শিরোনাম
ঢাকা, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ (বাসস) : গুমের ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্টাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) নেতা মাইকেল চাকমা।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে তিনি আজ এ অভিযোগ দায়ের করেন।
চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা মাইকেল চাকমার অভিযোগ আমলে নিয়েছি। এখন থেকেই তার অভিযোগের তদন্ত শুরু করব।
এর আগে সকালে শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট শাসনামলে গুমের শিকার ইউপিডিএফের নেতা মাইকেল চাকমা দায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে ট্রাইব্যুনালে আসেন। তার সঙ্গে ছিলেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম ও শহিদুল আলমের স্ত্রী অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ।
শেখ হাসিনাসহ অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে আজ অভিযোগটি দায়ের করা হয়েছে।
২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এলাকা থেকে সাংগঠনিক কাজ শেষে ঢাকায় ফেরার পথে মাইকেল চাকমা গুমের শিকার হন। মাইকেল চাকমাকে উদ্ধারের দাবিতে ইউপিডিএফ ও তার সহযোগী সংগঠন, প্রগতিশীল ও মানবাধিকার সংগঠন, শিক্ষক-নাগরিক সমাজসহ পরিবারের লোকজন বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন।
মানবাধিকার সংগঠন এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিরাও উদ্বেগ প্রকাশ করে মাইকেল চাকমার সন্ধান দেয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিল।
পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের ও মাইকেলের সন্ধান চেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে হাই কোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করা হলেও তাকে উদ্ধারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বিগত সরকার।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দীর্ঘ ৫ বছর ৩ মাস পর গত ৭ আগস্ট অবরুদ্ধ দশা থেকে মুক্তি পান মাইকেল চাকমা। ওইদিন ভোরের দিকে চট্টগ্রামের একটি স্থানে তাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় ছেড়ে দেয়া হয়।
এদিকে গুম সংক্রান্ত কমিশনের অগ্রগতি প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গুমে জড়িত থাকার অভিযোগ পেয়েছেন বলে জানায়৷ এ সংক্রান্ত এক ব্রিফিং এ বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে গুমের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরা হয়।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে ৫ আগস্ট দেশ থেকে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে টানা প্রায় ১৬ বছরের শাসনের পতন হয়।
গত জুলাই-আগস্টে গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার, দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত করে। জাজ্জল্যমান এ অপরাধের বিচার অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে।