বাসস
  ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:২৯

শেরপুরে তীব্র শীতে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগ  

শেরপুর, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস): জেলায় কয়েক দিন ধরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে। বেলা বাড়লেও মিলছে না সূর্যের দেখা। ফলে হিমেল বাতাস বয়ে যাওয়ায় কমেছে তাপমাত্রা। আর এই তীব্র শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগ জ্বর, স্বর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, ডায়েরিয়াসহ বিভিন্ন রোগবালাই। 

এর ফলে প্রতিদিন হাসপাতাল গুলোতে বাড়তে শুরু করেছে রোগীর সংখ্যা। এদিকে বাড়তি রোগী সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সদের।
শেরপুর জেলা সদর হাসপাতাল সূত্র জানায়, ২৫০ শয্যার এই হাসপাতালে শিশু রোগীদের জন্য আসন আছে ২০টি। গত ২৪ ঘন্টায় ভর্তি শিশু রোগীর সংখ্যা ১১০ জন। এদের মধ্যে ৮০ ভাগ শিশু ঠান্ডায় আক্রান্ত। এছাড়াও হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়ে অর্ধশতাধিক পুরুষ ও নারী ভর্তি আছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালে আসনের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি রোগী ভর্তি আছে। বেড না পেয়ে এই তীব্র শীতে অনেকেই বিভিন্ন ওয়ার্ডের মেঝে ও বারান্দায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। 

রোগীর স্বজনরা জানান, শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে বেড়েছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগ। জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও ডায়েরিয়াসহ শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন। এছাড়া নানা বয়সী মানুষ শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। 

জেলা সদরের পাকুরিয়া ইউনিয়নের বটতলা গ্রাম থেকে আসা সবুজা বেগম (৩৬) বলেন, আমার তিন বছরের ছেলে কয়েক দিন ধরে ঠান্ডায় আক্রান্ত। দুই দিন হলো হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। বেড না পাওয়ায় ওয়ার্ডের  মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। শীতে রোগীদের সাথে আমাদেরও খুব কষ্ট হচ্ছে।

পৌরসভাধীন দিঘাপাড় মহল্লার বাসিন্দা জয়নাল ইসলাম (৪৫) বলেন, আমার ছেলেকে শ্বাসকষ্টের জন্য হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। বাইরে অনেক ঠান্ডা বাতাস থাকায় আক্রান্ত রোগীদের বেশি কষ্ট হচ্ছে। তবে হাসপাতাল থেকে ভালোই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

নকল উপজেলার উরফা গ্রামের শরিফা বেগম (৪৫) বলেন, ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত চার বছরের ছেলেকে নিয়ে তিন দিন ধরে হাসপাতালে আছি। হাসপাতালে ঔষধ সংকট। তাই বেশি দাম দিয়ে বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে শেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. হুমায়ুন কবীর বাসস'কে বলেন, মূলত এই হাসপাতালটি ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও চিকিৎসক, নার্স,  খাবার, ঔষধ রয়েছে ১০০ শয্যারই। তীব্র শীতের কারণে শিশুরা নিউমোনিয়া ও বড়রা শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হচ্ছেন।তাই হাসপাতালে রোগী বাড়ছে প্রায় চার গুণ। এদের মধ্যে প্রায় ৮০ ভাগ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত। আমরা চেষ্টা করছি সব সমস্যা সমাধান করে রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে।