বাসস
  ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ২২:৪৪

আবু সাঈদ হত্যা মামলায় আটক বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল তিন দিনের রিমান্ডে

রংপুর, ১৯ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস): শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলায় অভিযুক্ত রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বোরোবি)’র সাবেক প্রক্টর মোঃ শরিফুল ইসলামকে আজ মঙ্গলবার স্থানীয় একটি আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

এর আগে সোমবার রাতে হত্যা মামলার আসামি হিসেবে নগরীর আলমনগর এলাকা থেকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বেরোবি’র রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শরিফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রংপুর পিবিআই-এর পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন আজ মঙ্গলবার বিকেলে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে মেট্রোপলিটন (তাজহাট) আমলী আদালতে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদনসহ ওই শিক্ষককে হাজির করেন।

পিবিআই এসপি আজ সন্ধ্যায় বাসস’কে জানান “শুনানি শেষে উক্ত আদালতের বিচারক মোঃ আসাদুজ্জামান বিকেলে আবু সাঈদ হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শরিফুল ইসলামের তিন দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন” ।

গত ১৬ জুলাই রংপুর নগরীর পার্কের মোড় এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের দ্বাদশ ব্যাচের মেধাবী ছাত্র শহীদ আবু সাঈদ।

ঐদিন আবু সাঈদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ তাৎক্ষণিকভাবে দেশব্যাপী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনকে একটি অপ্রতিরোধ্য গণঅভ্যুত্থানে পরিনত করে যা অবশেষে ৫ আগস্ট তৎকালীন ফ্যাসিবাদী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করলে তিনি দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে যান।

গত ১৮ আগস্ট শহিদ আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী সাবেক আইজিপিসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে ৩০ থেকে ৩৫ আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন।

পরে মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও বেরোবি’র সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলামসহ আরও সাতজনের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে আদালতে সম্পূরক আবেদন করেন রমজান আলী।

আদালতের আদেশে তাদেরকেও মামলায় এজাহার নামীয় আসামী হিসেবে নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। মামলাটি এখন পিবিআই তদন্ত করছে।

পিবিআই এসপি বলেন, “এর আগে বরখাস্ত সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আমির আলী ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়কে আবু সাঈদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এর আগে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআই-এর এসপি এবিএম জাকির হোসেনও সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামিদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করেন।
শুনানি শেষে গত ১ অক্টোবর রংপুর মেট্রোপলিটন কগনিজেন্স (তাজহাট) আমলী আদালতের বিচারক মোঃ আসাদুজ্জামান আবু সাঈদ হত্যা মামলার আসামিদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।

বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা পাওয়া আসামিরা হলেন- রংপুর রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি আবদুল বাতেন, সাবেক মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ মনিরুজ্জামান, উপ-পুলিশ কমিশনার আবু মারুফ হোসেন, সহকারী পুলিশ কমিশনার আরিফুজ্জামান ও ইমরান হোসেন, বেরোবি’র শিক্ষক মশিউর রহমান ও আসাদুজ্জামান, এসআই বিভূতি ভূষণ, তাজহাট থানার অফিসার ইনচার্জ মো: রবিউল ইসলাম, বেরোবি’র ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া ও সাধারণ সম্পাদক শামীম মাহফুজ, সাংগঠনিক সম্পাদক ধনঞ্জয় কুমার টগর, দপ্তর সম্পাদক বাবুল হোসেন ও বেরোবি’র কর্মকর্তা রফিউর হাসান।

ইতিমধ্যেই রংপুর রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি আবদুল বাতেন ও রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ মনিরুজ্জামানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।