শিরোনাম
রংপুর, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) প্রফেসর ড. মো. আমিনুল ইসলাম বলেছেন, নারী জাগরণের অগ্রদূত এবং প্রখ্যাত সমাজ সংস্কারক বেগম রোকেয়া সর্বদা নারী শিক্ষাকে প্রাধান্য দিয়েছেন। তিনি আজীবন নারী ও পুরুষের সমঅধিকার বাস্তবায়নে প্রত্যক্ষভাবে কাজ করে গেছেন।
তিনি আজ সোমবার বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)’র স্বাধীনতা স্মারক মাঠে আয়োজিত রোকেয়া দিবস-২০২৪ উপলক্ষ্যে অয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, মহিয়সী নারী বেগম রোকেয়ার জন্মস্থান রংপরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ গ্রামে তার নামে স্থাপিত স্মৃতিকেন্দ্রটি সচল করে ভবিষ্যতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আনা হবে। এখানে ইতিহাস, ঐতিহ্য পাঠদানসহ বিভিন্ন গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
তিনি বলেন, শহিদ আবু সাঈদের স্মৃতিধন্য বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আর কোনো সংকট থাকবে না। তাজহাট জমিদার বাড়ীকেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় এনে গবেষণা ইনস্টিটিউট হিসেবে ব্যবহার করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের আয়তন বৃদ্ধির জন্য অচিরেই ক্যাম্পাস সংলগ্ন ৫০ একর খাস জমি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে বরাদ্দ দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকটসহ ভৌত অবকাঠামো সংকট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেগা প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী ও মানসম্মত দেখতে চান। তাই আগামী বাজেটে শিক্ষা খাতে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো শওকত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন উপাচার্য প্রফেসর ড. লুৎফর রহমান, ঠেংগামারা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস)’র নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত নারী উদ্যোক্তা প্রফেসর ড. হোসনে আরা বেগম এবং শিক্ষা ও প্রশাসন বিষয়ক বিশেষজ্ঞ এ এইচ এম মাঈনউদ্দিন তিতাস।
এসময় আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ রোকেয়া দিবস-২০২৪ উপলক্ষে প্রকাশিত ‘রোকেয়া পাঠ’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. হারুন-অর রশিদ ও ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক ইফফাত আরা বাঁধনের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর গুলশান আরা।
প্রবন্ধের উপর আলোচনায় অংশ নেন ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মনিরুজ্জামান ও বাংলা বিভাগের প্রভাষক মো. খাইরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. এনামউল্যা, বেরোবির সিন্ডিকেট সদস্য ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের প্রফেসর (অব.) ড. মো. শামসুল আলম সরকার এবং রেনেসা হসপিটাল এন্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাঃ মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস প্রমুখ।
আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন রোকেয়া দিবস-২০২৪ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. মিজানুর রহমান।
এর আগে সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিবসটির আনুষ্ঠানিকতা।
এরপর মহিয়সী নারী বেগম রোকেয়ার অস্থায়ী প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রফেসর ড. এম. আমিনুল ইসলাম এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকত আলী।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধান অতিথি বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ, বিভাগ, দপ্তর ও আবাসিক হল শোভাযাত্রায় অংশ নেয়। শোভাযাত্রাটি পার্কের মোড় হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে স্বাধীনতা স্মারক মাঠে এসে শেষ হয়। বাদ যোহর কেন্দ্রিয় মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।