শিরোনাম
ঢাকা, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির এবং সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল না, ভিন দেশের দাসত্বের বিরুদ্ধে ছিল।
তিনি আজ সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের হলরুমে ‘দ্য ফোরাম অব ইঞ্জিনিয়ার্স এন্ড আর্কিটেক্টস বাংলাদেশ’ ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
সংগঠনের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর ড. এডভোকেট হেলাল উদ্দিন। অনুষ্ঠানে দারসুল কুরআন পেশ করেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারী ড. আব্দুল মান্নান।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, যে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য অন্যের উপর নির্ভর করতে হয়, সেই স্বাধীনতা প্রকৃত স্বাধীনতা নয়। তৎকালীন জামায়েত নেতৃবৃন্দ বুঝেছিলেন সেই স্বাধীনতা হবে পাকিস্তানের হাত থেকে মুক্ত হয়ে ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞ হয়ে থাকা। যার ফলে তৎকালীন জামায়াতে ইসলামী সেই যুদ্ধে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থেকেছে।
তিনি বলেন, জামায়াতের এই ধারণা বিগত ৫৩ বছরে প্রমানিত হয়েছে। আমাদের দেশে যখন যারাই শাসন ক্ষমতায় ছিল তারাই ভারতের তাবেদারি করেছে। তাহলে কি একজন নাগরিক হিসেবে বলা যায় আমরা প্রকৃত স্বাধীনতা লাভ করেছি? - এটি জনগণের বিবেকের কাছেই জামায়াতে ইসলামীর প্রশ্ন।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ শুধু ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়নি বরং বাংলাদেশ প্রকৃত স্বাধীনতা লাভ করেছে। যার ফলে ভারতের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। এখনো হাসিনা ভারতের স্বার্থে সেখানে বসে বাংলাদেশ নিয়ে যড়যন্ত্র করছে।
ছাত্র জনতার অর্জিত এই স্বাধীনতা রক্ষায় দল-মত নির্বিশিষে বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ থাকবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।
তিনি আরো বলেন, ২০২৪ এর বিপ্লব অর্জনে জামায়াত-শিবির যেভাবে প্রচেষ্টা চালিয়েছে,বিপ্লবের ফসল রক্ষায় সেইভাবেই অবদান রাখবে।
ড. এডভোকেট হেলাল উদ্দিন বলেন, গত ১৬ বছরে ব্যাংক লুট, শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারি, ভূমি দখল, দুর্নীতির কারিগর ছিল শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখলের পর প্রথমে পিলখানা হত্যাকান্ড সংঘঠিত হয়। এরপর জামায়াতে ইসলামীকে নিধন শুরু করে। একে-একে হেফাজতে ইসলামীসহ যারাই আওয়ামী লীগের জুলুমের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে তাদেরকেই আওয়ামী লীগ নি:শেষ করেছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যা চালিয়েছে শুধুমাত্র ক্ষমতায় থেকে ভারতের তাবেদারি করার লক্ষ্যে।
তিনি বলেন, কিন্তু বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা আওয়ামী লীগকে শুধু ক্ষমতা থেকেই উচ্ছেদ করেনি বরং ক্ষমতাচ্যুত করে আওয়ামী লীগকে ভারতে পাঠিয়ে দিয়েছে। পৃথিবীর ইতিহাসে দু’জন শাসক পালিয়ে গেছে একজন লক্ষ্মণ সেন অপরজন শেখ হাসিনা।
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, জনগণের ভাষা বুঝতে না পারায় আওয়ামী লীগকে পালাতে হয়েছে। আপনারা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফসল। আপনাদের উপদেষ্টা পরিষদে ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা আছে। জনগণ চায় তাদেরকে বাদ দিয়ে জনগণের প্রত্যাশিত উপদেষ্টা পরিষদ গঠন হোক। তাহলে জনগণের সমর্থন আপনাদের উপর অব্যাহত থাকবে। পরাজিত শক্তির ফাঁদে পা দিবেন না।
আওয়ামী লীগ, বিএনপি, এরশাদের শাসন ব্যবস্থা দেশবাসী দেখেছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একবার জামায়াতে ইসলামীকে ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ দিন। ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা কতটা কল্যাণকর সেটি জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে দেশবাসী বুঝতে পারবে।
পরে রমনা থানা আমীর মো. আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অগ্রসর কর্মী ও রুকন সদস্য শিক্ষা শিবিরে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর এবং সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর ড. এডভোকেট হেলাল উদ্দিন ও মহানগরী দক্ষিণের সহকারী অফিস সম্পাদক আবদুস সাত্তার সুমন।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ ও রমনা থানার বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।