শিরোনাম
ঢকা, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস): বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ও রাকসুর সাবেক ভিপি অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ৭ নভেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন।
তিনি বলেন, ‘৭১ সালে ভৌগোলিক স্বাধীনতা পেলেও নাগরিক স্বাধীনতা ছিলো না, কথা বলার স্বাধীনতা ছিলো না। এই না থাকার মধ্যে আবারও হাতে কুড়াল নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পিতা গণতন্ত্রের বৃক্ষকে কেটে টুকরো টুকরো করে বাকশাল গঠন করলেন। সেই বাকশালের বিষবৃক্ষ উপড়ে ফেলে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর ক্যান্টনমেন্ট থেকে সিপাহী এবং সাধারণ জনতা রাস্তায় নেমে পড়ে। ৭ নভেম্বর সেই দিন, যেদিন বাংলাদেশের স্বাধীনতা পূর্ণতা লাভ করেছে।’
আজ বৃহস্পতিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে ‘ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর ১৯৭৫ জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের মহানায়ক জিয়াউর রহমান’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন ও রচনা প্রতিযোগিতার পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় রিজভী আরো বলেন, ‘৭৫-এর ৭ নভেম্বরের চেতনা ছিলো স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার ও প্রতিষ্ঠিত করা। সার্বভৌমত্বকে অটুটভাবে শক্তিশালী করাই হচ্ছে ৭ নভেম্বর।
তিনি আরো বলেন, পরবর্তীতে আবারও যখন গণতন্ত্র হত্যা হয়, তখন স্বাধীনতার ঘোষক মেজর শহিদ জিয়ার সহধর্মিণীর আপোষহীন লড়াই জনগণ দেখেছে। শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়ার পার্থক্য এই জায়গায়। রাজনীতিতে যা বলবো তা করবো এটা খালেদা জিয়ার নীতি। আর শেখ হাসিনা মিথ্যা কথা বলে, জনগণের সাথে মোনাফেকি করে, প্রতারণা আশ্রয় নিয়ে ক্ষমতা আগলে ধরে রাখার চেষ্টা করে।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের স্মৃতিচারণ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, যে জায়গা দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করছি, আজ থেকে ৩২ বছর আগে এখান থেকেই বক্তৃতা করে বিদায় নিয়েছি। ৮০ দশকের যে বিশ্ববিদ্যালয়, সেই বিশ্ববিদ্যালয় আমি দেখছি। আরেকটি স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে আমরা সম্পৃক্ত ছিলাম। লেখাপড়া, তরুণ তরুণীদের সেই দিন, আর রাজনীতির সেই উত্তপ্ত মতিহারের সেই সবুজ চত্বর, আবার যেন আমার কাছে ৩৪ বছর আগের মতো ফিরে এসেছে।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছীর বলেন, ২০২৪ সালের বিপ্লবে একশোরও বেশি ছাত্রদল নেতাকর্মী শহিদ হয়েছেন এবং দুই হাজারের অধিক আহত হয়েছেন। বাংলাদেশের অন্য কোনো ছাত্র সংগঠন তাদের কতজন আহত নিহত হয়েছেন, তার তথ্য দিতে পারেননি। ছাত্রদল একবিংশ শতাব্দীর উপযোগী হওয়ার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। প্রত্যেকটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রায় দুই হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে কিভাবে একুশ শতক উপযোগী ছাত্ররাজনীতি করা যায়, তার রোডম্যাপ বাংলাদেশ ছাত্রদল দ্রুতই দিবে এবং প্রত্যেকটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নো হার্ম প্রিন্সিপল পলিসি নির্ধারণ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম. রফিকুল ইসলাম। আলোচক হিসেবে ছিলেন নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হাসানাত আলী এবং জাতীয়তাবাদী
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বিএনপি রাজশাহী জেলার আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ, সাবেক সভাপতি এডভোকেট তোফাজ্জল হোসেন তপু, রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এরশাদ আলী ঈসা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, সদস্য সচিব মামুন- অর- রশিদ, যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম শাফিক ও জেলা বিএনপি’র সদস্য গোলাম মোস্তফা মামুন।
এছাড়াও কৃষকদল কেন্দ্রীয় কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আল-আমিন সরকার টিুট, মহানগর মহিলা দলের সভাপতি এডভোকেট রওশান আরা পপি, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সকিনা খাতুন, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি আকবর আলী জ্যাকি ও সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মাকসুদুর রহমান সৌরভসহ রাজশাহী বিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও রাবি ছাত্রদলের অন্যান্য নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।