শিরোনাম
//কালাম আজাদ//
বগুড়া, ২৬ ডিসেম্বর ,২০২৪ (বাসস) : জেলার সবুজ মাঠ ছেঁয়ে গেছে মনোমুগ্ধকর হলুদ সরিষা ফুলে। আপন মহিমায় মৌমাছি পুরো ক্ষেতজুড়ে। বগুড়ায় কৃষকেরা এখন স্বপ্ন দেখছেন সরিষার বাম্পার ফলনের ।
কৃষকরা অধিক ফলনের সঙ্গে লাভবান হতে সরিষার ক্ষেতে সময় দিয়ে যাচ্ছেন। কৃষি বিভাগ বলছে, এবার ফুল ভালো ধরায় সরিষার বাম্পার ফলন পাওয়া যাবে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষকরা বলছেন, দিগন্তজোড়া মাঠে মাঠে সরিষা ফুলের সমারোহ দেখা যাচ্ছে। জেলার প্রতিটি উপজেলায় এখন সরিষা ফুলের ঘ্রাণ ছড়িয়েছে। দূর থেকে মনে হবে পুরো এলাকা জুড়ে হলুদ গালিচা বিছানো। কুয়াশা ভেজা মাঠে হিমেল হাওয়ায় হলুদ ফুল গুলো দোল খেলছে। কুয়াশার জলরাশি ভেদ করে সবুজ মাঠের দেশে এখন হলুদের সমারাহ।
বগুড়ার উৎপাদিত বিভিন্ন সবজির সুনাম রয়েছে দেশজুড়ে। কৃষকরা ছুটছেন লাভজনক তেল জাতীয় ফসল সরিষা চাষের দিকে। কম খরচ, কম পরিশ্রম আর অল্প সময়ে সরিষা চাষ করা যায় বলে এটি অত্যন্ত লাভজনক একটি ফসল। প্রতি বিঘা জমি থেকে চলতি মৌসুমে গড় ৬ থেকে ৭ মণ হারে সরিষার ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও সরিষা চাষ করলে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়। যার কারণে প্রতি বছরই সরিষার চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বগুড়ায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে সরিষার। ভোজ্য তেল হিসেবে সরিষার তেলের চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি দাম বেশি হওয়ায় আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। অন্যান্য ফসলের তুলনায় সরিষা চাষে কম খরচ, কম শ্রম এবং দ্রুত ফলন পাওয়া যায়। যে কারণে চাষিরা আবাদে লাভ বেশি পায়।
জেলার পাঁচটি উপজেলায় সবচেয়ে বেশি সরিষা আবাদ করে থাকেন কৃষকরা। এর মধ্যে কাহালু, নন্দীগ্রাম, আদমদিঘী, দুপচাঁচিয়া ও শেরপুরে বেশি সরিষার আবাদ হয়ে থাকে। এছাড়াও অন্যান্য উপজেলাতেও সরিষা চাষ করেছেন কৃষকেরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে জেলায় সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা। সরিষার দামও ভালো পাওয়ার আশা করছেন এ জেলার চাষীরা।
বগুড়া সদরের রাজাপুর গ্রামের কৃষক গোলাম রব্বানী জানান, তিনি আমন ধান কাটার পর সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে দেশী জাতের সরিষা রোপণ করেছেন। কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের পরামর্শক্রমে এ ফসলের ভালো ফলন আশা করছেন তিনি। মাঠে এখন সরিষার হলুদ ফুল ফুটেছে।
চাষীরা বলছেন, সরিষা তেলের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার কারণে বাজারে সরিষার দাম এখন বেশ ভালো। বাজার পরিস্থিতি এমন থাকলে এবারও ভালো আয় হবে সরিষা বিক্রিতে। বীজ বপন থেকে মাত্র ৭৫ দিনে এ ফসলটিতে তেমন সেচ দিতে হয় না। বপনের সময় মাটির নিচে সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সার দেওয়ার পরেই ভালো ফলন পেয়ে থাকেন চাষীরা।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে বগুড়ায় ৪৭ হাজার ০৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৭৫ হাজার ৭১৫ মেট্রিকটন। তবে কিছু জমিতে দেরিতে সরিষা চাষ হয়ে থাকে। সেগুলোও কয়েক দিনের মধ্যে শতভাগ জমিতে চাষ শেষ হবে।
বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুর রহমান ফরিদ জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার সরিষা চাষে বাম্পার ফলন হবে। কম খরচে সরিষা চাষে অধিক ফলন ও বাজারে দাম ভালো থাকায় সরিষা চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। চলতি মৌসুমে বগুড়ায় ৪৭ হাজার ০৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৭৫ হাজার ৭১৫ মেট্রিকটন। ফলন আরো বাড়তে পারে।