শিরোনাম
চট্টগ্রাম, ২২ নভেম্বর ২০২৪ (বাসস) : গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের পক্ষে যারা অবস্থান নিবেন, আমরা বলতে চাই তারা ফ্যাসিবাদের দোসর। বলতে পারি, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন ঠেকানোর জন্য আবার যদি কোনো বিপ্লবের ডাক দিতে হয় তা দেবো, এই চট্টগ্রামের মাটি থেকেই যেন তা শুরু হয়।’
তিনি বলেন, ‘দুই-একটি রাজনৈতিক দল চায় আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসবে, আর আমরা কি আঙুল চুষবো ? আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নাম যারা মুখে নিবে, তাদের প্রতিহত করতে হবে। রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে প্রয়োজনে মহাসমাবেশ করা হবে।’
গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত ‘তারুণ্যের গণসমাবেশ’ শিরোনামে আজ শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সমাবেশে গণঅধিকার, যুবঅধিকার, ছাত্রঅধিকার ও শ্রমিক অধিকারপরিষদের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
গণঅধিকার পরিষদ সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমরা ৫৩ বছর দেখেছি। কাজেই আর দুই-এক বছর প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে দেখতে চাই। তারা কী কী করে। আমাদের বিশ্বাস, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যে আন্তর্জাতিক পরিচিতি, দেশের ভঙ্গুর অর্থনীতিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে টেনে তুলতে পারবেন। তিনি ছয়টি সংস্কার কমিশন করে দিয়েছেন। নির্বাচন, গণমাধ্যম, বিচার ব্যবস্থা, প্রশাসনের সংস্কার গণআন্দোলনের গণআকাঙ্খা। এ সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না।’
তিনি বলেন, ‘অবশ্য সরকারকে ক্ষমতায় থাকার প্রশ্নে আমরা ব্ল্যাংক চেক দেবো না। আপনারা ভালো কাজ করবেন, আমাদের সমর্থন পাবেন। জনবিরোধী কমকাণ্ড করলে, জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে, এক সেকেন্ডও সময় দেবো না।’
ভিপি নুর বলেন, ‘এমপি-মন্ত্রী হতে পারবো কিনা সেটা তো আমরা জানি না। আর আমরা এমপি-মন্ত্রী হওয়ার জন্য চাঁদাবাজি, ধান্ধাবাজিও করার জন্য রাজপথে নামি নাই, সংগ্রাম করি নাই। জনগণের প্রত্যাশা, নতুন বাংলাদেশ। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করার জন্যই গণঅধিকার পরিষদসহ ছাত্র-জনতা কাজ করবে।’
নুরুল হক নুর বলেন, হেলায় ফেলায় সুযোগ নষ্ট করা যাবে না। রাতারাতি নির্বাচন হলে এই ব্যবস্থার পরিবর্তন হবে না। গণ-অভ্যুত্থানে যারা নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, সেই ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনের জন্য কোনো রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে স্পেস (সুযোগ) দেওয়ার কথা বলছেন। আমরা ক্ষমতায় বসতে জীবন দেই নাই। আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন ঠেকাতে যদি প্রতিরোধের ডাক দিতে হয়, এই চট্টগ্রামের মাটি থেকে হবে সে ডাক।
আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে জানিয়ে নুরুল হক নুর বলেন, রাজনৈতিক দল, ছাত্র-আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ও জনগণকে নিয়ে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবীতে চট্টগ্রাম থেকে ডাক দিন। সারাদেশে সে ডাক ছড়িয়ে পড়বে। আমরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবীতে প্রয়োজনে ঢাকায় মহাসমাবেশ করব, আপনারা প্রস্তুতি নিন। আওয়ামী লীগের প্রশ্নে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না জানিয়ে হুঁশিয়ারি দেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক।
তিনি বলেন, আমরা নতুন রাজনৈতিক পরিবেশ, শান্তি এবং সম্প্রীতির পরিবেশ বিনির্মাণ করতে চাই। তাই বলে আমার ভাইয়ের রক্তে যাদের হাত লাল হয়েছে, তাদের সঙ্গে হ্যান্ডশেক করব (হাত মেলাবো), এত তাড়াতাড়ি এই নৃশংসতার স্মৃতি ভুলে যেতে পারব না। সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ জানাবো, যার যার রাজনীতি করুন। আওয়ামী লীগের প্রশ্নে আপনাদের অবস্থান পরিষ্কার করুন।
গণঅধিকার পরিষদ চট্টগ্রাম নগরের সভাপতি মো. শাহ আলমের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। সঞ্চালনা করেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রঅধিকার পরিষদের সভাপতি মো. রবিউল ইসলাম। দক্ষিণ জেলা গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব আরিফুল হকসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।