বাসস
  ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০২

লালমনিরহাটে আলু বীজ বপনে ব্যস্ত কৃষকরা

লালমনিরহাট, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : জেলায় মৌসুমী  আলুর বীজ বপনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে  কৃষকরা।

কৃষক পরিবার গুলো আলু রোপণের মাধ্যমে আর্থিক সচ্ছলতার আশায় নতুন স্বপ্ন বুনছেন। স্বল্প সময়ে উৎপাদন ও বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় আলু চাষে এখানকার কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। তাই আলুতে লাভবান হতে

সঠিক সময়ে ও সঠিক পরিচর্যায় ভালো জাতের আলু চাষাবাদ করতে হবে চাষীদের এমনটি জানিযেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তরা

\জেলার ৫টি উপজেলার বিস্তীর্ণ কৃষি জমিতে এখন পুরোদমে আলু বীজ বপনের উৎসব চলছে। অর্থকরী ফসল হিসেবে সবার ওপরে রয়েছে আলু।

জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে লালমনিরহাটের ৫ উপজেলায় ৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষাবাদ করা হবে । ইতোমধ্যে ৬০ শতাংশ জমিতে আলু বীজ বপনের কাজ শেষ হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় আলু চাষীদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা।

লালমনিরহাটের  বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আলু বীজ বপনে মাঠে কাজ করছেন চাষীদের পাশাপাশি পুরুষ ও নারী শ্রমিকরা। যেসব চাষীরা একটু আগাম বীজ রোপণ করতে পেরেছেন, তাদের ক্ষেতে চলছে পরিচর্যার কাজ। আলু রোপণ করে বাম্পার ফলন হওয়ার আশায় লাভের স্বপ্ন দেখছেন তারা ।

পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের কৃষক এনামুল হোসেন (৩৮) জানায়,  জমিতে মৌসুমী আলু বীজ  বপন করতে বাড়ির আঙিনায় আলু কাটতে সহযোগিতা করছে গৃহিণী, ছেলেমেয়েসহ যুক্ত হয়েছেন স্বজনরাও । গত বছর আলু চাষ করে ভালো দাম পেয়েছি। তাই এবারও আলু বীজ বপন করছি । 

তিনি বলেন, গতবছরের তুলনায় এবার  আলু বীজ বপনে খরচ বেড়েছে একই সঙ্গে কৃষক শ্রমিকরাও তাদের মজুরী বাড়িয়ে দিয়েছে। তাই এবার আলু চাষে খরচ বেড়েছে। 

কৃষক ও সার ব্যবসায়ী জাহিদ ফার্টিলাইজারে স্বত্বাধিকারী মোঃ জাহিদ হোসেন(৪০) বাসস’কে জানান, প্রতিবছর ৩ থেকে ৫ একর জমিতে আলু চাষাবাদ করে থাকেন তিনি। এক একর জমিতে আলু চাষ করতে ৭০০-৮০০ কেজি বীজ আলুর দরকার হয়। এক একর জমিতে আলুর আবাদ করতে ১৩০-১৫০ কেজি ইউরিয়া, ২৫০ কেজি টিএসপি, ২৫০ কেজি এমওপি, ৩০ কেজি জিপসাম এবং ৫-৭ কেজি দস্তা সার প্রয়োজন হয়। তবে এ সারের পরিমাণ জমির অবস্থাভেদে কমবেশি হতে পারে বলে জানান তিনি। 

তিনি আরো বলেন,এক একর জমিতে ৪-৫ টন জৈবসার ব্যবহার করলে ফলন অনেক বেশি পাওয়া যায়। আলু উৎপাদনে আগাছা পরিষ্কার, সেচ, সার প্রয়োগ, মাটি আলগাকরণ বা কান্দিতে মাটি তুলে দেওয়া, বালাই দমন, মালচিং করা আবশ্যকীয় কাজ।

সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা খন্দকার সোহায়েল আহমেদ বাসস’কে জানায়, জেলার প্রায় ৫০ ভাগ আলু উৎপাদন হয়ে থাকে  সদর উপজেলায়। আলু চাষের জন্য আবহাওয়া উপযোগী  হওয়ায় ধান কর্তনের পর কৃষকরা আলু চাষ শুরু করেন। চলতি বছর উপজেলায় ৩ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।  প্রতি হেক্টর জমিতে ২৮.৫ থেকে ২৯ টন আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা প্রত্যাশা করছে কৃষি বিভাগ।

লালমনিরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড.মোঃ সাইফুল আরিফিন বাসস’কে জানান, বর্তমানে আলু চাষের জন্য প্রতিনিয়ত কৃষকদের পরামর্শ দিতে উপজেলা কৃষি উপসহকারী অফিসাররা মাঠে কাজ করছেন। চলতি বছর জেলায় উন্নতমানের আলুর বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে জেলায় আলুর বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করেন তিনি।