শিরোনাম
চট্টগ্রাম, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৫(বাসস): সংস্কার নিয়ে কারো উদ্বিগ্ন হওয়ার প্রয়োজন নেই মন্তব্য করে সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা পরবর্তী বাংলাদেশ কেমন হবে সেটা চিন্তা করে বাংলাদেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল মিলে আমরা ৩১ দফা সংস্কারের প্রস্তাব দেড় বছর আগেই দিয়েছিলাম। সব সংস্কারের কথা ওখানে বলা আছে। আমরা জাতীয় সরকার করে ৩১দফা সংস্কার পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করবো। আমরা জাতির কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
রোববার সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবর্ষ সমারম্ভ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সিভাসু অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সমারম্ভ অনুষ্ঠানে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিভাসু’র উপাচার্য প্রফেসর ড.মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান। সমারম্ভ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে মন্তব্য করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ফ্যাসিস্ট বিতাড়িত হওয়ার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের জনগণের মনোজগতে যে পরিবর্তন এসেছে তা সবাইকে বুঝতে হবে। যারা বুঝতে পারবে না, সেই রাজনীতিবিদ হোক, শিক্ষক হোক, তার কোনো ভবিষ্যৎ নেই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের চিন্তা, ভাবনা,দর্শন একেবারে বদলে গেছে। যারা সেটা অনুধাবন করতে পারবে না, ধারণ করতে পারবে না এবং সেই অনুযায়ী কাজ করতে পারবে না, তাদের জন্য আগামীর বাংলাদেশ কঠিন হয়ে যাবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য যে সুযোগ বাংলাদেশে রয়েছে, তা খুব কম দেশেই আছে। আমরা কিন্তু মানবসম্পদ উন্নয়নে বিনিয়োগ করিনি। আমরা বিনিয়োগ করেছি পদ্মা ব্রিজে,আমরা বিনিয়োগ করেছি টানেলে। কিন্তু অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমাদের বিনিয়োগ করা দরকার শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে। এই দুই খাতে বিনিয়োগ ছাড়া মানবসম্পদ তৈরি করা সম্ভব নয়।’
নবাগত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, তোমাদের ভালো মানুষ হতে হবে। ভালো মানুষ না হলে শিক্ষার কোনো মূল্য নেই। সর্বক্ষেত্রে ভিন্নমতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে হবে।
প্রধান পৃষ্ঠপোষকের বক্তব্যে সিভাসু’র উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান বলেন, বিশ্বমানের পাঠ্যসূচি, অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি এবং ইন্টারন্যাশনাল কোলাবরেশনের মাধ্যমে সিভাসু’র শিক্ষার্থীরা অর্জন করছে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা। ইউরোপ-আমেরিকার আদলে দেশে প্রথমবারের মতো এখানে চালু করা হয়েছে ‘প্রবলেম বেইসড লার্নিং’ পদ্ধতি।
সমারম্ভ বক্তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, জীবনে কি হতে চাও তা এখনই ঠিক করতে হবে। সেই অনুযায়ী এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। কঠোর পরিশ্রম করতে হবে ও ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। তাহলেই অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে। সততা ও নিষ্ঠার সাথে কঠোর পরিশ্রম করলে জীবনে সফলতা আসবেই।
সিভাসু’র পরিচালক (ছাত্রকল্যাণ) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রাশেদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিভাসু’র ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. কামাল, ফুড সায়েন্স ও টেকনোলজি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. ফেরদৌসী আকতার এবং ফিশারিজ অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. শেখ আহমাদ-আল-নাহিদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। অনুষ্ঠানে চারজন নবাগত শিক্ষার্থী তাদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন।
গুচ্ছ পদ্ধতিতে এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি অনুষদে সর্বমোট ২৭০জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। আগামী ০১ জানুয়ারি থেকে তাদের নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সিভাসু’র সিনিয়র উপপরিচালক (জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তর) খলিলুর রহমান।