শিরোনাম
ঢাকা, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : সেবা প্রদানে গ্রাহক হয়রানি ও অনিয়মের অভিযোগে বরিশাল পাসপোর্ট অফিস, যশোর বিআরটিএ, ঢাকার ভূমি সংস্কার বোর্ড এবং চট্টগ্রামের হেমসেন লেনে অনুমোদন বিহীন ভবন নির্মাণের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম জানান, বুধবার বরিশাল বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস-এর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে পাসপোর্ট সেবা প্রদানে গ্রাহক হয়রানি ও অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বরিশাল দুদকের একটি টিম পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসে অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানকালীন ছদ্মবেশ ধারণকারী দুদক টিমের সদস্যদের কাছে ওই অফিসে বিদ্যমান দালালরা প্রতিটি পাসপোর্ট ১৫ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করে দিবেন মর্মে ১২ হাজার টাকা দাবি করেন। এর প্রেক্ষিতে দুইজন দালালকে ছদ্মবেশে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে ওই দালালদের কারাদন্ড ও অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
ওই অনিয়মের সাথে বরিশাল বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের অফিস সহায়ক ও নিরাপত্তা প্রহরীর (আউটসোর্সিং) যোগসাজশ রয়েছে মর্মে আটক দালালদের মৌখিক বক্তব্যের আলোকে জানা যায়। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, বরিশালের উপপরিচালকে অনুরোধ করা হয়েছে।
দুদকের যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের একটি টিম যশোর বিআরটিএ-র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস, মালিকানা পরিবর্তন এবং রুট পারমিট বাবদ ঘুষ দাবির অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করে।
এনফোর্সমেন্ট টিম ছদ্মবেশে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে তথ্য সংগ্রহ করে। গোপনে তথ্য সংগ্রহকালে রেজিস্ট্রেশন, লাইসেন্স, ফিটনেস এবং মালিকানা পরিবর্তনসহ অন্যান্য সকল ক্ষেত্রেই দালালদের দৌরাত্ম্য দেখা যায়। এর প্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনাকালে পাঁচজন দালালকে হাতেনাতে আটক করা হয়। পরবর্তীতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক পরিচালিত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে দালালদের অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। সেবাপ্রার্থীদের হয়রানির বন্ধে তদারকি নিশ্চিতকরণ এবং সেবা প্রদানে সিটিজেন চার্টার যথাযথভাবে অনুসরণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে পরামর্শ প্রদান করে দুদক টিম।
ভূমি সংস্কার বোর্ডের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বৈধ লিজ নেয়া সদস্যদের বাদ দিয়ে বিপুল অর্থের বিনিময়ে ভূমি দস্যুদের প্লট বিক্রি বাণিজ্যের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আজ দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্যালয় থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে টিম ছদ্মবেশে ওই অফিসের সার্বিক সেবাদান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এবং আউকপাড়া, আশুলিয়ায় ন্যাশনাল প্লাজা লিমিটেড কর্তৃক গৃহীত লিজ সম্পত্তি সরেজমিনে পরিদর্শন করে। সরেজমিনে পরিদর্শনকালে নিয়মের ব্যত্যয়ের প্রাথমিক তথ্য পাওয়া যায়।
পরবর্তীতে সমবায় সমিতির সদস্যদের কাছ থেকে লিজ বিষয়ক তথ্য এবং ভূমি সংস্কার বোর্ডের সংশ্লিষ্ট নবাব এস্টেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সংগ্রহ করা হয়।
দুদক উপ-পরিচালক জানান, রেকর্ডপত্র যাচাই সাপেক্ষে এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে।
এ ছাড়া চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী হেমসেন লেনে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই যথাযথ প্ল্যান না নিয়েই অবৈধভাবে বহুতল ভবন নির্মাণ করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ থেকে একটি অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানকালে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ হতে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়। পর্যালোচনায় দেখা যায়, আবেদনকারীর আবেদনের উপর ভিত্তি করে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ব্যতিরেকে সিডিএ'র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ল্যান্ড ইউটিলাইজেশন ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট (এলইউসি) প্রদান করেন। এরই ধারাবাহিকতায় নকশা অনুমোদনকারী বিভাগ নিয়মের তোয়াক্কা না করে নকশা অনুমোদন প্রদান করেন মর্মে টিমের কাছে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়। প্রাপ্ত তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে।