জ্বালানী আমদানী করাটা সহজ। কিন্তু কূপ খনন করে গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার করার চেষ্টাটা হয়নি। আমরা নবায়নযোগ্য একটি শক্তিতে বিনিয়োগ করতে চাই।
চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের চাওয়া নতুন কালুরঘাট সেতুর নির্মাণ কাজ আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে জানিয়ে ফাওজুল কবির বলেন, কালুরঘাট সেতুর কাজ কখন চালু হবে সেটা সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল একজন। আমরা আশা করছি, ফেব্রুয়ারি মাস থেকে কালুরঘাট সেতু কাজ শুরু হবে। এরপর আমি আরেকটি কাজ দেখতে এসেছি, টানেল আছে। ওটা পার হই নাই। কোনো গাড়ি দেখলাম না। এই যে একটা অপরিকল্পিত পরিকল্পনা।
তিনি বলেন, আসলে কি জানেন, পরিকল্পনা ছিলো- মাতারবাড়িতে একটা গভীর সমুদ্রবন্দর হবে এবং সেখানের সঙ্গে একটা সড়ক সংযাগ হবে। সেখানে একটা ইকনোমিক জোন হবে। কিছুই হয়নি। শুধু সেখানে একটা বিদ্যুৎ প্লান্ট হয়েছে আর এখানে একটা টানেল হয়ে গেছে। অপচয়ের উন্নয়ন আমরা করতে রাজি না।
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রাম উন্নয় কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম, সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ হাসান, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. নাজমুল হোসেন।