বাসস
  ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২:১৪

গৃহকর্মীদের প্রতি অবহেলা ও  নিষ্ঠুর আচরণের সংস্কৃতি দূর করতে হবে: শারমীন এস মুরশিদ

ঢাকা, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, ‘গৃহকর্মীদের প্রতি অবহেলা ও বিবর্জিত নিষ্ঠুরতার অবমাননাকর আচারণের সংস্কৃতি দূর করতে হবে।’

তিনি আজ রাজধানীর দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ের আজিমুর রহমান কনফারেন্স হলে গণস্বাক্ষরতা অভিযান এবং অক্সফাম ইন বাংলাদেশ’র উদ্যোগে আয়োজিত ‘নারী গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও জীবনমান উন্নয়ন: আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, শ্রম সংস্কার কমিশনের নির্বাহী পরিচালক ও বিলসের চেয়ারপারসন সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমদ ও বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী নারীপক্ষের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিরিন পারভিন হক।

বৈঠকে আলোচকদের মধ্যে অক্সফাম ইন বাংলাদেশের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাহমুদা সুলতানা, গণস্বাক্ষরতা অভিযান চেয়ারপারসন ও আরডিআরএস বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক তপন কুমার কর্মকার, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডাক্তার ফৌজিয়া, মুসলিম ইন ফরমাল সেক্টর ইন্ডাস্ট্রি মিসকলস কাউন্সিলের চেয়ারপারসন মির্জা নুরুল গনি শোভন, এনএসডিসির সাবেক সিইও বিশ্ব ব্যাংকের পরামর্শক মো. খোরশেদ আলম নিজ নিজ মতামত ব্যক্ত করেন। 

বৈঠকে  কল্যানপুর পোড়া বস্তি থেকে আসা গৃহকর্মী চম্পা বেগম, লিপি বেগম, গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্কের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী আবুল হোসাইন তাদের পেশাগত কর্মের ওপর যে অভিঘাত তা বর্ণনা করেন।

উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, মানুষ হিসেবে কেন গৃহকর্মীদের প্রতি নির্যাতন, নিষ্ঠুরতার আচরণ করা হবে, এটা তো একটি মানবতারবিরোধী, নিষ্ঠুর আচরণ। এ ধরণের আচরণে মানুষ হিসেবে আমাদের সম্পর্কে তারা কি ধারণা পায়। যে মানুষটি বাড়িতে কাজ করছে, আমাদেরকে সাহায্য করছে সে মানুষটিকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের। তার স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা, ধর্মীয় আচরণ, ছুটি দেওয়াসহ নানা ধরণের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের মানবতাবোধের মধ্যে আনতে হবে।

তিনি আরো বলেন, সরকার গত দুই দশকে মেয়েদের ও মহিলাদের উন্নয়নে বেশ কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু এতে করে নারী গৃহকর্মীরা খুব কমই উপকৃত হয়েছেন। ২০২২ সালের  বিবিএস জরিপ  অনুসারে, বাংলাদেশে প্রায় ২ দশমিক ৫ মিলিয়ন মানুষ গৃহকর্মী হিসেবে নিযুক্ত রয়েছে। তাদের মধ্যে প্রায় শতকরা ৮০ ভাগ মেয়ে ও মহিলা, যারা নদী ভাঙ্গন, তীব্র দারিদ্র্যসহ নানা কারণে গ্রামীণ এলাকা থেকে শহরে উন্নত জীবিকার সন্ধানে চলে এসেছে। কিন্তু অভাব, প্রয়োজনীয় শিক্ষা ও দক্ষতার কারণে তারা ভালো চাকরি পায়নি। 

উপদেষ্টা  আরও বলেন, যদিও বাংলাদেশ সরকার ২০১৫ সালে গৃহকর্মীদের উন্নয়নের জন্য গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি প্রণয়ন করেছে, কিন্তু সরকার এখনও নীতি বাস্তবায়নের জন্য আইনি কাঠামোর প্রচলন করেনি। প্রস্তাবগুলো সুনির্দিষ্ট আকারে সরকারের কাছে পেশ করা খুবই জরুরি।