শিরোনাম
ঢাকা, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : বাংলাদেশ ও জার্মানির মধ্যে আজ ১৮০.৮০৭ মিলিয়ন ইউরো মূল্যমানের উন্নয়ন সহযোগিতা সংক্রান্ত আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
চলতি বছরের ১৩-১৪ মে দুই সরকারের ফলপ্রসূ আলোচনার পর কারিগরি সহযোগিতা বাবদ ৪৫.৮ মিলিয়ন ইউরো এবং আর্থিক সহযোগিতা বাবদ ১৩৫ মিলিয়ন ইউরো মিলিয়ে ১৮০.৮০৭ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ২,২৬৫ কোটি টাকা) মূল্যমানের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং বাংলাদেশে ফেডারেল রিপাবলিক অব জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রস্টার নিজ নিজ সরকারের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকার, ঢাকায় জার্মান দূতাবাস, জার্মান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক কেএফডব্লিউ, জার্মান কারিগরি সহযোগিতা সংস্থা জিআইজেড এবং ফেডারেল ইনস্টিটিউট ফর জিওসায়েন্সেস অ্যান্ড ন্যাচারাল রিসোর্সেস (বিজিআর) কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এই চুক্তির আওতায় নবায়নযোগ্য শক্তি ও জ্বালানি দক্ষতা (৫০.৫ মিলিয়ন ইউরো), টেকসই নগর উন্নয়ন (৯৫.৫ মিলিয়ন ইউরো), কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ (টিভিইটি) (৫.০ মিলিয়ন ইউরো), সামাজিক ও পরিবেশগতভাবে সাপ্লাই চেইন, বাণিজ্য ও অবকাঠামো (১২ মিলিয়ন ইউরো), জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা (৬.০ মিলিয়ন ইউরো) এবং নারী ও শিশুদের ওপর পারিবারিক সহিংসতা মোকাবেলা সম্পর্কিত একটি প্রকল্পে (ইউপি) সহযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে ৭.০ মিলিয়ন ইউরো।
জার্মানি ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে আসছে যার পরিমাণ এপর্যন্ত মোট ৩.৫ বিলিয়ন ইউরোর বেশি।
জার্মান-বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগিতা অবকাঠামো, স্বাস্থ্য, দারিদ্র্য বিমোচন, সুশাসন এবং মানবাধিকার, শক্তি দক্ষতা এবং নবায়নযোগ্য শক্তি, জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজনে সহায়তা করার জন্য দীর্ঘস্থায়ী ইতিহাস রয়েছে।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সফল দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার ধারাবাহিকতায় বর্তমান চুক্তিটি সম্পাদন উপলক্ষে জার্মান রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশের সাফল্য গাথায় আমাদের সমর্থন অব্যাহত রাখতে পেরে আমরা আনন্দিত।’
বাংলাদেশ এবং জার্মানি অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বাণিজ্য থেকে শুরু করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং এর বাইরেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিস্তৃত সহযোগিতার যাত্রা শুরু করেছে।
ইআরডি সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী তার উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, ‘এই অংশীদারিত্বের মূলে রয়েছে গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি ও টেকসই উন্নয়নের অভিন্ন মূল্যবোধ।’
তিনি আরো উল্লেখ করেন যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধির অঙ্গীকার বাংলাদেশ-জার্মানি দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
জার্মানি বাংলাদেশের অবকাঠামো শক্তিশালীকরণ, শিল্পের ভিত সম্প্রসারণ এবং বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়াতে বাংলাদেশের প্রচেষ্টাকে সহায়তার গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।
কারিগরি সহায়তা, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির মতো উদ্যোগের মাধ্যমে, জার্মানি বাংলাদেশকে তার অর্থনৈতিক সম্ভাবনা কাজে লাগাতে এবং এর জনগণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে ক্ষমতায়ন করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
পাট শিল্প দীর্ঘকাল ধরে আমাদের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। তবে এটি আধুনিকায়ন, বাজারে প্রবেশাধিকার এবং টেকসই উৎপাদন পদ্ধতির উন্নয়ন সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
পরিবেশবান্ধব উপকরণের দিকে বৈশ্বিক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে উৎপাদন ও বিপণনে উদ্ভাবনী প্রযুক্তি এবং সর্বোত্তম পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করে দেশের পাট খাতের উন্নয়নের অপার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইআরডি সচিব পাট শিল্পের আধুনিকায়নে কারিগরি সহায়তা প্রদানে জার্মানির সহায়তা কামনা করেন।
তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে রয়েছে পাট প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা ও উন্নয়নে সহায়তা, কৃষক ও উৎপাদনকারীদের জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বাণিজ্য অংশীদারিত্বের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশাধিকার সহজতর করা।’
বাংলাদেশকে চলমান সহায়তার জন্য জার্মান সরকারকেও ধন্যবাদ জানান শাহরিয়ার।