বাসস
  ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১৬

ঝিনাইদহে সমলয় চাষাবাদ পদ্ধতিতে বোরো ধান রোপণ

ঝিনাইদহ, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : বিভিন্ন সমস্যা ও সংকট থেকে সুরক্ষা দিতে ঝিনাইদহের কৃষকদের মাধ্যে সমলয় চাষাবাদ পদ্ধতিতে ধানের চারা রোপণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে সমলয় চাষাবাদ কর্মসূচির আওতায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে বোরো ধানের চারা রোপণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টায় সদর উপজেলার হলিধানী ইউনিয়নের গাগান্না গ্রামে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল।

এবার দ্বিতীয় পর্যায়ে গাগান্না ও রাজনগর গ্রামের ১১৭ জন কৃষক সমলয় চাষাবাদ পদ্ধতিতে বোরো ধান চাষ করছেন। 

দুই গ্রামে মোট ৫০ একর জমিতে সমলয় চাষাবাদ পদ্ধতিতে ব্রী ধান-৯২ রোপণ করা হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিয়া আক্তার চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মীর রাকিবুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ষষ্ঠী চন্দ্র রায়, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নূর এ নবী, কৃষি কর্মকর্তা, সদর উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ জুনাইদ হাবীব ও কৃষকরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর এ নবী জানান, সমলয় চাষাবাদ মুলত একই মাঠে একই সময়ে একই জাতের ধান চাষ, ধানের বীজ বপন, চাষাবাদ ও ধান কাটার পদ্ধতি। সমলয়ে সকল কৃষক সমান তালে ধান রোপণ থেকে শুরু করে ধান কাটা পর্যন্ত যাবতীয় কাজ করে থাকেন। সমলয় পদ্ধতিতে ধানের বীজ প্লাস্টিকের ট্রেতে বপন করা হয়। এ আবাদ পদ্ধতিতে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও মাড়াই মেশিন ব্যবহার করা যায়।

অনুষ্ঠানে কৃষক প্রতিনিধি মতিউর রহমান মোল্লা অভিজ্ঞতা ও কৃষকদের মনোভাব জানিয়ে বলেন, সমলয় চাষাবাদ পদ্ধতিতে আবাদ করে কৃষকের লোকসান কমে গেছে। ধান রোপণের খরচও কমেছে। রাইস প্লান্টার মেশিন দিয়ে ধান রোপণ করায় শ্রমিক খরচ সাশ্রয় হয়েছে। সকল চাষী একই সঙ্গেএকই পদ্ধতিতে ধানের আবাদ করে থাকি। সমলয় পদ্ধতিতে আবাদ করায় কৃষক উপকৃত হচ্ছে। এতে আমাদের ধানের উৎপাদন বেড়েছে। জমিতে অতিরিক্ত রাসায়নিক সারের ব্যবহার না করেই আমরা চাষাবাদ পদ্ধতি শিখেছি। সরকারের এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২১ সালে দেশে প্রথম সমলয় চাষাবাদ শুরু হয় ঝিনাইদহের হলিধানী ইউনিয়নের গাগান্না গ্রামে। এবার দ্বিতীয় পর্বে একই এলাকায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় বোরো ধানের সমলয় চাষাবাদ এর মাধ্যমে রাইস প্লান্টার মেশিনের মাধ্যমে ধানের চারা রোপণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ষষ্ঠী চন্দ্র রায় জানান, জমির প্রকৃতি, চাষাবাদ পদ্ধতি, দুর্যোগ সম্পর্কে তথ্য ও আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার না জানার কারণে কৃষক ফসল উৎপাদনে বারবার ক্ষতির মুখে পড়েন। যন্ত্রের মাধ্যমে ধান রোপণ, ধান কাটা ও মাড়াই করার সম্মুখ ধারণা কৃষকের মাঝে পৌছে দিতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। সরকার ৫০% ভর্তুকি দিয়ে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষকের মাঝে সরবরাহ করছে৷ আমরা কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে পারলে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে। এতে উৎপাদন বাড়বে, কমবে কৃষকের খরচ।