শিরোনাম
মুন্সীগঞ্জ, ২৪ নভেম্ব, ২০২৪ (বাসস) : বেতকা - তেঘরিয়া সংযোগ সড়কটিতে ধলেশ্বরী শাখা নদীর উপর মোল্লার হাট সেতুর নির্মাণ কাজ ছয় বছরেও শেষ হয়নি।এর ফলে মুন্সীগঞ্জ-ঢাকা সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। এতে সড়ক পথে জেলা সদরসহ তিন উপজেলার ঢাকাগামী যাত্রীদের যাতায়াতে চরম দুূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ।
দীর্ঘ কয়েক যুগেও মুন্সীগঞ্জ-ঢাকা সুষ্ঠু সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠেনি। মুন্সীগঞ্জ সদরসহ তিন উপজেলা সদর, টংগিবাড়ী এবং সিরাজদিখান বাসীকে মুক্তারপুর-পঞ্চবটি অপ্রশস্ত সড়কে যানজটের মধ্যে দিয়ে ঢাকায় যাতায়াত করতে হচ্ছে । ফলে এ এলাকার ঢাকা গামী যাত্রীদের যাতায়াতে চরম দুূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে । মুন্সীগঞ্জ-ঢাকা সুষ্ঠু সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ২০০২ সালে বেতকা - তেঘড়িয়া সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রায় ২০.৩৭ কি.মি দীর্ঘ সড়কটি মুন্সীগঞ্জের বেতকা থেকে ঢাকার কেরানীগঞ্জের তেঘড়িয়া হয়ে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে মিলিত হয়েছে। ইতমধ্যে বেতকা থেকে মোল্লার হাট পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। বেতকা-তেঘড়িয়া সংযোগ সড়কটিতে সিরাজদিখান উপজেলার বালুরচর ইউনিয়নের মোল্লার হাট এলাকায় ধলেশ্বরী শাখা নদীর উপর প্রায় ৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ২ শত ৫২ মিটার দীর্ঘ সেতুটির নির্মাণ কাজ গত ২০১৮ সালে শুরু হয়। প্রকল্পের মেয়াদ কয়েক দফা বৃদ্ধি করে সর্বশেষ ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত সময় বর্ধিত করা হয়। ২০২৪ সালে এসেও গুরুত্বপূর্ণ এ সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আরিফ উর রহমান বাসসকে জানান , ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সুরমা এন্টারপ্রাইজ সময় মতো কাজ শেষ না করায় তাদেরকে দেওয়া কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। দ্রত নির্মাণ কাজ শেষ করতে নতুন করে টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। কার্যাদেশ দেবার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সেতুর নির্মাণ কাজ ৭০ ভাগ শেষ হয়েছে নদীর মাঝের দুইটি পিলারে স্লাব বসানোর কাজ বাকী রয়েছে।অতি স্বল্প সময়ের মধ্যে পুনরায় নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
বেতকা - তেঘড়িয়া সংযোগ সড়কে যাতায়াতকারী যাত্রীরা মোল্লার হাট এলাকায় এসে নৌকা দিয়ে নদী পার হচ্ছে । প্রতিদিন প্রায় কয়েক হাজার যাত্রী এ সড়কে যাতায়াত করে। এ পথের যাত্রীদের বিশেষ করে শিশু ও মহিলাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হতে হচ্ছে । টংগীবাড়ী উপজেলার বিটি কলেজ এলাকার ব্যবসায়ী আলী নূর তালুকদার ঢাকার ধনিয়ায় থাকেন। নিয়মিত এপথে যাতায়াত করেন। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন , দীর্ঘ ৬ বছেরেও মোল্লার হাট ব্রীজের কাজ শেষ হলোনা। ব্রীজটি চালু হলে আমরা সরাসরি ঢাকা থেকে টংগিবাড়ীতে যেতে পারতাম। ঢাকার গেন্ডারিয়া নিবাসী শাহ আলম বাসসকে বলেন , ব্রীজের কাজ শেষ হলে আমরা স্বল্প সময়ে কম খরচে বাবু বাজার হয়ে মতিঝিল চলে যেতে পারতাম।এখন আমাদের ভেংগে ভেংগে যাতায়াত করতে হয়।
বেতকা-তেঘড়িয়া সড়কে সরাসরি যানবাহন চলাচল শুরু করলে মুন্সীগঞ্জের সঙ্গে সড়ক পথে ঢাকার দূরত্ব যেমন কমে আসবে তেমনি মুন্সীগঞ্জ , টংগীবাড়ী ও সিরাজদিখান উপজেলার ঢাকাগামী যাত্রীরা খুব সহজে যানজট মুক্তভাবে ত্রিশ মিনিটে ঢাকায় যেতে পারবে। পাশাপাশি এ এলাকায় কৃষি ভিত্তিক শিল্পের প্রসার ঘটবে । বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ড জোরদার হবে এবং ঢাকার দক্ষিণ দিকে উপশহর সৃষ্টিতে প্রত্যক্ষ ভূ’মিকা রাখবে। সংযোগ সড়কটি চালু হলে মুন্সীগঞ্জ থেকে কৃষি পণ্য সহজে , স্বল্প সময়ে এবং কম খরচে ঢাকার কারওয়ান বাজারের পাইকারী আড়েৎ পরিবহন করা যাবে।