বাসস
  ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২০:৩০

অপরাধী যে-ই হোক, শাস্তি পেতে হবে : হাসান আরিফ

চট্টগ্রাম, ২৭ নভেম্বর ২০২৪ (বাসস) : ভূমি মন্ত্রণালয় ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বলেছেন, ‘অপরাধী যে-ই হোক, তাকে শাস্তি পেতে হবে। সে কোনো রেহাই পাবে না।’

বুধবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে হত্যাকাণ্ডের শিকার আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের জানাজায় অংশগ্রহণ শেষে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় উপদেষ্টা এ কথা বলেন। 

একক অপরাধের জন্য কোনো সংগঠন, দল বা কোন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আঙ্গুল তোলা উচিত নয় মন্তব্য করে উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তারকৃত চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, অপরাধীর পরিচয় কোনো দল-গোষ্ঠী হিসেবে নয়, অপরাধীর পরিচয় শুধু অপরাধী হিসেবেই হওয়া উচিত।

তিনি বলেন, ‘কোনো একজন ব্যক্তি যদি কোন সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে থাকে, তাহলে সে ব্যক্তিটিই দায়ী হবে। তার ব্যক্তি পরিচয়, সামাজিক পরিচয়, ধর্মীয় পরিচয়, রাজনৈতিক পরিচয়; কোন কিছুই সামনে আসবে না। উঠে আসবে শুধু এই ব্যক্তি সন্ত্রাসী। তাই কাউকে কোন সংগঠনের বলাটা আমরা পরিহার করি। একক অপরাধের জন্য কোনো সংগঠন বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আঙ্গুল তোলা উচিত নয়।’

ভূমি উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বলেন, ‘আইন অনুযায়ী সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য যে সাজা হওয়া দরকার সেটা রাষ্ট্রদ্রোহিতায় হোক বা এডভোকেট আলিফের হত্যাকাণ্ডের উসকানিদাতা হোক; অপরাধের জন্য তাকে শাস্তি পেতে হবে।

তিনি বলেন, গত ২ মাসের মধ্যে চট্টগ্রামে যে ঘটনাগুলো ঘটে গেছে, ধারাবাহিকভাবে কেউ যদি কোনো সংগঠনের পরিচয়ে অপব্যবহার করে থাকে সেটা তার ব্যক্তিগত অপরাধ। সেই ব্যক্তি দোষী হবেন, কোনো সংগঠন নয়। ওই ব্যক্তির ধর্মীয় পরিচয়, রাজনৈতিক পরিচয়, সামাজিক পরিচয় আসবে না; তখন শুধু তার পরিচয় হবে শুধু অপরাধী।’

তিনি আরো বলেন, ‘যারা ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে এই অপরাধ কর্মকাণ্ডগুলো করে যাচ্ছে সেই স্বৈরাচারী কর্মকাণ্ডরই তাদের ধারাবাহিকতা। যেহেতু তাদের এখনো পর্যন্ত আইনের আওতায় আনা হয়নি। এজন্য তারা এসব করার সুযোগ পেয়েছে। এখনই সময় এসেছে যারা নিষিদ্ধ সংগঠনের (ছাত্রলীগ) সদস্য ছিলেন তাদের আইনের আওতায় আনা। তাদের এই মুহূর্তে বাইরে রাখলে, আমাদের আশঙ্কা, সমাজের আশঙ্কা যে তারা এ ধরনের কর্মকাণ্ড করে যাবে। এজন্য আমরা সতর্ক থাকি। পারস্পরিক সৌহার্দ্য যেটা আজীবন ছিল, আগামীতেও থাকবে। সেটা বজায় রাখি এবং সকলে মিলে আমরা একটি সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গড়ি।’

এসময় বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বলেছিল- আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে চলে গেলে লাখ লাখ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা করা হবে। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত কোন ধরনের হামলা কিংবা কোন রাজনৈতিক দলের কারণে কোনো আওয়ামী লীগ নেতা তো নয়, কোনো সনাতনী সম্প্রদায়ের নয়, চট্টগ্রাম কোনো নাগরিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়নি।’

তিনি বলেন, আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে অত্যন্ত বর্বরতার সাথে মধ্যযুগীয় কায়দায় যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, সেটা পেশাদার খুনি ছাড়া কেউ করতে পারে না।

ধর্মের নামে সন্ত্রাসী যুবলীগ, ছাত্রলীগের ক্যাডাররা এখনো মিছিল করে বেড়াচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমি মনে করি ধর্ম-বর্ণ-রাজনৈতিক নাম নিয়ে সন্ত্রাসী যেই হোক না কেন, তার কোন দল-ধর্ম-বর্ণ নেই। সে সন্ত্রাসী হিসেবেই পরিচিত হবে।’

সভায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হাসিব আজিজ, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম, রাসেল আহমদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।