শিরোনাম
ঢাকা, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস): বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার যুদ্ধে অনবরত সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আজকের যুদ্ধ স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষার। আর এ যুদ্ধে আমরা সবাই যোদ্ধা। এই যুদ্ধে যদি জয়ী হতে হয়, তাহলে অনবরত আমাদের সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।’
তারেক রহমান আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুরে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক এক কর্মশালায় যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে ‘অনলাইনে’ সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব বলেন।
দেশব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিএনপি’র প্রশিক্ষণ বিষয়ক কমিটির উদ্যোগে মানিকগঞ্জ, নরসিংদী ও মুন্সিগঞ্জ জেলার নির্ধারিত প্রতিনিধিদের জন্য এ প্রশিক্ষণ কর্মসুচির আয়োজন করা হয়।
বিএনপি’র ভাবপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন,‘পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের ষড়যন্ত্র থেমে নেই। আপনারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই-সংগ্রাম করেছেন, হত্যার শিকার হয়েছেন, জেল-জুলুম, গায়েবি মামলার শিকার হয়েছেন। অত্যাচার-নির্যাতনের কারণে দিনের পর দিন আপনাদের পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে, ধানক্ষেতে থাকতে হয়েছে। আপনারা সেই পরীক্ষা দিয়ে এসেছেন, কিন্তু পরীক্ষা এখনো শেষ হয়ে যায়নি। সামনে পরীক্ষা আরো রয়েছে- এটি এমন একটি যুদ্ধ, এটি জনগণের পক্ষের যুদ্ধ, এটি স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষার যুদ্ধ। এই যুদ্ধে যদি জয়ী হতে হয়, তাহলে অনবরত আমাদের সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের যদি আগামী সাধারণ নির্বাচনের পুলসিরাত পার হতে হয়, তাহলে জনগণের পেছনে আমাদের থাকতে হবে। সেজন্য জনগণের সঙ্গে থাকতে হবে, এবং জনগণকে আমাদের সঙ্গে রাখতে হবে।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তারেক রহমান বলেন, ‘আপনি এবং আপনার দলের বিরুদ্ধে, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র কিন্তু থেমে নেই। দুষ্টু লোকদের দুষ্টামি কিন্তু চলছেই, সেটি আমাদের দলের বাইরেই হোক বা দলের ভেতরেই হোক। সেটি আমাদের দেশে হোক বা দেশের বাইরে হোক। কারণ দেশের অর্থ সম্পদ, প্রাকৃতিক সম্পদের দিকে অনেকে লোলুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।’
এ সময় তিনি উল্লেখ করেন, এ দেশের মধ্যে যদি বিশৃঙ্খলা লাগিয়ে রাখা যায়, জনসমর্থনহীন সরকার অর্থাৎ যারা জনগণকে রিপ্রেজেন্ট করে না; এমন সরকারকে যদি ক্ষমতায় রাখা যায় তাহলে এদেশ থেকে অনেকে অনেক কিছু লুটেপুটে নিয়ে যেতে পারবে।
তারেক রহমান বলেন, যারা দেশের কথা বলবে, দেশের কথা চিন্তা করবে এরকম কেউ যদি ক্ষমতায় থাকে, তাহলে দেশের স্বার্থ, জনগণের স্বার্থ নিরাপদ থাকবে। যারা শকুনের দৃষ্টিতে এদেশের অর্থ-সম্পদ এবং প্রাকৃতিক সম্পদের দিকে তাকিয়ে রয়েছে, তারাও তখন লোলুপ দৃষ্টিতে তাকাতে দশবার চিন্তা করবে।
তিনি বলেন, ‘চব্বিশের ৫ আগস্টের পূর্ব পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম ছিল স্বৈরাচারকে সরিয়ে দেওয়া। আলহামদুলিল্লাহ বাংলাদেশের মানুষের সমর্থনে স্বৈরাচারের দলবল নির্বিশেষে সকলকে বিদায় করে দিতে আমরা সক্ষম হয়েছি। দেশের মানুষ স্বৈরাচারকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে।’
কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব কামরুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, বিএনপি’র যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, বিএনপি’র ঢাকা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটু, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’র আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, বিএনপি’র মিডিয়া সেলের সদস্য মাহমুদা হাবিবা, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আ ক ম মোজাম্মেল হক, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রহিমা শিকদার ও মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য (দপ্তরে সংযুক্ত) মো. আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী।
তারেক রহমান বলেন, এখন সংগ্রাম দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার। একই সাথে দেশ গড়ার সংগ্রাম শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক অধিকার রাজনৈতিকভাবে দেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া, একই সাথে দেশের মানুষের অর্থনৈতিক ভিত্তিকে মজবুত করার যে সংগ্রাম, সেই সংগ্রাম শুরু হয়েছে। এই সংগ্রামের নেতৃত্ব দিতে পারবেন শুধু আপনারাই। কারণ আপনারা বিএনপি’র শক্তি, আর বিএনপি এটা দিতে পারবে।
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং গণতন্ত্র বলতে যা বুঝায়, সংসদীয় গণতন্ত্র বলতে যা বুঝায়, নারীদের অধিকার বলতে যা বুঝায়, মানুষের অধিকার বলতে যা বুঝায়, অতীত ঘাটলে দেখা যাবে বিএনপি সব সময় এসব করেছে। তিনি নেতৃবৃন্দকে বলেন, দেশ এবং দেশের মানুষ আপনাদের দিকে তাকিয়ে রয়েছে।