বাসস
  ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:১৯

পঞ্চগড়ে স্বাস্থ্য সেবার বেহালদশা, ডাক্তার নার্স শয্যা সংকট

// জাকির হোসেন কবির //
পঞ্চগড় ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস): পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালসহ উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতে স্বাস্থ্য সেবার বেহালদশা। সদর হাসপাতালসহ চার উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতেও রয়েছে চিকিৎসক, নার্স আর শয্যা সংকট।

জেলায় বর্তমানে ১২৬ জন চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে। জেলায় চিকিৎসকের পদ রয়েছে ১৭০ জন। এরমধ্যে কর্মরত আছেন ৪৪ জন। ১২৬ জন চিকিৎসক ছাড়াই চলছে পঞ্চগড়ের স্বাস্থ্যসেবা।

এর সাথে রয়েছে নার্স সংকট, হাসপাতালের শয্যা সংকট। তাছাড়া মিলছে না কাংখিত ওষুধ।

জেলা সিভিল সার্জন অফিসে চিকিৎসকের পদ ৩ জন থাকলেও সেখানে রয়েছে ১ জন। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ৩৭ জন চিকিৎসকের মধ্যে রয়েছে ১১ জন। পঞ্চগড় সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও  পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে ১৪ জনের বিপরীতে চিকিৎসক রয়েছে ৬ জন। তেতুঁলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৮ জনের মধ্যে রয়েছে ৬ জন চিকিৎসক। বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩০ জনের মধ্যে রয়েছে ১২ জন চিকিৎসক। দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩২ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও রয়েছে ৪ জন। আটোয়ারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৯ জনের মধ্যে রয়েছে ৪ জন চিকিৎসক। এর মধ্যে  অন্যত্র রয়েছে ৩ জন।

প্রায় ১০ লাখ মানুষের একমাত্র ভরসা পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল। তবে ১০০ শয্যার এ হাসপাতালে প্রতিদিন ভর্তি হচ্ছেন প্রায় ১৫০  রোগী। রোগীর চাপে খোলা বারান্দায় চলছে চিকিৎসা সেবা। এতে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। এতে আরও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগীরা। তবে সমস্যা নিরসনে হাসপাতালের পাশেই নির্মাণ করা হয়েছে ২৫০শয্যার নতুন ভবন।

নতুন করে কোন চিকিৎসককে পঞ্চগড়ে বদলী করা হলেও তারা কয়েক মাস থেকে অন্যত্র বদলী নিয়ে চলে যাচ্ছেন। ফলে সেবা পাচ্ছেনা সাধারন মানুষ।

জেলা ও উপজেলা হাসপাতাল গুলোতে সার্জারী, মেডিসিন, এ্যানেসথেসিয়া, চক্ষু, অর্থোপেডিক্স, ইএনটি, কার্ডিওলজি, গাইনী, শিশু, ডেন্টাল, প্যাথলজিষ্ট, আল্ট্রা মেডিসিনসহ বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে। গত বুধবার পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে আসা রোগীর আত্মীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায় , রাতে  অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে রোগীকে আনা হলে  বেড না পেয়ে বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছি।

তাই ১০০ শয্যার পরিবর্তে ২৫০ শয্যা হাসপাতালটি কি কারনে চালু করা হচ্ছে না তা বলতে পারছেন না কর্তৃপক্ষ।

জেলা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান সরকার জানান, গত ২০১৮ সালে ৫৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা অর্থায়নে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের ১০০ শয্যার পরিবর্তে ২৫০শয্যা হাসপাতালের নতুন ভবনের কাজ শুরু করে গণপূর্ত বিভাগ। পাঁচটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ করে, স্বাস্থ্য বিভাগকে তিন মাস পূর্বে আমরা হস্তান্তর করি৷

গনপূর্ত বিভাগ হস্তান্তর করলেও এখনো ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বর্ধিত হাসপাতালটি চালু করা হয়নি।

তবে নতুন ভবন চালু হলে পর্যাপ্ত জনবল ও বেড সংকট না থাকার কথা জানালেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. এসআইএম রেজাউল করিম ।

এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন , পঞ্চগড়ে  চিকিৎসক সংকট রয়েছে।  আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে চাহিদাও দিয়েছি  এবং যোগাযোগ করছি। আমাদেরকে চিকিৎসক দিতে চেয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বর্ধিত হাসপাতালটি চালু হলে চিকিৎসা সেবা ভালো হবে।  এতে দুর্ভোগ লাঘব হবে রোগীদের। আধুনিক সদর হাসপাতালে শয্যা সংকট রয়েছে। তবে বর্ধিত হাসপাতাল চালু হলে সমস্যা কমবে বলে আশা করি।