শিরোনাম
ঢাকা, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আজ দেশীয় সংস্কৃতির প্রচারের জন্য ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ নামে একটি নতুন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সূচনা করেছে।
রাজধানীর গুলশান-১ এর উদয় টাওয়ারে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক সংসদ সদস্য শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী এ প্লাটফমের ঘোষণা দেন।
‘সবার আগে বাংলাদেশ’-এর আহ্বায়ক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী সংগঠনটি সম্পর্কে বলেন, এই সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের মাধ্যমে দেশের মানুষ ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর নতুন পরিবেশে নতুনভাবে বিজয়ের মাস উদযাপনের সুযোগ পাবে।
তিনি বলেন,‘বিজয় দিবসে আমরা নতুন প্রত্যাশা নিয়ে, নতুনভাবে বাংলাদেশের জনগণ ও নতুন প্রজন্মের কাছে হাজির হব। আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিকেল ৩টা থেকে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে এই কনসার্ট অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি বলেন,বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ ১৬ ডিসেম্বরকে সামনে রেখে ব্যাপক কর্মসূচি ও কার্যক্রম প্রণয়ন করেছে।
তিনি আরো বলেন,‘আমাদের নেতা তারেক রহমান পুরো জাতিকে বিজয়ের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ করার জন্য আমাদেরকে ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ ধারণা দিয়েছিলেন।’
তিনি বলেন, গত ১৬-১৭ বছরে ফ্যাসিবাদী শাসনামলে আমরা নিজেদের মতো করে বিজয় দিবস পালন ও উদযাপন করতে পারিনি।
দেশের নিজস্ব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্যে ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ ১৬ ডিসেম্বর বিকেল ৩টায় রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে সার্বজনীনভাবে একটি উন্মুক্ত কনসার্টের আয়োজন করবে।
এই কনসার্টে বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী ও ব্যান্ডদলের মধ্যে- সৈয়দ আব্দুল হাদী, খুরশীদ আলম, বেবী নাজনীন, মনির খান, কনক চাঁপা, দিলশাদ নাহার কনা, ইমরান মাহমুদুল, প্রীতম, জেফার, মৌসুমী, নগর বাউল (জেমস), ডিফারেন্ট টাচ, অর্ক, সোলস, শিরোনামহীন, আর্টসেল, এভয়েডরাফা এবং সোনার বাংলা সার্কাস অংশ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ সংগঠনটির সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি’র কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, বিএনপি’র প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানি, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন, সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম রনি ও সাংবাদিক এহসান মাহমুদ প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে এ্যানী বিদেশী সংস্কৃতির বিস্তার রোধে দেশের নিজস্ব সংস্কৃতিকে সমুন্নত রাখতে সকলকে, বিশেষ করে তরুণদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আমি সকলকে, বিশেষ করে তরুণদের প্রতি, বিদেশী সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে দেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখতে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানাই।’
দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিজাতীয় সংস্কৃতির চর্চা থেকে সবাইকে বেরিয়ে আসতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি জাতি দেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য সংগ্রাম, লড়াই ও জীবন উৎসর্গ করেছে।
তরুণরা দেশপ্রেম ও মুক্তিুুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের নিজস্ব সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও জাতীয় পরিচয় রক্ষা করবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।
তিনি আরো বলেন, ‘সকল বিষয়ে আমাদেরকে আগে বাংলাদেশের কথা ভাবতে হবে। দেশের সব মানুষ ঐক্যবদ্ধ থাকলে আমরা আরও শক্তিশালী হব।’
জাতীয় ঐক্যের স্বার্থে তারুণ্যের শক্তিকে সুদৃঢ় করতে বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
প্রবল গণবিক্ষোভের মুখে দেশ ছেড়ে পালানো ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ফ্যাসিবাদী সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, যারা বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করে পরে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে তারাই দেশের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা প্রতিবেশী দেশের (ভারতের) দাসত্ব করার জন্য পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জন করিনি।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সবার আগে বাংলাদেশকে বিবেচনা করতে হবে।’ তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, দেশের মানুষ কোনো বিদেশি ষড়যন্ত্র, অন্যায় ও বিজাতীয় সংস্কৃতির কাছে মাথা নত করবে না।
বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
ডিসেম্বর বিজয়ের মাস উল্লেখ এ্যানী বলেন, এই মাস এবং ‘১৬ ডিসেম্বর’ জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ দেশের দেশপ্রেমিক জনগণ ১৯৭১ সালে নয় মাস দীর্ঘ যুদ্ধের পর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কাছ থেকে দেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছিল।
মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ভূমিকা তুলে ধরে বিএনপি’র এই নেতা বলেন, তিনি দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন।
তিনি বলেন, তাঁর স্বাধীনতার ঘোষণা এবং রণাঙ্গনে বিচক্ষণ নেতৃত্বের মাধ্যমে জাতি মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিল। দেশের জন্য অসামান্য অবদানের জন্য শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এ্যানী।
এছাড়াও তিনি মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ এবং জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সকল শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।