শিরোনাম
ঢাকা, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সংশোধনী আইনে অভিযুক্ত, আসামী ও সাক্ষীদের অধিকার সংরক্ষণ, ক্ষতিপূরণ এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অপরাধের বিরুদ্ধে বিচারের বিধান থাকলেও, রাখা হয়নি রাজনৈতিক দলের বিচার বিধান। এতে 'মেম্বার অফ দা ডিসিপ্লিনারি ফোর্স' কথাটি সংযুক্ত করা হয়েছে।
আজ দুপুরে ট্রাইব্যুনালের অস্থায়ী ভবনের সামনে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সংশোধনীর সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দেন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম।
তিনি জানান, ‘দেশে আগে থেকেই পলিটিক্যাল পার্টির বিচারের জন্য অন্যান্য প্রয়োজনীয় আইন করা আছে বলে রাজনৈতিক দলের বিচারের জন্য নতুন করে কোন বিধান বর্তমান সংশোধনীর ফলে আসেনি। নতুন সংশোধনের মাধ্যমে ন্যায় বিচারের স্বার্থে আন্তর্জাতিক আইনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ভুক্তভোগী ও সাক্ষীর সুরক্ষার মানদন্ড উন্নীত করার পাশাপাশি তাদের জন্য ক্ষতিপূরণের বিধান সংযুক্ত করা হয়েছে। এখন থেকে এই আইনের অধীনে অপরাধীর কিংবা রাষ্ট্রীয় সম্পদ থেকে সরকার ভুক্তভোগী, সাক্ষী কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ দিতে পারবেন।’
তিনি জানান, ‘বর্তমান সংশোধনীর ফলে 'মেম্বার অফ দা ডিসিপ্লিনারি ফোর্স' কথাটি সংযুক্ত করা হয়েছে, যার অধীনে থাকবে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী ছাড়াও পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, গোয়েন্দা বাহিনী, আনসার বা আইনের দ্বারা সৃষ্ট অন্য কোন ফোর্স। সেইসাথে সম্পূর্ণ নতুনভাবে গুম বা এনফোরসড ডিসাপিয়ারেন্সের সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।’
‘আইনের সংশোধনীটি ৬ জানুয়ারি, ২০০৯ সাল থেকে কার্যকর হবে বলে মর্মে ধরে নেয়া হবে। সেইসাথে, এই আইনের অধীনে বিচারযোগ্য অপরাধগুলোর বিচারই কেবল এই আদালতে বিচার করা হবে আর যদি কোন অপরাধ এই আইনের অধীনে বিচার যোগ্য না হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল আদালত আদেশ দিয়ে তা সংশ্লিষ্ট আদালতে পাঠাতে পারবে।’ তিনি বলেন।
এছাড়াও, এতে ডিফেন্স প্রস্তুতে আসামীর প্রাপ্য সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে ও ট্রাইবুনাল অবমাননার শাস্তির অন্তর্বর্তী আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার বিধান সংযোজিত হয়েছে বলে তিনি জানান।
এর আগে, রোববার আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সংশোধিত আইন গেজেট আকারে প্রকাশ করে।
ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর এবিএম সুলতান মাহমুদ এ বিষয়ে বাসসকে বলেন, ' সংশোধনীতে গণহত্যার অর্থ থেকে রাজনৈতিক দল বাদ দিয়ে প্ররোচনা বা উস্কানি শব্দটি যুক্ত হয়েছে।
মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বলতে নতুন কিছু বিষয় যোগ হয়েছে যেমন- জনসংখ্যার জোরপূর্বক স্থানান্তর, যৌন শোষণ, জোরপূর্বক গুম, মানব পাচার, যৌন দাসত্ব, জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তি, জোরপূর্বক গর্ভধারণ, জোরপূর্বক বন্ধ্যত্বকরণ ইত্যাদি। এছাড়া, অপরাধের দায়ভারের বিষয়ে বিশদ ব্যাখ্যা করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ধারা ৯ এ অডিও ভিজুয়াল শুনানি ও ধারা ১১ এ অপরিহার্য পরিস্থিতিতে ভার্চুয়াল শুনানির বিধান বর্ণিত হয়েছে। সংশোধনীতে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের থাকার অনুমতি বিষয়ে ও ডিজিটাল ডিভাইস ও মাধ্যম ট্রাইবুনালে উপস্থাপন করা যাবে কি না সে বিষয়েও বর্ণিত হয়েছে।’
সুষ্ঠু ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর ট্রাইব্যুনাল এ সংশোধনীর মাধ্যমে নিজের লক্ষ্যে আরও একধাপ এগিয়ে গেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।