শিরোনাম
ঢাকা, ২১ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস): মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় এসেছে।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চের আজ বৃহস্পতিবারের জন্য প্রকাশিত কার্যতালিকার ২১ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে।
রিভিউ আবেদনের পক্ষে আইনজীবী এডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, রিভিউ আবেদনটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় এসেছে। সিনিয়র এডভোকেট এস এম শাহজাহান শুনানি করবেন।
২০২০ সালের ১৯ জুলাই আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিভিউ আবেদন করেছিলেন এটিএম আজহারুল ইসলাম। ২৩ পৃষ্ঠার পুনর্বিবেচনার এ আবেদনে মোট ১৪টি যুক্তি উপস্থাপন করা হয়।
২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর এটিএম আজহারকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়ে যায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এর বিরুদ্ধে আপিলে শুনানির পর ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।
২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেয়া রায়ে আনীত অভিযোগ ২ নম্বর, ৩ নম্বর এবং ৪ নম্বর অভিযোগে ফাঁসির দণ্ডাদেশ পেয়েছেন আজহার। এছাড়া ৫ নম্বর অভিযোগে অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অমানবিক অপরাধের দায়ে ২৫ বছর ও ৬ নম্বর অভিযোগে নির্যাতনের দায়ে ৫ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়। আপিল বিভাগের রায়ে ২, ৩, ৪ (সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে) ও ৬ নম্বর অভিযোগের দণ্ড বহাল রাখা হয়। আর ৫ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেয়া হয়।
২০২০ সালের ১৫ মার্চ আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। এরপর রিভিউ করেন এটিএম আজহার।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে গণহত্যা-হত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ, আটক, নির্যাতন ও গুরুতর জখম এবং বাড়ি-ঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের মতো ৯ ধরনের ৬টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছিলো এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১০ সালের ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কার্যক্রমের যাত্রা শুরু হয়েছিল।
এখানে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামান এবং দলটির নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাশেম আলীকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। বিএনপি'র স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। পরে রায়ের বিরুদ্ধে আনা আপিল ও রিভিউ'র পর তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়৷
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ইসলামিক স্কলার দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকেও আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়। কারাবন্দী অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এখানে প্রায় অর্ধশত মামলায় রায় হয়।
তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এই বিচার শুরু থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। ট্রাইব্যুনালের বিচারকসহ অন্যান্যদের একটি স্কাইপি কেলেঙ্কারি বিতর্কের সৃষ্টি করে। পাশাপাশি আসামীর পক্ষে সাফাই সাক্ষীকে অপহরণসহ নানা অভিযোগ ছিল ওই বিচারিক কার্যক্রমে। আসামি পক্ষে আইনজীবী ও তাদের স্বজন-
শুভাকাঙ্ক্ষীরা ওই বিচারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও তাতে কোন কর্ণপাত করেনি সংশ্লিষ্টরা।