শিরোনাম
শেরপুর , ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : তীব্র শীতে কাঁপছে শেরপুর। এদিকে শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জেলা শহরের ফুটপাতে বেড়েছে গরম কাপড় বিক্রি। সকাল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ের ফুটপাতগুলো মুখর থাকছে ক্রেতা বিক্রেতাদের হাঁকডাকে।
সরেজমিনে শহরের তেরাবাজার মোড়, নিউমার্কেট মোড়, রঘুনাথ বাজার, ডিসি গেইটসহ বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায়, ফুটপাতের এসব কাপড়ের দোকানে ভিড় করছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। শীত নিবারণে অল্প টাকায় গরম কাপড় কেনার ক্ষেত্রে এ দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের মানুষের আশ্রয়স্থল ফুটপাতের এসব অস্থায়ী কাপড়ের দোকানগুলো।
তবে এবার শীতের শুরুতেই অনেকে মৌসুমী ব্যবসায়ী গরম কাপড় সংগ্রহ করেছেন।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বছরের এ সময়টাতেই তাদের বেচা বিক্রি সবচেয়ে বেশি হয়। তাই এবছর শীতের তীব্রতা অনুভূত হওয়ার আগেই ঢাকা, রাজশাহী ও চট্রগ্রামের খাতুনগঞ্জসহ বিভাগীয় শহর থেকে তারা পুরাতন গরম কাপড় বিক্রির জন্য সংগ্রহ করেছেন। ব্যবসায়ীরা আরো জানান, এ বছর হুডি, এয়ারপ্রুফ ও ডেনিমের জ্যাকেট, কোট ব্লেজার, বাচ্চাদের পোশাক , সোয়েটার, হাত মোজা, পা মোজা, কানটুপি, ট্রাউজার, নারীদের কার্ডিগান, লং কোট, কম্বল ও উলের চাদরের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।
এছাড়া কলেজ মোড়, খরমপুর মোড়, শহরের থানার মোড়, কোর্ট প্রাঙ্গণে ভ্যানে করেও গরম কাপড় বিক্রি করছেন ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা। দাম কম ও মানে ভালো হওয়ায় সেখান থেকেও নিজেদের পছন্দমতো গরম কাপড় কিনতে ভিড় করেছেন ক্রেতারা।
ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতবারের চেয়ে এবার শীতের প্রভাব আগেভাগেই পড়েছে। মৌসুমের শুরু থেকেই দাপট দেখাচ্ছে কনকনে শীত। তাই গরম কাপড়ের চাহিদা বেশি। অভিজাত মার্কেটগুলোতে কাপড়ের দাম বেশি হওয়ায় ভ্যান ও ফুটপাত থেকেই প্রয়োজনীয় গরম কাপড় ক্রয় করছেন নিম্ন আয়ের মানুষ ছাড়াও নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা। এবার বড়দের কাপড়ের পাশাপাশি শিশুদের শীতের পোশাকের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।
ফুটপাত থেকে গরম কাপড় কিনতে আসা সুখন মাহমুদ (৪০) জানান, ছেলেমেয়েদের জন্য শীতের কাপড় কিনতে এসেছি। ফুটপাতের দোকানগুলোতেও ভালো মানের কাপড় পাওয়া যায়। মাত্র ১ হাজার টাকার মধ্যেই সন্তানদের জন্য প্রয়োজনমতো গরম কাপড় কিনতে পেরেছি। শহরের বড় দোকানগুলোতে গেলে এ টাকায় সেগুলো কেনা সম্ভব হতো না।
আনোয়ার হোসেন (৩৫) নামে আরেক ক্রেতা জানান, শহরের শো-রুমে গিয়ে শীতের কাপড় কিনলে গেলে ২ থেকে ৫ হাজার টাকার নিচে কোন গরম পাওয়া যায় না। তবে পুরোনো কাপড়ের দোকানগুলোতে ৫শ থেকে ১ হাজার টাকার মধ্যে বেশ ভালো মানের গরম কাপড় কেনা যাচ্ছে। তাই এসব দোকানে ক্রেতাদের চাপ বেশি।
রিকশাচালক হাশেম মিয়া (৫০) বলেন, আমাগো এত টাকা নাই যে বড় দোকান থাইকা পোলাপানের জন্য গরম কাপড় কিনমু। তাই ফুটপাতের দোকানে আসছি। নাতিটার জন্য ২শ টাকা দিয়া একটা লাল রংয়ের সোয়েটার কিনলাম।
তেরাবাজার মার্কেটের ব্যবসায়ী আরিফ হোসেন (৫০) জানান, গত কয়েক বছর ধরে তিনি পুরনো গরম কাপড়ের ব্যবসা করেন। এবছর পুরোনো কাপড়ের পাশাপাশি কম মূল্যে নতুন কাপড় রয়েছে। বেচা বিক্রি ভালো হওয়ায় প্রতিদিন গড়ে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার শীতবস্ত্র বিক্রি হচ্ছে।
রঘুনাথ বাজারের ব্যবসায়ী আজাদ মিয়া (৪৫) বলেন, এবছর হাত ও পায়ের মোজা বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়, মাথার টুপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৮০ টাকায়, সোয়েটার বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ৩০০ টাকায়, জ্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়, ব্লেজার বা কোট বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় এবং ভালো মানের পুরাতন কম্বল বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায়।