বাসস
  ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০:১৯
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০:৪৭

নিজেদের সংস্কার করাই রাজনীতির মূল চ্যালেঞ্জ : ড. মঈন খান

ফাইল ছবি


ঢাকা, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান জনগণের সেবক হয়ে রাজনীতি করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।

‘অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন সংস্কার কমিশন গঠন করে যতই সংস্কারই করুক না কেনো, নিজেরা নিজেদের সংস্কার না করা পর্যন্ত কোনও লাভ হবে না’ উল্লেখ করে তিনি বলেন,‘আজকের রাজনীতির মূল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে আমাদের প্রত্যেককে নিজেকে-নিজের সংস্কার এবং রাজনীতি মানেই হতে হবে জনগণের সেবক হয়ে কাজ করা।’

ড. আব্দুল মঈন খান আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির প্রয়াত নেতা আতিকুর রহমান সালুর স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি (আইএফসি) এ স্মরণ সভার আয়োজন করে। 

তিনি বলেন, ‘জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের ঐক্য অবশ্যই প্রয়োজন। কিন্তু এ প্রসঙ্গে আমি আপনাদের আরও একটু সতর্ক করে দিতে চাই, ঐক্য করতে গিয়ে আবার নতুন করে যদি বাকশাল করে ফেলি তাহলে কিন্তু সেই ঐক্যে কাজ হবে না। ‘জুলাই-আগস্টে’ ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হাজার হাজার জীবনের বিনিময়ে স্বৈরাচারকে দেশ থেকে হটানো হয়েছে। কিন্তু তার অর্থ এটা নয় যে, দেশে গণতন্ত্র পুনরায় ফিরে এসেছে। এই সত্যকে আমাদের উপলব্ধি করতে হবে।’

বিএনপি’র এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘আমাদের গণতন্ত্রে রূপান্তরের মাত্র একটি ধাপ আমরা অতিক্রম করেছি, তা হচ্ছে স্বৈরাচারের বিদায়। আরও কঠিন দ’ুটি ধাপ রয়েছে। দ্বিতীয় ধাপ হলো অত্যাবশ্যকীয় সংস্কার সম্পাদন করে দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে কোটি কোটি মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা। তৃতীয় ধাপ হলো জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা হস্তান্তর করা।’

ড. মঈন খান বলেন, ‘দেশে জনগণের সরকার আসতে হবে। যারা একটি স্বাধীন সংসদ গঠন করবে, যারা সত্যিকার অর্থে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করবে, ডামি বা ভুয়া সংসদ নয়। এ গুরু দায়িত্ব এসে পড়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ওপরে। সে কারণেই আমরা এই সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিচ্ছি।

আমরা কোনও অবস্থাতেই চাই না, তারা ব্যর্থ হোক। কেননা, এই সরকার ব্যর্থ হলে তা শুধু তাদের ব্যর্থতা হবে না। সেটা হবে সমগ্র জাতির ব্যর্থতা।’

আতিকুর রহমান সালুর স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘একটি নাম আতিকুর রহমান সালু, একটি প্রতিবাদ আতিকুর রহমান সালু। এই মানুষটিকে কেন এতদিন আমরা স্মরণ করিনি। আজ তার মৃত্যুর এক বছর পর আমরা এখানে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি। ‘দ্য ডেমোক্রেটিক গভর্নমেন্ট অব ইস্ট বেঙ্গলের’ ঘোষণাপত্র পাঠ করেছিলেন সালু। ইতিহাস সবসময় মানুষের ওপর সুবিচার করে না। পরবর্তী জীবনে তিনি নতুন করে একটি ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন।

২০০৫ সালের ৫মে দ্বিতীয় ফারাক্কা লংমার্চ করেছিলেন। তার সমগ্র জীবন আবর্তিত হয়েছে এই দেশের কল্যাণে।’ 

আইএফসি’র সভাপতি অধ্যাপক জসীম উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ও আইএফসি’র চেয়ারম্যান সৈয়দ টিপু সুলতানের সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, সমন্বয়ক মোস্তফা কামাল মজুমদার,আইএফসি বাংলাদেশের সহ-সভাপতি ড. নাজমা আহমেদ, সাবেক এমপি জহিরুদ্দিন স্বপন, বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূইয়া, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু প্রমুখ এ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।