বাসস
  ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৭:৪১

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের দাবি বিএইচআরএফ ও হার্ট ফাউন্ডেশনের

ঢাকা, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিদ্যমান ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএইচআরএফ) ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে বাংলাদেশে এই আইনটি সংশোধনের দাবী জানান সংগঠন দুটির নেতৃবৃন্দ।

 আজ সোমবার সকালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের সাথে সাক্ষাৎকালে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এ দাবি জানান। 

এ সময় গত ১৪ নভেম্বর বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত ‘জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন ও তামাক কর বৃদ্ধি: গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারের সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন ও সাংবাদিকদের দাবি সংবলিত একটি চিঠি হস্তান্তর করেন বিএইচআরএফ সভাপতি মো. রাশেদ রাব্বি।

মতবিনিময়কালে হার্ট ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে তামাক ব্যবহার হার সবচেয়ে বেশি (৩৫.৩%) বাংলাদেশে। তাছাড়া দেশে প্রতিনিয়ত প্রায় চার কোটি মানুষ ধূমপান না করেও বিভিন্ন পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী, তামাক ব্যবহারজনিত রোগে বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় এক লাখ ৬১ হাজার মানুষ অকালে মৃত্যুবরণ করে। এই অকাল মৃত্যু প্রতিরোধে প্রয়োজন শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন।

উল্লেখ্য, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ইতোমধ্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এরপর থেকেই তামাক কোম্পানিগুলো রাজস্ব কমবে এবং কর্মসংস্থান হারাবে এমন অপতথ্য ছড়িয়ে আইন সংশোধনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। কিন্তু তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন (২০০৫) ও তা সংশোধন (২০১৩) করার ফলে সিগারেট থেকে সরকারের রাজস্ব কমেনি বরং বেড়েছিল। 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য মতে, ২০০৫ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাস হওয়ার পর পরবর্তী ২০০৫-০৬ এবং ২০০৬-০৭ অর্থবছরে সিগারেট খাতে রাজস্ব আয় বেড়েছে যথাক্রমে ১৭.৯৭ শতাংশ এবং ৩৭.৫২ শতাংশ। একইভাবে, ২০১৩ সালের সংশোধনীর পর পরবর্তী ২০১৩-১৪ এবং ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সিগারেট খাতে রাজস্ব আয় বেড়েছে যথাক্রমে ২৫.৫১ শতাংশ এবং ৪৬.৫২ শতাংশ। তাই অধূমপায়ীদের সুরক্ষা প্রদান এবং নতুন প্রজন্মকে তামাকের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচাতে প্রস্তাবিত আইন দ্রুত পাস করা প্রয়োজন।

বৈঠককালে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. খন্দকার আব্দুল আউয়াল মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করেন।

পরে অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় আমি সবসময় কাজ করে এসেছি। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সাক্ষাৎকালে অন্যান্যের মধ্যে আরও ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস্’র (সিটিএফকে) লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও অ্যাডভোকেসি ম্যানেজার মো. আতাউর রহমান, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল এন্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।