বাসস
  ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ২০:০৬

রাষ্ট্র ও জনগণ জামায়াতের হাতে নিরাপদ থাকবে: সেলিম উদ্দিন

ঢাকা, ১৯ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস): বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে দেশ উন্নত ও সমৃদ্ধ হবে উল্লেখ করে দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা আমাদের হাতে আসলে জনগণ ও রাষ্ট্র নিরাপদ থাকবে।  

তিনি বলেন, 'জামায়াতের লোকেরা দুর্নীতি ও চাঁদাবাজি করে না। জামায়াতের লোকেরা স্বজনপ্রীতি করে না, রাজনীতিকে ব্যবসা হিসেবে গ্রহণ করে না। জামায়াতের প্রত্যেকটি লোক আলাদা আলাদা ব্যবসা ও চাকরি করে। উপার্জিত অর্থ থেকে আমরা একটা অংশ দলকে দিয়ে থাকি। আমরা চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি করি না। জনগণ পরীক্ষামূলকভাবে বাংলাদেশকে যদি জামায়াতের হাতে তুলে দেয়, তারা দেখবে কেমন বাংলাদেশ হয়-তা আমরা ইনশাআল্লাহ দেখাবো।'

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরা মডেল থানার যুব বিভাগের উদ্যোগে ৭ নম্বর সেক্টরে ন্যায্যমূল্যে সবজি বিক্রয় কেন্দ্রের উদ্বোধন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

জামায়াতের কর্মকাণ্ড তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা ইসলামী ব্যাংকিং পদ্ধতি চালু করে লাখ লাখ লোকের কর্মসংস্থান করেছি। বেকার সমস্যার সমাধান করেছি। বাংলাদেশে যে রেমিট্যান্স আসে, তার একটা বড় অংশ আমাদের উদ্যোগের কারণে, আমাদের চেষ্টার কারণে আসে।

তিনি বলেন, আমরা ক্ষমতায় না গিয়েও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতালসহ বিভিন্ন অবকাঠামো তৈরি করে প্রমাণ করেছি। আমরা সেই পরীক্ষায় ইতোমধ্যে সফল হয়েছি। একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান সেলিম উদ্দিন। 

ঢাকা মহানগরীর জনগণকে সবধরণের সহযোগিতা প্রদান করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমরা একটি সমৃদ্ধ নগরী চাই। আমরা একটি মানবিক নগরী চাই। আমরা একটি পরিচ্ছন্ন ও দুর্নীতিমুক্ত নগরী চাই। নগরীকে গড়ে তুলতে দলের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়া হবে বলেও জানান তিনি। 

সেলিম উদ্দিন আশা প্রকাশ করেন, নগরীতে সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণ নগরীর অভিভাবক হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বকে গ্রহণ করবে। শুধু সিটি নয় দেশের অন্যান্য অঞ্চলে সকল নির্বাচনে জামায়াতের নেতৃত্বকে জনগণ গ্রহণ করবে। 

তিনি বলেন, পতিত স্বৈরাচার যাওয়ার তিনদিন আগে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেছিল। তারা জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেছিল, আর আল্লাহ তায়ালা এই জাতির মাধ্যমে তাদেরকে দেশছাড়া করেছেন। তারা দেশ থেকে বিতাড়িত হয়েছে।  

সেলিম উদ্দিন বলেন, জামায়াতে ইসলামী আল্লাহর নির্দেশ বাস্তবায়নে কাজ করছে। কোরআনের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে অবশ্যই একটি দল থাকতে হবে, যারা মানুষকে কল্যাণের দিকে আহ্বান জানাবে। ভালো কাজের আদেশ দেবে ও অসৎ কাজে বাধা দেবে। আর এরাই সফলকাম হবে।’ 

তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে উল্লেখ করেন, জামায়াতে ইসলামীর লোকদের তৈরি করা হয় এমনভাবে, যেন তারা মানুষের কল্যাণ ও সেবা করতে পারে। আমরা ব্যক্তিগত ও দলগতভাবে এটা করি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই সময়ে যুব বিভাগের উদ্যোগে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রির বিষয়টিও তিনি উল্লেখ করেন।  

সেলিম উদ্দিন বলেন, মানুষের আয় বাড়ছে না, কিন্তু খরচ হু হু করে বেড়ে যাচ্ছে। বর্তমান সরকার জিনিসপত্রের দাম দ্রুত সহনশীল পর্যায়ে নিয়ে আসবেন বলেও নিজের আশার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, তারা চেষ্টা হয়তো করছেন, কিন্তু আমাদের দেশের মানুষ নামের কলঙ্ক, কিছু অমানুষ- যাদের রাজনৈতিক পরিচয় আছে, তাদের বিভিন্ন সামাজিক পরিচয় আছে, তারাই বাজার ও পরিবহন সিন্ডিকেট করে বাজারকে নিয়ন্ত্রণে আনার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

তিনি বলেন, আমরা সরকারকে বলবো, কারো চেহারার দিকে না তাকিয়ে বরং যাদের ত্যাগের বিনিময়ে ক্ষমতায় এসেছেন তাদের চেহারার দিকে তাকান। দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে যারা চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ তাদেরকে ধরে প্রকাশ্যে দিবালোকে বিচার করুন। এদেরকে প্রতিহত করুন। এদেশের ১৮ কোটি মানুষ আপনাদেরকে সমর্থন দেবে। আর যদি তা না করে জাতিকে কষ্ট দেন তাহলে আপনারাও ভালো কিছু করতে পারবেন না- ব্যর্থ হয়ে বিদায় নেবেন। 

তিনি বলেন,  আমরা আপনাদের ব্যর্থতা চাই না। আপনারা ব্যর্থ হলে জাতি ব্যর্থ হবে। আপনারা ব্যর্থ হলে ফ্যাসিবাদ ফিরে আসবে- আমরা এটা চাই না। আমরা আপনাদের পাশে আছি। কারা বাজারে বারবার জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি করছে এবং কি কারণে দাম নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না, তা খুঁজে বের করতে সেনাবাহিনী ও যৌথ বাহিনীর মাধ্যমে তদন্ত করে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান তিনি। 
ন্যায্যমূল্যের বাজার ঢাকার সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। টিসিবির পাাশাপাশি জনগণের জন্য আরও কমদামে পণ্য দিয়ে সেবা দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে এই উদ্যোগের সূচনা হলো বলেও উল্লেখ করেন সেলিম উদ্দিন। 

থানা যুব বিভাগের সভাপতি আতিয়ার রহমান আতিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উত্তরা পশ্চিম জোনের সহকারী পরিচালক মাহবুবুর রহমান, উত্তরা মডেল থানার আমির অ্যাডভোকেট. মো. ইব্রাহিম খলিল, মডেল থানার নায়েবে আমির হারুন অর রশীদ তারেক ও জামায়াত মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থী সমাজসেবক  মাহফুজুর রহমান।