শিরোনাম
বান্দরবান, ১৯ নভেম্বর, ২০২৪, (বাসস) : জেলার আলীকদমে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় সুপার ক্রপ চাষাবাদ
জোরদারকরণ প্রকল্প'-এর আওতায় ইক্ষু চাষ করতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণসহ সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের অধীনে ১২৪ জন কৃষকের মাধ্যমে ১২৪টি প্লটের মাধ্যমে ১২৪ বিঘা জমিতে ইক্ষু চাষ করা হচ্ছে। আলীকদম উপজেলায় পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় সুপার ক্রপ চাষাবাদ জোরদারকরণ প্রকল্পের মাধ্যমে ২০২৩-২০২৪ রোপণ মৌসুমে ৬৪ জন কৃষকের মাঝে ৬৪ বিঘা জমি এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৬০ প্রদর্শনী প্লট প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ইক্ষু ও সাথি ফসল চাষের প্রদর্শনী প্লট স্থাপন করা হয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪৬টি এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৮০টি আখ চাষের প্লট তৈরি করা হয়েছে। প্রদর্শনী প্লটগুলো উন্নতমানের শোধনকৃত আখের বীজ, সাথি ফসলের বীজ, সার-কীটনাশক বিতরণ হয়েছে। চলতি মৌসুমে চাষাবাদে বাম্পার ফলনে লাভের মুখ দেখা দেওয়ায় চাষীরা খুশি। স্বল্প খরচ, অধিক লাভ ও পরিশ্রম কম হওয়ায় অন্য কৃষকরাও আখ চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
সচেতন মহলের অভিমত, তামাকের বিকল্প হতে পারে আখ চাষ। তাই এ চাষ বৃদ্ধিতে কৃষি বিভাগকেও কৃষকদের সহায়তা প্রদান অপরিহার্য। চলতি মৌসুমে ২০২৩-২৪ ও ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১২৪ জন প্রকৃত তামাক চাষিকে ইক্ষু ও সাথি ফসল চাষের আওতায় আনা হয়েছে বলে জানান প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, গত চার যুগের বেশি সময় ধরে আলীকদম উপজেলার চারটি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকায় আবাদি জমিতে ক্ষতিকর তামাক চাষ হয়ে আসছে। বর্তমানেও বেশিরভাগ জমিতে তামাক চাষ করা হচ্ছে। লাভবান হলেও তামাক চাষ ক্ষতিকর ।
আখচাষী মো. আজিম উদ্দিন বলেন, এবার আমি নিজস্ব ১ বিঘা জমিতে রং বিলাস ৪২ জাতের আখ চাষ করেছি। আখের চাহিদা থাকায় ভালো দাম পাচ্ছি এবং বাইরের ব্যবসায়ীরা পাইকারি নিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে সিরাজ কারবারি পাড়ার বাসিন্দা খুচরা আখ ব্যবসায়ী আবু ছিদ্দিক বলেন, প্রতি শত আখ ৬ হাজার টাকা হারে ক্রয় করে সাড়ে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকায় বিক্রি করেন তিনি।
এদিকে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় সুপার ক্রপ চাষাবাদ জোরদার করণ প্রকল্প’ এর কনসালটেন্ট কৃষিবিদ ক্যছেন বলেন,আখ অর্থকরী ফসল। এক সময় দেশে ধানের ফলন বৃদ্ধির জন্য আখ চাষ কমে এসেছিল,কিন্তু বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় আখ চাষের কারনে এ চাষে কৃষকদের সু-দিন ফিরে আসছে। অনেক কৃষকই বর্তমানে আখ চাষ করে আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন,বান্দরবানের প্রতিবছর গুড়ের চাহিদা ৩০ থেকে ৩২ টন কিন্তু এ জেলায় স্থানীয়ভাবে গুড় উৎপাদিত হয় শুধুমাত্র ২ থেকে ৪ টন। বাৎসরিক গুড়ের চাহিদা মেটানোর জন্য আরো ২৬ থেকে ২৮ টন প্রয়োজন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পার্বত্য চট্টগ্রামে ইক্ষু চাষ সম্প্রসারণে সুস্থু পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
আলীকদম উপজেলা কৃষিবিদ কর্মকর্তা মো. সোহেল রানা জানান, ইক্ষু থেকে নগদ অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। আলীকদমে আবাদযোগ্য পতিত জমি এবং এক ফসলি উঁচু জমি খুব সহজেই স্বল্প সেচের মাধ্যমে আখ চাষের জন্য উপযোগী এবং অধিক সম্ভাবনাময়।