বাসস
  ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২১:০২

চট্টগ্রাম নগরীতে প্রতি ওয়ার্ডে খেলার মাঠ করতে চান মেয়র শাহাদাত

চট্টগ্রাম, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ (বাসস) : চট্টগ্রাম নগরীর ৪১ টি ওয়ার্ডে খেলার মাঠ করতে চান বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের  নেতৃবৃন্দের সাথে আজ সোমবার টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এ কথা জানান।  সভায় চসিকের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম এবং প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমি।

 বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদসহ ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ছাত্ররা চট্টগ্রাম নগরীকে ক্লিন, গ্রিন, হেলদি সিটি হিসেবে গড়তে মেয়রকে সহায়তার আশ্বাস দেন। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতৃবৃন্দের দাবির মধ্যে ছিল - নগরজুড়ে খেলার মাঠের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা, বিপ্লব উদ্যানকে অবাধ বাণিজ্যিকীকরণ থেকে রক্ষা করে নগরবাসীর জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা, নগরীজুড়ে যে সমস্ত নালা উন্মুক্ত রয়েছে সেগুলোর ওপর স্ল্যাব নিশ্চিত করা, শহরজুড়ে ভেঙে যাওয়া সড়ক সংস্কার করা, চাঁদাবাজি-দখলবাজির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা, আগ্রাবাদ মোড়ে অবৈধ হকার উচ্ছেদ করা, নগরীর গণপরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনা, কিশোর গ্যাং কালচার বন্ধ করা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করা, চট্টগ্রামের ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষার্থে একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, মাদক বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রামে শহিদ  ১১ জনের  পরিবার থেকে  একজন করে সদস্যর কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা এবং হয়রানিমূলক মামলা বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ। 

ছাত্রদের দাবীর প্রেক্ষিতে মেয়র বলেন, ‘আমি আপনাদের বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শুনলাম। আপনারা যেসব দাবি জানাচ্ছেন সেগুলোর অধিকাংশ আমি শপথের পরপরই চট্টগ্রামে আসার পর বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছিলাম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদদের স্মরণে ইতোমধ্যে পাহাড়তলীর শেখ রাসেল শিশু পার্কের নাম পরিবর্তন করে ছাত্র আন্দোলনে চট্টগ্রামের প্রথম শহীদ ওয়াসিম আকরামের নামে নামকরণের ঘোষণা দিয়েছি।’ 

মেয়র বলেন, ‘আমার ইচ্ছা নগরীর ৪১ টি ওয়ার্ডেই খেলার মাঠ গড়ে তুলব। কারণ আমি দেখেছি শিশুদের খেলার অধিকার নিয়েও বৈষম্য তৈরি হয়েছে। টার্ফ গড়ে উঠার কারণে অস্বচ্ছল ঘরের ছেলেরা খেলতে পারছে না। এ কারণে আমার ইচ্ছা প্রতিটি ওয়ার্ডে খেলার মাঠ নিশ্চিত করা। শিশুদের খেলার মাঠে ফিরাতে পারলে মাদক সমস্যা, কিশোর গ্যাং কমে আসবে। এছাড়া আগ্রাবাদ শিশু পার্ক, জিয়া শিশু পার্ক, বহদ্দারহাট স্বাধীনতা কমপ্লেক্সও নগরবাসীর জন্য উন্মুক্ত করতে পদক্ষেপ নিয়েছি। আমি বিপ্লব উদ্যানে গিয়েছি, সেখানে একটা স্ট্রাকচার করা হচ্ছিল সেটি ভেঙে দিয়েছি। আমি সরাসরি বলে দিয়েছি, বিপ্লব উদ্যানে গ্রীন পার্ক হবে এবং সেখানে বিপ্লব উদ্যানের যে ঐতিহাসিক ভূমিকা সেটি সম্পর্কে কিছু স্মৃতিফলক থাকবে।’

মেয়র আরো বলেন, জুলাই-আগস্টের  শহিদদের আমি শ্রদ্ধা জানাই। আন্দোলন চলাকালে আহতদের আমি আমার দুইটা হাসপাতালে  এবং হলি হেলথ হাসপাতালে  চিকিৎসা দিয়েছি। ৫ আগস্টের পরে প্রায় প্রত্যেকটা ওয়ার্ডে আমি নিজে গিয়েছি আহতদের দেখতে। চোখের সমস্যা, গুলিবিদ্ধ, হামলার শিকার অনেকে আমার সাথে যোগাযোগ করেছে। আমি যথাসাধ্য সেবা দেয়ার, তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি আমার দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে। 

পরিচ্ছন্ন বিভাগের কাজের তদারকিতে ছাত্রদের সহায়তা চেয়ে মেয়র বলেন, ছাত্ররা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে আমাদের পরিচ্ছন্ন বিভাগের যে কার্যক্রম চলছে তা ঠিকমতো হচ্ছে কী না তা তদারকি করতে পারে। ডেঙ্গু ও পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতেও কাজ করতে পারে ছাত্ররা।  এছাড়া স্থানীয় যে কোন সমস্যা আমাকে জানালে আমি সমাধানের উদ্যোগ নেবো।